হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামী ইতিহাসে হযরত খাদিজা (সা.)-এর নাম এক অনন্য মর্যাদার আসনে আসীন। তিনি ছিলেন মক্কার একজন সম্মানিত ব্যবসায়ী, জ্ঞানী ও মহান ব্যক্তিত্ব। তাঁর সততা, উদারতা ও চরিত্রের দৃঢ়তার কারণে তিনি “তাহিরা” উপাধি লাভ করেছিলেন।
মারহুম আবুল কাসিম কূফির রচিত প্রসিদ্ধ গ্রন্থ আল-ইস্তেগাসাহ-তে হযরত খাদিজা (সা.)-কে নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা পাওয়া যায়। প্রথম খণ্ডের ৭০ নম্বর পৃষ্ঠায় তিনি উল্লেখ করেছেন:
“لم يبق من اشراف قريش ومن ساداتهم وذوي النجدة منهم الا من خطب خديجة ورام تزويجها”
অর্থাৎ কুরাইশের এমন কোনো সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন না, মক্কার এমন কোনো নেতা বা প্রভাবশালী ব্যক্তি বাদ যায়নি-যিনি হযরত খাদিজা (সা.)-এর কাছে বিবাহ প্রস্তাব দেননি। সবাই তাঁকে স্ত্রী হিসেবে পেতে চেয়েছিল, কিন্তু তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যেককে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
এ থেকে স্পষ্ট হয় যে, হযরত খাদিজা (সা.) কখনো কেবল ধন-সম্পদ, সামাজিক মর্যাদা বা প্রভাবের কারণে জীবনের সিদ্ধান্ত নেননি। বরং তিনি আল্লাহর নির্দেশিত পথ ও সত্যকে অনুসরণের জন্যই নিজেকে প্রস্তুত রেখেছিলেন। তাঁর এই প্রত্যাখ্যানই প্রমাণ করে যে, তিনি আল্লাহর প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গিনী হবার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এমনকি তাঁর মর্যাদার প্রমাণ পাওয়া যায় এই ঘটনাতেও যে, যখন জিবরাঈল (আ.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্যে আসেন, তখন তিনি বলেন: হে রাসূলুল্লাহ! আল্লাহ আমাকে আদেশ করেছেন যেন আমি তাঁর সালাম হযরত খদিজা (সা.)-কে পৌঁছে দিই।
এ এক বিরল সম্মান, যেখানে স্বয়ং মহান আল্লাহ তাঁর বান্দীকে সালাম পাঠিয়েছেন।
হযরত খদিজা (সা.)-এর জীবনী আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। তিনি প্রমাণ করেছেন, প্রকৃত মর্যাদা কোনো ধন-সম্পদে নয়; বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি, ঈমান ও সৎ চরিত্রেই নিহিত। পৃথিবীর অসংখ্য প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তিনি আল্লাহর নির্বাচিত নবীকে সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, যা ইতিহাসে তাঁকে এক অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।
উস্তাদ আয়াতুল্লাহ কাজবিনী
আপনার কমেন্ট