হাওজা নিউজ এজেন্সি’র সঙ্গে আলাপচারিতায় এই ধর্মীয় বিশ্লেষক বলেন, ইসলামী বিপ্লবের দুই ইমামের (ইমাম খোমেনি ও ইমাম খামেনেয়ী) নির্দেশনা অনুযায়ী, ফিলিস্তিন ইস্যু সবসময়ই মুসলমানদের জন্য একটি মৌলিক ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়।
তিনি সতর্ক করে বলেন— যেকোনো পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের বিষয়টি ভুলে যাওয়া বা প্রান্তিক করে দেওয়া যাবে না। শত্রুর পরিকল্পনাই হলো মুসলমানদের মাঝে ফিলিস্তিন ইস্যুর গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া।
সাম্প্রতিক ঘটনা ও শহীদ কমান্ডারগণ
হুজ্জাতুল ইসলাম পানাহিয়ান সাম্প্রতিক দুই বছরে সংঘটিত ঘটনাবলী এবং প্রতিরোধ ফ্রন্টের কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডারের শাহাদাতের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন— যেমনটি সর্বোচ্চ নেতা শহীদ ইসমাইল হানিয়া, সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ, ইয়াহইয়া সিনওয়ার এবং অন্যান্য শহীদদের শাহাদাতের পর বার্তায় জোর দিয়ে বলেছেন, প্রতিরোধের প্রতিটি সৈনিক ও কমান্ডারের শাহাদাত অন্যদের মাঝে ত্যাগ ও প্রতিরোধের মনোবলকে আরও দৃঢ় করে।
মুসলিম ঐক্যের অপরিহার্যতা
তিনি আমেরিকার সহায়তায় গাজায় জায়োনিস্ট শাসনের গণহত্যা ও বর্বরতার বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন— মুসলমানদের ঐক্যই হলো গাজার অবরোধ শেষ করার এবং পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস মুক্ত করার একমাত্র পথ।
তিনি আরও বলেন— জায়োনিস্ট শাসনকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করে এমন পণ্যসমূহ বয়কট করা অপরিহার্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই দখলদার শাসনের পৃষ্ঠপোষক অনেক পণ্যই ইসলামি দেশগুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে, যার মুনাফা ফিলিস্তিনি জনগণের হত্যাযজ্ঞে ব্যয় হচ্ছে।
বিভাজন এড়িয়ে সর্বাত্মক প্রতিরোধ
হুজ্জাতুল ইসলাম পানাহিয়ান জোর দিয়ে বলেন— মুসলমানদের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে ও সর্বশক্তি দিয়ে জায়নিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং নিজেদের ঐক্যের সারিতে কোনোভাবেই বিভাজনের সুযোগ না দেওয়া। শত্রুরা মুসলমানদের সারিতে বিভাজনের সুর শোনার অপেক্ষায় আছে, যাতে তা কাজে লাগিয়ে আঘাত হানতে পারে। তাই আচরণ ও বক্তব্যে সতর্ক থাকা অপরিহার্য।
আলেম ও মিডিয়ার ভূমিকা
তেহরানের দারুল হিকমা হাওজায়ে ইলমিয়ার প্রধান হিসেবে তিনি বলেন— জায়োনিস্ট শাসনের অপরাধসমূহ জনগণের কাছে স্পষ্ট করে তোলার ক্ষেত্রে ধর্মীয় প্রচারকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা পরিচালনায় হামাসের অনস্বীকার্য ভূমিকা শেষ করার ষড়যন্ত্রের ভয়াবহ ও মানবতাবিরোধী দিকগুলো আলেম, ইমামগণ, গণমাধ্যম, চিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও প্রচারকদের জনগণের কাছে ব্যাখ্যা করতে হবে।
তিনি সতর্ক করে বলেন— যদি আজ বিশ্ব ইসলাম আমেরিকার এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান না নেয়, তবে ইসলামী ভূখণ্ডের আরও অংশ হারানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
প্রতিরোধ ফ্রন্টে অটল সমর্থন
হুজ্জাতুল ইসলাম পানাহিয়ান বলেন— নিশ্চিতভাবে মুসলিম জাতিগুলো সর্বোচ্চ নেতার নেতৃত্ব অনুসরণ করে প্রতিরোধ ফ্রন্টকে দুর্বল হতে দেবে না। আজ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান, ১২ দিনের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের বিজয়ের পর, শতগুণ عزت (মর্যাদা) ও اقتدار (শক্তি) নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে হিজবুল্লাহ ও হামাসকে সমর্থন করছে।
আপনার কমেন্ট