হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসূত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে প্রাচীন ঐতিহাসিক গ্রন্থ "আল-আখবার আল-মুওয়াফ্ফাকিয়াত", যার প্রণেতা হলেন জুবাইর ইবনে বাক্কার, যিনি হিজরি ২৫৬ সালে ইন্তেকাল করেন। এই সময়কালটি ইমাম মাহদী (আ.)-এর জন্মের এক বছর পর এবং ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর শাহাদাতের পূর্ববর্তী সময়। অর্থাৎ, জুবাইর ইবনে বাক্কার এমন এক ঐতিহাসিক যিনি ইমামিয়াতের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অবস্থান করছিলেন এবং সেই সময়ের বাস্তবতা সম্পর্কে ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী প্রজন্মের একজন।
তার বিখ্যাত এই গ্রন্থে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য পাওয়া যায়, যেখানে তিনি লেখেন:
"وَكَانَ عَامَّةُ الْمُهَاجِرِينَ وَ جُلُّ الْأَنْصَارِ لَا يَشُكُّونَ أَنَّ عَلِيًّا هُوَ صَاحِبُ الْأَمْرِ بَعْدَ رَسُولِ اللهِ"
অর্থ: "মুহাজিরদের সাধারণভাবে এবং আনসারদের অধিকাংশই কোনো সন্দেহ করতেন না যে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পর হাকিম, খলীফা, এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তি হচ্ছেন আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)।"
এই বিবৃতিটি একদিকে যেমন ইতিহাসের মূলধারায় আলী (আ.)-এর নেতৃত্বকে প্রমাণ করে, অন্যদিকে উম্মাহর একটি বড় অংশের সম্মিলিত উপলব্ধির প্রতিফলন হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।
ইতিহাসবিদরা প্রশ্ন তুলেছেন—জুবাইর ইবনে বাক্কারের মতো সুপ্রসিদ্ধ ও বিশ্বস্ত ঐতিহাসিক যখন এইরূপ বক্তব্য তুলে ধরেন, তখন এটির গুরুত্ব আর একক উদ্ধৃতি হিসেবে থাকে না; বরং এটি ইঙ্গিত করে যে ইসলামি সমাজের প্রাথমিক পর্যায়ে একটি সুস্পষ্ট ঐকমত্য বিরাজ করছিল খিলাফত ও নেতৃত্বের প্রশ্নে।
এই বক্তব্য নতুন করে উত্থাপন করছে সেই চিরন্তন প্রশ্ন: যখন মুহাজির ও আনসারের একটি বড় অংশের মধ্যে আলী (আ.)-এর নেতৃত্ব নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না, তখন ইতিহাস কোন বাঁকে এই ঐকমত্য হারিয়ে গেল?
এ ধরণের প্রাচীন সূত্র ও বর্ণনা সামনে এনে ইতিহাস পুনঃমূল্যায়নের সময় এসেছে—যেখানে শুধুমাত্র ধারাবিবরণী নয়, বরং উদ্দেশ্য, প্রেক্ষাপট এবং প্রাথমিক উম্মাহর বিশ্বাসকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
আপনার কমেন্ট