হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ বেহজত (রহ.) বলেছেন: “আমরা আমাদের ঘুমের সময় নিয়ে আফসোস করি—কেন তাহাজ্জুদের জন্য উঠতে পারি না। অথচ আমাদের দিনের সময়গুলো গাফিলতি, অসচেতনতা আর অহেতুক কাজে চলে যায়!
যদি জাগ্রত অবস্থায় আমরা আল্লাহর স্মরণ, ইবাদত ও খোদাভীতিতে সময় কাটাতাম, তাহলে আল্লাহ রাতেও আমাদের জাগিয়ে দিতেন—নামাজে শাব (তাহাজ্জুদ), নফল ইবাদত ও কোরআন তিলাওয়াতের তাওফিক দিতেন।”
এই বক্তব্যে তিনি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেন যে, রাতের ইবাদতের তাওফিক একা আল্লাহর দান হলেও, তার পূর্বশর্ত হলো দিনের সময় সজাগভাবে ও ইবাদতমূলকভাবে কাটানো।
আধ্যাত্মিক বিশ্লেষণ: সকল মুসলমানই মনে করেন, তাহাজ্জুদের নামাজ একটি উচ্চতর ইবাদত, যা কেবল বিশেষ কিছু মানুষের ভাগ্যেই জোটে। আয়াতুল্লাহ বেহজাতের এই উক্তি সে ধারণায় ভারসাম্য এনে দেয়। তিনি জানান, যারা দিনে অকারণে সময় নষ্ট করে, তাদের রাতে জাগার শক্তি হয় না। পক্ষান্তরে, যারা দিনে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে, হালাল-হারামের মাঝে পার্থক্য করে চলে, অন্তরকে আল্লাহর স্মরণে ব্যস্ত রাখে—তাদের হৃদয়েই রাতে ইবাদতের বাতি জ্বলে।
কুরআন-সুন্নাহে তাহাজ্জুদের প্রতি গুরুত্ব: কুরআনে কারিমে মহান আল্লাহ বলেন:
وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَّكَ
“আর রাতের একাংশে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করো—এটি তোমার জন্য একটি নফল ইবাদত।” [সূরা ইসরা: ৭৯]
এছাড়া হাদীসে এসেছে, প্রিয়নবী (সা.) কখনো তাহাজ্জুদের নামাজ ছাড়তেন না এবং তাঁর চোখের প্রশান্তি ছিল এই নামাজ।
পরিসমাপ্তি: আয়াতুল্লাহ বেহজাত (রহ.)-এর এই নির্দেশনা কেবল ইবাদতের একটি ফিকহি নির্দেশ নয়, বরং তা আমাদের দিন-রাতের জীবনধারার দিকে আত্মিক আহ্বান। যাঁরা সত্যিই রাতের ইবাদত চান, তাঁদের উচিত দিনের কর্মপরিধিতে খোদাভীতি, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, ও সুন্নাহভিত্তিক জীবনযাপন চর্চা করা। তাহলেই ইনশাআল্লাহ, রাতের অন্ধকারেও আল্লাহর আলো এসে অন্তরে দিশা দেখাবে।
[বেহজাত উদ-দু'আ, পৃষ্ঠা- ৩৮৫]
আপনার কমেন্ট