শনিবার ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১৯:৩২
ইসলাম ও ইসলামি বিপ্লবের বিশ্বব্যাপী সম্ভাবনা

ইসলামি বিপ্লব আলেমসমাজের জন্য ভালো সুযোগ তৈরি করেছে এবং আমাদের এই দায়িত্ব রয়েছে যে আমরা মহানবী (সা.) ও আহলে বায়ত (আ.)-এর পথ অব্যাহত রাখি।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের হাওযা ইলমিয়ার পরিচালক বিশ্বের সর্বত্র ইসলামের ও ইসলামি বিপ্লবের বিপুল সম্ভাবনার প্রতি ইঙ্গিত করে জোর দিয়ে বলেন: আজ ইসলামি বিপ্লবের বরকতে, সমগ্র বিশ্ব আল্লাহর জ্ঞান ও শিয়া মাযহাবের শিক্ষা শোনার সামর্থ্য অর্জন করেছে এবং এসব শিক্ষার জন্য গভীর তৃষ্ণা ও মনোযোগী কান বিদ্যমান।

মজলিসে খোবরেগানের সদস্য বলেন: ইসলামি বিপ্লব আলেমসমাজের জন্য ভালো সুযোগ তৈরি করেছে এবং আমাদের এই দায়িত্ব রয়েছে যে আমরা মহানবী (সা.) ও আহলে বায়ত (আ.)-এর পথ অব্যাহত রাখি। আহলে বায়তের (আ.) বরকতময় কেন্দ্রও এমন এক উজ্জ্বল কেন্দ্র হওয়া উচিত, যেখানে নতুন বিষয়গুলো আলোচিত হবে। আলহামদুলিল্লাহ, ইতিমধ্যেই ভালো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যা সম্মান ও শ্রদ্ধার যোগ্য।

বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়ার আশঙ্কা ও প্রত্যাশা

আয়াতুল্লাহ আরাফি তার বক্তব্যের পরবর্তী অংশে বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়ার আশঙ্কা ও প্রত্যাশা ব্যাখ্যা করে বলেন: এখানে যে আলোচনাটি রয়েছে তা হলো, বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা কী? বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হওয়া এবং সে পথে এগোনো কি উপযুক্ত ও কাম্য? আর বিজ্ঞানের এই বিশেষায়িত হওয়ার কী ধরনের ক্ষতি রয়েছে?
এটি জানা উচিত যে ইমাম বাকের (আ.) ও ইমাম সাদিকের (আ.) সময়েও বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়া বিদ্যমান ছিল। ইমাম বাকের (আ.) ও ইমাম সাদিকের (আ.) অনেক সাহাবি ফিকহ, কালাম বা অন্যান্য বিদ্যার দিকে ঝুঁকেছিলেন।

হাওযা ইলমিয়ার পরিচালক বলেন: বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়া ও শাখায় বিভক্ত হওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি গভীরতা, উদ্ভাবন ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং বিদ্যার বিকাশ ও উন্নয়নে সাহায্য করে। তবে এর ক্ষতির দিকগুলোতেও মনোযোগী হওয়া জরুরি। এর একটি ক্ষতি হলো, অতিরিক্ত সূক্ষ্মতায় বড় দৃষ্টিভঙ্গি হারিয়ে যেতে পারে।

বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়ার ক্ষতি ও চ্যালেঞ্জ

তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন: উদাহরণস্বরূপ, চিকিৎসা ফিকহে যদি খুব বেশি সূক্ষ্মতায় যাওয়া হয়, তবে অঙ্গগুলির মধ্যে সম্পর্ক উপেক্ষিত হতে পারে এবং পদ্ধতিগত ক্ষেত্রেও ক্ষতি হতে পারে। মানববিদ্যার ক্ষেত্রেও এই ক্ষতি আরও কঠিনভাবে দেখা দেয়, কারণ সেখানে সামগ্রিক ও মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রাথমিক পদ্ধতিগুলি প্রতিফলিত না হয়ে হারিয়ে যেতে পারে। এই খণ্ডিত দৃষ্টিভঙ্গি ও মৌলিক ভিত্তি থেকে বিমুখ হওয়াই একটি বড় ক্ষতি, যার প্রতি অবশ্যই মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়া পরিত্যাগ করার ক্ষতি

আয়াতুল্লাহ আরাফি স্পষ্টভাবে বলেন: যদি আমরা বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়া পরিত্যাগ করি, তবে কুরআন ও হাদিসের অনেক দিক আমাদের আড়ালেই থেকে যাবে। উদাহরণস্বরূপ, একটি হাদিসের ভেতরেই কী বিশালতা লুকিয়ে থাকতে পারে তা আমাদের বুঝতে হবে। অবশ্যই আমাদের ধাপে ধাপে এগোতে হবে, কারণ আমাদের উভয়ই সীমাহীন – আমাদের উৎস ও সামর্থ্য যেমন অসীম, তেমনি আধুনিক যুগের প্রশ্ন ও চাহিদাও অসীম। তবে এর ক্ষতির দিকগুলো মোকাবিলার জন্যও পরিকল্পনা থাকতে হবে।

বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়ার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়

হাওযা ইলমিয়ার পরিচালক বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়ার ক্ষতি ও চ্যালেঞ্জ থেকে বাঁচার জন্য কিছু সুপারিশ করে বলেন: প্রথম বিষয় হলো, ইসলামি গ্রন্থে গবেষণার মৌলিক পদ্ধতিগুলির প্রতি মনোযোগী হতে হবে। উসূল ফিকহ শুধু ফিকহের জন্য নয়, বরং এসব ক্ষেত্রেও এর ব্যাপক প্রয়োগ রয়েছে। তাই এতে আমাদের শক্তিশালী হতে হবে। দ্বিতীয় বিষয় হলো, কালাম ও আকিদার আলোচনায়ও আমাদের দৃঢ় থাকতে হবে এবং সে ক্ষেত্রের পদ্ধতিতেও শক্তিশালী হতে হবে।

মজলিসে খোবরেগানের সদস্য বলেন: পরবর্তী বিষয় হলো, প্রাথমিক তথ্যগুলো সঠিক ও দৃঢ়ভাবে আয়ত্ত করা।
বিজ্ঞানের বিশেষায়িত হওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি ধাপ রয়েছে: প্রথম ধাপ হলো কারশেনাসি (স্নাতক স্তর), দ্বিতীয় ধাপ হলো আংশিক ইজতিহাদ এবং তৃতীয় ধাপ হলো পূর্ণাঙ্গ ইজতিহাদ। এই প্রতিটি স্তরের জন্য পরিকল্পনা করা সম্ভব। আমার অনুরোধ হলো, আপনারা একটি বিশাল কেন্দ্রে এই তিনটি স্তরের জন্যই পরিকল্পনা রাখুন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha