হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, কারবালার রক্তিম প্রান্তরে যখন শাহাদতের সময় ঘনিয়ে এলো, তখন ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর পরিবার তথা আহলুল বায়েত (আ.)-এর সাথে শেষ বিদায় নিচ্ছিলেন। সেই করুণ মুহূর্তে চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল কান্নার আওয়াজে। প্রিয়জনের বিদায়বেলায় আহলুল বায়েত (আ.)-এর হৃদয়বিদারক প্রতিক্রিয়া যেন মানবতার অন্তরকেও কাঁপিয়ে তোলে।
হজরত সাকিনা (সা.) ছিলেন সবার চেয়ে বেশি অস্থির ও ব্যাকুল। বাবার বিদায় সহ্য করতে না পেরে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তখন ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং সান্ত্বনা দিয়ে মুখে একটি শেষ চুম্বন অর্পণ করেন।
এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য সম্পর্কে মরহুম আল্লামা মজলিসী (রহ.) ও অন্যান্য প্রখ্যাত আলেমগণ একটি বিখ্যাত কবিতার উল্লেখ করেছেন, যেখানে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কণ্ঠে ফুটে ওঠে এক পিতা ও শহিদের অন্তিম অনুভব:
"سيطول بعدي يا سكينة فاعلمي
منك البكاء اذا الحمام دهاني"
“হে সাকিনা! জেনে রাখো, আমার মৃত্যুর পর তোমার কান্না দীর্ঘস্থায়ী হবে।”
"لا تحرقي قلبي بدمعك حسرة
ما دام مني الروح في جثماني"
“হে সাকিনা! যতক্ষণ আমার প্রাণ দেহে রয়েছে, ততক্ষণ তোমার এই অশ্রু দিয়ে বাবার হৃদয়কে জ্বালিয়ে দিও না।”
"فاذا قتلت فانت أولى بالذي
تبكينه، فاحفظي لي هذا العهد"
“আর যখন আমি শহিদ হব, (তোমার এই কান্না সংরক্ষণ করে রাখো) তখন তুমি এই হৃদয়বিদারক কান্না করো, এই প্রতিশ্রুতি রাখো আমার জন্য।”
এই কবিতার প্রতিটি পংক্তি আজও কারবালার ত্যাগ ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে জ্বলজ্বল করছে। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর এই বিদায়ী মুহূর্ত কেবল ইতিহাস নয়, বরং প্রতিটি মুমিন হৃদয়ে অম্লান এক ব্যথা ও শিক্ষা।
আপনার কমেন্ট