সোমবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ২১:৩৪
‘বালাগুল মোবিন’ বৈশ্বিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত হওয়া উচিত

হাওযা ইলমিয়্যার পরিচালক সমাজের সঙ্গে হাওযার সংযোগ স্থাপনের জন্য মধ্যবর্তী তত্ত্ব প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বলেছেন যে, বৈশ্বিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে 'বালাগুল মোবিন’ (পরিষ্কার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব) নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত হওয়া অপরিহার্য।

হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের হাওযা ইলমিয়্যার পরিচালক আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আ'রাফি ১৪০৪-১৪০৫ শিক্ষাবর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এই অনুষ্ঠান আজ (সোমবার, ২৪ শহারিভার ১৪০৪) ইমাম খোমেইনি (রহ.) শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হলে অনুষ্ঠিত হয়। তিনি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর জন্মবার্ষিকী এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ১৫০০তম জন্মজয়ন্তীর শুভক্ষণে শিক্ষকমণ্ডলী, গবেষক ও ছাত্রদের নতুন শিক্ষাবর্ষের শুভেচ্ছা জানান এবং ইমাম খোমেইনি (রহ.) প্রতিষ্ঠানের বৈজ্ঞানিক ও গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন।

‘মাদ্রাসায় স্বাধীন শিক্ষা’ সংস্কার পরিকল্পনা, হাওযার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত করার এক সুযোগ

আয়াতুল্লাহ মিসবাহ ইয়াজদী (রহ.)-এর উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব
হাওযা ইলমিয়্যার পরিচালক আয়াতুল্লাহ মিসবাহ ইয়াজদী (রহ.)-এর ব্যক্তিত্বের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন:
তিনি ইমাম খোমেইনি (রহ.)-এর আন্দোলন ও ইসলামি বিপ্লবের অগ্রদূত ছিলেন। বিপ্লবের ইতিহাসের উত্থান-পতনে তিনি ইসলামি চিন্তার রক্ষক এবং ইসলামি ব্যবস্থার মৌলিক আদর্শ ও মূল্যবোধের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি বেলায়েত-ফকিহ নীতির একজন সাহসী ও অগ্রগামী রক্ষক ছিলেন, এবং তাঁর স্থায়ী বৈজ্ঞানিক কাজসমূহ হাওযা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অমূল্য ভাণ্ডার।

তিনি যোগ করেন: আয়াতুল্লাহ মিসবাহ (রহ.)-এর দার্শনিক ও জ্ঞানতাত্ত্বিক রচনাসমূহ দেশি-বিদেশি বৈজ্ঞানিক কেন্দ্রগুলোর জন্য মূল্যবান সম্পদ। তিনি ইসলামি দর্শন ও প্রয়োগমূলক দর্শনের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ছিলেন, যিনি তাঁর বৌদ্ধিক উদ্ভাবনের মাধ্যমে ইসলামি চিন্তাধারায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন। শিক্ষা ও হাওযার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনি হাওযা ইলমিয়্যার সংস্কারের অগ্রদূতদের একজন ছিলেন।

যে কেউ যদি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যক্তিত্বের মহিমা জানতে চান, তবে তাঁকে ‘নাহজুল বালাগা’-এর দিকে তাকাতে হবে। আমিরুল মুমিনিন আলী (আ.) ছাড়া কেউই নবি করিম (সা.)-এর এমন গভীর ও মহান পরিচয় উপস্থাপন করতে সক্ষম নন।

হাওযা ইলমিয়ার পরিচালক ইসলামি বিপ্লবের শুরুর বছরগুলোতে আয়াতুল্লাহ মিসবাহ ইয়াজদী (রহ.)-এর সঙ্গে নিজের সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে বলেন: আন্তরিকতা, সাহস, গভীর চিন্তাভাবনা এবং সুনির্দিষ্ট বিশ্লেষণের ক্ষমতা ছিল তাঁর বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যা তাঁর সহচররা সর্বদা স্বীকার করেছেন।
তাঁর ব্যক্তিত্ব প্রজন্মের পর প্রজন্মের ছাত্র ও চিন্তাবিদদের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে আছে।

মহানবী (সা.)-এর ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন নাহজুল বালাগায়
শূরা-ই-নেগাহবান (গার্ডিয়ান কাউন্সিল)-এর একজন আলেম ফকিহ নিজের বক্তব্যের আরেক অংশে নাহজুল বালাগার খুতবায় মহানবী (সা.)-কে নিয়ে বর্ণনার গুরুত্বের উপর আলোকপাত করে বলেন:
নাহজুল বালাগার খুতবাগুলোতে বিশেষত ৪৫টি স্থানে মহানবী (সা.) সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তা প্রমাণ করে যে রাসূলুল্লাহর (সা.) প্রেরণ কেবল আরব উপদ্বীপের সীমিত একটি স্থানীয় ঘটনা ছিল না; বরং তা ছিল একটি বৈশ্বিক ও মানবতার ইতিহাস নির্ধারণকারী ঘটনা।

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন: কিছু মানুষ মনে করে যে, নবুওয়াতের দায়িত্ব কেবল আরব উপদ্বীপের অবক্ষয়িত সমাজের জন্য সীমিত ছিল। অথচ নাহজুল বালাগার শিক্ষা প্রমাণ করে যে, নবুওয়াতের দায়িত্ব সেই ভৌগোলিক পরিসীমার বাইরে গিয়েছিল এবং মানবতার জন্য ছিল একটি বিশ্বজনীন বার্তা।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha