রবিবার ১০ আগস্ট ২০২৫ - ১৮:০৮
আমিরুল মুমিনিন (আ.)-এর রাগ সম্পর্কিত সতর্কবার্তা

আমিরুল মুমিনিন আলী (আ.) ইসলামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম। তার শিক্ষাগুলি শুধু ধর্মীয় জীবনেই নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে চিরকালীন পথপ্রদর্শক। আমিরুল মুমিনিন (আ.) রাগ সম্পর্কে যা বলেছেন, তা আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আজকের সমাজে তা প্রাসঙ্গিক।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আমিরুল মু'মিনিন ইমাম আলী (আ.)-এর বক্তব্যগুলি আমাদের আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি এবং জীবনের প্রতি মনোভাব গঠনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

গুস্সা বা রাগ: একটি ক্ষতিকর মানসিকতা
আমিরুল মুমিনিন (আ.) গুস্সাকে “হালকা মনের বাহন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি রাগের বশবর্তী হয়ে তাড়াহুড়া বা অস্থির আচরণ করে, সে দ্রুততার সঙ্গে কোনো সাফল্য লাভ করবে না। বরং, গুস্সা তাকে পথভ্রষ্ট করে ফেলবে এবং তার সঠিক পথে চলাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

একইভাবে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসকে বসরা শহরের শাসক হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার সময় তাকে সতর্ক করেছিলেন, যেন কখনো খোদার কাজে অকারণ রাগে না ভোগে। কেননা, নিয়ন্ত্রণহীন রাগ শয়তানের প্ররোচনায় সৃষ্টি হয় এবং এটি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে বাধা সৃষ্টি করে।

আমিরুল মুমিনিন (আ.) বলেছেন,

الغَضَبُ مَرکَبُ الطَّیشِ

অর্থাৎ, গুস্সা হল হালকা মনের বাহন।

তিনি আরও বলেন,

الغَضَبَ طَیرَةٌ مِن الشیطانِ
অর্থাৎ, গুস্সা শয়তানের কৃতিত্ব এবংঅস্থিরতা সৃষ্টি করে।

আমিরুল মুমিনিন (আ.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, কখনো আমাদের রাগকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেওয়া উচিত নয়, কারণ এটি শয়তানের প্ররোচনায় উদ্ভূত হয় এবং আমাদের কাজের মধ্যে ভুল এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করে।

মুল বার্তা: আমিরুল মুমিনিন (আ.) আমাদেরকে শেখাচ্ছেন যে, রাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখনই গুস্সা বা রাগ অনুভব করি, আমাদের উচিত, শান্ত হয়ে সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা এবং সঠিকভাবে চিন্তা করা। রাগ আমাদের কর্মক্ষমতা ও মানসিক শান্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং এর ফলস্বরূপ আমরা ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারি। বিশেষ করে, একজন শাসক বা নেতৃত্বের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি হিসেবে এই নীতির অনুসরণ আরো জরুরি, কারণ রাগ তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে বড় ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।

উপসংহার: আমিরুল মুমিনিন (আ.)-এর শিক্ষা আমাদের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। ইসলাম আমাদেরকে সঠিক চিন্তা, বিচার-বিশ্লেষণ, এবং শান্ত মন নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানায়। বিশেষত, যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের জন্য এই শিক্ষা অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে, রাগের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সচেতনতা এবং ধৈর্য্যের প্রয়োজন। যেহেতু রাগ শয়তানের প্ররোচনায় আসে, তাই আমাদের উচিত তার প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা এবং সঠিক পথে চলা।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha