শনিবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ০১:০৪
কাতারের ওপর হামলা ইসলামী দেশগুলোর জন্য সতর্কবার্তা: আয়াতুল্লাহ আ'রাফি

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ধর্মীয় নগরী কোমে জুমার খুতবায় আয়াতুল্লাহ আলী রেজা আ'রাফি সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলাকে ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর জন্য একটি গুরুতর বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “যদি মুসলিম দেশগুলো প্রতিরোধ আন্দোলনের পাশে না দাঁড়ায় এবং বরং তাদের নিরস্ত্র করতে চায়, তবে শেষ পর্যন্ত তারাও একই আগুনে পুড়ে যাবে।”

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ আ'রাফি জোর দিয়ে বলেন, ইসলামের শত্রুরা মুসলমানদের সামনে মাত্র দুটি বিকল্প রাখে— লাঞ্ছনা ও আত্মসমর্পণ অথবা সম্পূর্ণ ধ্বংস।

তিনি আলোচনার প্রক্রিয়াকে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “ইরানি জাতি কখনো আক্রমণকারী ছিল না এবং কখনো লাঞ্ছনা মেনে নেবে না। অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, শত্রুরা প্রতারক ও অত্যাচারী। আমরা কষ্ট ও কঠিন পরিস্থিতি মেনে নেব, কিন্তু কুফর ও ঔদ্ধত্যের সামনে মাথা নত করব না।”

কাতারের ওপর ইসরায়েলি হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কাতার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র, সেখানে ওয়াশিংটনের একটি বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তবুও এ হামলা প্রমাণ করে, ইসলামের শত্রুরা কাউকেই ছাড় দেয় না; কোনো সরকার বা গোষ্ঠীই তাদের নিশানার বাইরে নয়।”

খুতবায় তিনি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বের দিকেও ইঙ্গিত করেন। তাঁর মতে, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাওযায়ে ইলমিয়া একটি আলোকোজ্জ্বল ত্রিভুজ, যার ওপর সমাজের সাফল্য ও অগ্রগতি নির্ভর করে। তিনি শিক্ষাব্যবস্থার পাঁচটি মৌলনীতি তুলে ধরেন—

১. জ্ঞান ও চিন্তার বিকাশ,

২. আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষা,

৩. কারিগরি ও দক্ষতার প্রশিক্ষণ,

৪. সামাজিক দায়িত্বশীলতা,

৫. রাজনৈতিক ও বিপ্লবী বাসিরাত (অন্তর্দৃষ্টি ও সচেতনতা)।

আয়াতুল্লাহ আ'রাফি সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেন যে— পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মতো মৌলিক সমস্যাগুলোতে বিপ্লবী পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সাইবার ও ইন্টারনেট অবকাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করতে হবে। কারণ যুদ্ধ আমাদের দুর্বলতাগুলো উন্মোচিত করে দিয়েছে।

তিনি সাংস্কৃতিক বিষয় ও হিজাব প্রসঙ্গেও আলোকপাত করেন এবং বলেন, “দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে, কারণ একটি ভুল পদক্ষেপ গোটা সমাজে বহুগুণ প্রভাব বিস্তার করে।”

খুতবার শেষাংশে তিনি মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর ১৫০০তম জন্মজয়ন্তীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, “রাসূলুল্লাহর (সা.) মাব‘আস মানবজাতিকে জাহেলিয়াত থেকে মুক্ত করে আলোকোজ্জ্বল ঐশী ও সভ্যতার পথে নিয়ে গিয়েছিল। আজ উম্মতে ইসলামকে আবারও নবীর (সা.) সাথে বায়আত নবায়ন করতে হবে, যাতে অন্তরে নূরানিয়াত সৃষ্টি হয়, ঐক্য মজবুত হয় এবং তাওহীদের ফ্রন্ট শক্তিশালী হয়।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha