হাওজা নিউজ এজেন্সি: মাজারের মিডিয়া বিভাগের উপপ্রধান জাফর আল-বুদাইরি ইরাকের সরকারি বার্তা সংস্থাকে জানান, এ বছর সকল প্রস্তুতি ইমাম আলি (আ.) মাজারের সাধারণ সচিবালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং বিশেষ একটি অপারেশন রুমের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। “এই সামগ্রিক পরিকল্পনার আওতায় রয়েছে আতিথেয়তা, চিকিৎসা সেবা, পানি সরবরাহ, জরুরি অবস্থা মোকাবিলা এবং উন্নত নিরাপত্তাব্যবস্থা,” বলেন আল-বুদাইরি।
জিয়ারতকারীদের জন্য সেবাব্যবস্থা:
১৫টি আতিথেয়তা তাবুতে প্রতিদিন তিন বেলা খাবার পরিবেশন করা হবে, যার সংখ্যা দৈনিক দুই লাখ পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি।
৫০০ জনেরও বেশি প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক, নারী-পুরুষ উভয়, জরুরি মুহূর্তে নিরাপদ সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রতিদিন ১ কোটি লিটারেরও বেশি ঠাণ্ডা ও বিশুদ্ধ পানি পাঁচটি প্রধান প্রবেশপথ দিয়ে সরবরাহ করা হবে।
৩,৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন।
ইমাম আলি (আ.) মাজার প্রাঙ্গণ এবং ফাতিমা যাহরা (সা.) কমপ্লেক্সে ৬১টি ওয়াই-ফাই ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে, যা জিয়ারতকারীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট সরবরাহ করবে।
নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি:
ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির জন্য ৩,০০০-এরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে মাজার এবং আশপাশের এলাকাজুড়ে।
উন্নত স্ক্যানিং প্রযুক্তি (Rapiscan) এবং একাধিক নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট স্থাপন করে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা কর্মীরা উন্নত হুমকি শনাক্তকরণ যন্ত্র ব্যবহারে প্রশিক্ষিত।
অতিরিক্ত সুবিধা ও মিডিয়া কাভারেজ:
জিয়ারতকারীদের বিশ্রামের জন্য প্রতিটি ১,৬৫৭ বর্গমিটার আয়তনের ছাউনিযুক্ত নতুন তাবু বসানো হয়েছে।
ছায়াদান ও ছাউনি স্থাপন করা হয়েছে কোর্টইয়ার্ড এবং থাকার স্থানে অতিরিক্ত রোদ থেকে রক্ষার জন্য।
পরিচ্ছন্নতা, চলমান টয়লেট, ও বিছানো কার্পেটসহ আরামদায়ক বিশ্রাম স্থান তৈরি করা হয়েছে।
পাঁচটি মিডিয়া দল সরাসরি মাজার প্রাঙ্গণ থেকে আধ্যাত্মিক এবং সাংগঠনিক দিকগুলো কাভার করবে।
আরবাঈন: ত্যাগ, সংহতি ও আধ্যাত্মিকতার পথে এক মহাযাত্রা
আরবাঈন হল কারবালার যুদ্ধে নবী করিম (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হুসেইন (আ.)-এর শাহাদাতের ৪০তম দিন। এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ শান্তিপূর্ণ বার্ষিক সমাবেশ, যেখানে প্রতিবছর ২ কোটিরও বেশি মানুষ অংশ নেন। অনেকে নজাফ থেকে কারবালা পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যাত্রা করেন—যা ভক্তি, ঐক্য এবং প্রতিবাদের এক অনন্য প্রকাশ।
বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশ থেকে আগত জিয়ারতকারীদের অংশগ্রহণ এই মহাযাত্রাকে জাতীয় ও ভাষাগত সীমার বাইরে নিয়ে যায়, পরিণত করে এক আধ্যাত্মিক প্রতিরোধ ও মানবিক ঐক্যের বার্তায়।
আপনার কমেন্ট