হাওজা নিউজ এজেন্সি: যুক্তরাষ্ট্র বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ফোয়াদ ইজাদি ফার্স নিউজ এজেন্সি’কে বলেছেন, “মূলত, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার আড়ালে সন্ত্রাসী হামলা চালায়।”
তিনি জানান, সরাসরি আলোচনার আড়ালে আমেরিকা হামাস নেতাদের, বিশেষ করে আলোচনাকারী দলের অবস্থান সম্পর্কিত নিরাপত্তা তথ্য সংগ্রহ করে ইসরায়েলকে সরবরাহ করেছে যাতে তাদের সফলভাবে হত্যা করা যায়।
ইজাদি বলেন, “আজকের ইসরাইলি হামলার পর কিছু মহল মনে করছেন যে হামাসও এখন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় জড়িয়েছে এবং এটি দেশীয় কিছু মহলকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে যুক্ত করার সুযোগ দিচ্ছে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আগে হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা ছিল অপ্রত্যক্ষ। সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকান কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে আলোচনাগুলো এখন সরাসরি হচ্ছে। তবে এ আগ্রহ শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, বরং হামাস নেতাদের অবস্থান সম্পর্কিত নিরাপত্তা তথ্য সংগ্রহের জন্য। এই আলোচনাগুলো প্রকৃতপক্ষে তথ্য সংগ্রহের ফাঁদ মাত্র।”
ইজদি পশ্চিমা মিডিয়ার উদাহরণও তুলে ধরেছেন। সিএনএন-এর একটি অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন জেনারেল এনাই ও কার বলেন, কাতারে সেনটকমের সামরিক ঘাঁটি, যা বহু বছর মার্কিন সেনাদের অবস্থানস্থল ছিল, তা ওয়াশিংটনের সমন্বয় ছাড়া কার্যকরভাবে ব্যবহার করা সম্ভব নয়। এই ঘাঁটি কাতারের ব্যয়বহুল বিনিয়োগ সত্ত্বেও শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কার্যকর হয়।
তিনি বলেন, “সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন পরামর্শকরা ক্রেতা দেশে অবস্থান নেন। তারা নির্ধারণ করেন কখন সিস্টেম সক্রিয় থাকবে বা বন্ধ হবে। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তারাও এ বিষয় স্বীকার করেছেন। এটি কঠোর বাস্তবতা।”
ইজদি সতর্ক করে বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের সময় আমরা নিজেও এই ধরনের ফাঁদে পতিত হয়েছিলাম। তখন, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক চুক্তি ত্যাগ করেছিল, তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। তবে বাস্তবে ইসরাইলের সঙ্গে মিলিত হয়ে তথ্য ও কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। সেই সময়ের হামলা একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ।”
তিনি আরও বলেন, “আজ হামাসের ক্ষেত্রেও একই প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। সরাসরি আলোচনার আড়ালে এটি প্রকৃতপক্ষে ফাঁদ এবং সামরিক ও নিরাপত্তা কার্যক্রম চালানোর হাতিয়ার।”
শেষে ইজদি সতর্ক করে বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত দেশের কিছু রাজনৈতিক মহল, যারা আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখে, আবারও সরাসরি আলোচনার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা না নেওয়া বিপজ্জনক, এবং দেশের ভবিষ্যতের জন্য এটি চিন্তার বিষয়।”
আপনার কমেন্ট