হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি বলেন, “ইসলামে সেবাপরায়ণতা শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি ইবাদতের এক রূপ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।” তিনি আরও বলেন, মা, স্ত্রী কিংবা কন্যা হিসেবে নারীরা পরিবারে প্রধান সেবিকা হিসেবে কাজ করেন এবং এই ভূমিকার ধর্মীয় ও নৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।
ইসলামী শিক্ষায় দুর্বলদের যত্ন ও সেবার গুরুত্ব
জনাবা ফায়্যাজি ব্যাখ্যা করেন, ইসলামী সংস্কৃতিতে বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের সম্মান ও সহায়তা করা একটি গভীর নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। তিনি কুরআনের সূরা বনি ইসরাইলের আয়াত ২৩ উদ্ধৃত করে বলেন, “তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া আর কারো ইবাদত কোরো না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কোরো। তাদের একজন বা উভয়ে যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হন, তবে তাদের প্রতি ‘উফ্’ বলো না, তাদের ধমক দিয়ো না, এবং তাদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বলো।”
(সূরা আল-ইসরা: ১৭:২৩)
তিনি আরও বলেন, এই আয়াত আমাদের শেখায়—বৃদ্ধ পিতা-মাতার প্রতি নম্র ও মমতাপূর্ণ আচরণ, সম্মান প্রদর্শন এবং সক্রিয়ভাবে যত্ন নেওয়া একজন মুসলিমের মৌলিক গুণ।
তিনি সূরা বাকারা আয়াত ১৭৭ এবং সূরা হুজরাত আয়াত ১১ উল্লেখ করে বলেন, যাঁরা দুর্বল, অভাবী ও অসহায়—তাদের প্রতি সহযোগিতা এবং সম্মানই প্রকৃত ধার্মিকতার পরিচায়ক।
সেবা বরকত ও আত্মিক বিকাশের উৎস
তিনি বলেন, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের সেবা ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ের জন্যই রূপান্তরকারী প্রভাব রাখে। এটি পারিবারিক বন্ধনকে দৃঢ় করে, সহানুভূতির চেতনা জাগায় এবং সেবিকা নারীদের মাঝে আত্মিক প্রশান্তি আনে। “নারীরা অনেক সময় ভালোবাসা ও নিঃস্বার্থভাবে শারীরিক, মানসিক ও আবেগগত সহায়তা প্রদান করেন। তাদের এই ত্যাগ দুর্বলদের জন্য একটি নিরাপদ, স্নেহশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা ইসলামী মূল্যবোধের প্রকৃত প্রতিফলন।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সেবাকাজ কেবল কষ্টসাধ্য কোনো দায় নয়, বরং এটি একটি পবিত্র দায়িত্ব—যার মধ্যে রয়েছে আত্মিক পুরস্কার, আত্মবিকাশ এবং একধরনের আল্লাহভীতি ও সন্তুষ্টির অনুভব।
সংস্কৃতি ও শিক্ষা: নারীদের সেবায় সক্ষম করে তোলা
জাকিয়া ফায়্যাজি নারীদের সেবামূলক ভূমিকায় আরও দক্ষ করে তুলতে সংস্কৃতিক সচেতনতা ও শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। “বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের সেবার গুরুত্বকে সমাজে তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি, নারীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, মানসিক সহায়তা এবং সামাজিক সহযোগিতা প্রদান করতে পারলে তারা আরও দক্ষতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এর ফলে বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরও কল্যাণ নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, সমাজে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, আধ্যাত্মিক ও মানসিক পরামর্শদান, এবং সহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, যাতে নারীদের উপর চাপ কমে এবং দুর্বল জনগোষ্ঠী যথাযথ সেবা ও সম্মান পায়।
আপনার কমেন্ট