রবিবার ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ২০:৪৩
এসেছে মুহাম্মাদের বসন্ত রবি 
রবীউল আওওয়াল 

কিয়ামত দিবসে রাসূলুল্লাহর সাথে একই মর্যাদায় অবস্থান করতে তারা তাঁকে, হাসান ও হুসাইন এবং তাঁদের পিতামাতাকে (আলী ও ফাতিমা) ভালবাসবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, এসেছে মুহাম্মাদের বসন্ত রবি 
রবীউল আওওয়াল 
বিশ্ব জগৎ উজালা করে নবী দ্যূতি
চির অম্লান
ধরিত্রীর বুকে আগমন তব শুভ ও মহান
হে মুজতবা আহমাদ!হে মুস্তাফা মুহাম্মাদ!
হে নবী-ই আমজাদ (সবচেয়ে মর্যাদাবান নবী)
রাসূলুল্লাহ,নবীউল্লাহ্,হাবীবুল্লাহ (আল্লাহর হাবীব প্রিয়বন্ধু)
খাইরু খালকিল্লাহ্ (সর্বোত্তম সৃষ্টি)
যাকে সৃষ্টি না করলে মহান স্রষ্টা এ বিশ্ব নিখিল কিছুই সৃষ্টি করতেন না  
(লওলাক লামা খলাক্ব্তুল আফলাক্)
খাতামুন্নাবীয়ীন (শেষ নবী)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন (সকল প্রেরিত পুরুষদের নেতা)
রাসূলে আ'যাম্ (সর্বপ্রধান রাসূল)
উসওয়াতুন হাসানাহ্ (উত্তম আদর্শ),
উত্তম চারিত্রিক গুণাবলীর পূর্ণতা বিধায়ক 
অতিমহান চরিত্র ও গুণের ওপর প্রতিষ্ঠিত 
(ইন্নাকা লা'আলা খুলুকিন আযীম)
যার অনুসরণেই আছে স্রষ্টার প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা নিহিত 
( ক্বুল্ ইন্ কুন্তুম্ তুহি়ব্বূনাল্লাহা ফাত্তাবিঊনী ইয়ুহ্বিবকুমুল্লাহ্ বলে দাও," যদি তোমরা ভালবাস আল্লাহকে তাহলে আমাকে অনুসরণ কর তোমরা; তোমাদের ভালবাসবেন তখন মহান আল্লাহ)
সর্বোত্তম পূর্ণাঙ্গ মহামানব
হাদী (পথপ্রদর্শক) আমীন (পরম বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন)
তাঁর ওপর অবতীর্ণ (নাযিল ও মুনাযযাল)
ঐশী ধর্মীয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও বিধানের উৎস ও ভান্ডার 
হিদায়তের আলোক বর্তিকা ও দ্যূতি কিতাবুল্লাহ (আল্লাহর গ্রন্থ) কুরআন 
পূর্ববর্তী সকল ঐশী গ্রন্থ ও সহীফার সংরক্ষক ( মুহাইমিন) এই কুরআন 
সত্য মিথ্যার প্রভেদকারী ফুরকান
সম্পূর্ণ নির্ভুল,সহীহ (বিশুদ্ধ), অবিকৃত,সত্য ও সুসংরক্ষিত মাসূম এ কুরআন
শয়তান ও মিথ্যার প্রক্ষেপ এবং সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ হতে চিরমুক্ত ও পবিত্র 
সাক্বালাইন:স্বীয় উম্মতের মাঝে রেখে যাওয়া তাঁর দুটো ভারী উত্তারাধিকার ও আমানৎ: কিতাবুল্লাহ এবং তাঁর নিকটাত্মীয় ও রক্তজ  বংশধর (ইতরাৎ) আহলুল বাইত যাদের মহান আল্লাহ করেছেন সম্পূর্ণ পবিত্র যারা মুবাহালার দিবসে ছিলেন মহানবীর(সাঃ) নুবুওয়তের সত্যতার সাক্ষ্যদাতা শাহেদ্
স্বীয় উম্মাতকে বলেছেন এই সাকালাইনকে আঁকড়ে ধরতে 
যাতে কভু গোমরাহ, বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট না হয় তারা এ ইহ জগতে 
পরকালের মুক্তি জেনো এই সাকালাইনের অনুসরণে
পাক কুরআনের ইদল (সমকক্ষ) আহলে বাইত তাই কিয়ামত তক এ যুগল-এ জুটি (সাকালাইন) কভু হবে না পৃথক 
বর্ণিত আছে এ কথা মহানবীর (সাঃ) সহীহ প্রতিষ্ঠিত মুতাওয়াতির হাদীস সমূহে সাকালাইনের (পবিত্র কুরআন ও মহানবীর সাঃ আহলে বাইত) পথ-ই আসলে সঠিক সত্য পথ (সিরাত-ই মুস্তাকীম)
আমরা পাঞ্জেগানা নামাযে মহান পরওয়ারদেগারের কাছে প্রার্থনা করে বলি প্রতিদিন:
ইহদিনাস সিরাতাল্ মুস্তাকীম্ (আমাদের সঠিক সরল পথে পরিচালিত কর ও প্রতিষ্ঠিত রাখ)।
ফাতিমা তার কন্যা যিনি খাইরুন নিসা (সর্বশ্রেষ্ঠ নারী)
সাইয়েদাতু নিসাইল আলামীন্ ( জগৎ সমূহের নারীদের নেত্রী),সাইয়েদাতু নিসাই আহলিল্ জান্নাহ্ ( জান্নাতের নারীদের নেত্রী),সাইয়েদাতু নিসাই হাযিহিল উম্মাহ (এ উম্মতের নারীকুলের নেত্রী),সাইয়েদাতু নিসাইল মু'মিনীন্ (মুমিন নারীদের নেত্রী)
বেহেশতবাসী যুবকদের নেতৃদ্বয়ের (ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন) মা জননী 
হাসান ও হুসাইন তাঁর (সা) দৌহিত্র (সিবত) জান্নাতবাসী যুবকদের নেতা এবং তাঁদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ তাঁদের পিতামাতা 
শেরে খোদা (খোদার সিংহ) আলী ইবনে আবী তালিব 
হায়দারে কার্রার (আক্রমণ কারী ব্যাঘ্র) গাইরে ফার্রার (যিনি করেন না রণ ভঙ্গ এবং রণ ক্ষেত্র হতে কভু পলায়ণ) তাঁরই পিতৃব্য পুত্র ও ভ্রাতা (আখূ রাসূলিল্লাহ: রাসূলুল্লাহর ভ্রাতা)
(দুনিয়া ও আখেরাতে রাসূলুল্লাহর ভ্রাতা যে আলী তা হাদীসে আছে বর্ণিত)
 যদি না হতেন সৃজিত আলী তাহলে পাওয়া যেত না কভু এ বিশ্বে নবী দুহিতা ফাতিমার কুফূ (সমকক্ষ ও যোগ্য) স্বামী!!!
মহানবীর (সাঃ) পরে সৃষ্টি কুলে শ্রেষ্ঠ আলী
এজন্যই করলেন ঘোষণা গাদীরে খুমের মহা দিবসে তিনি:
মান্ কুনতু মাওলাহু ফাআলীয়ুন্ মাওলাহ্
যার মওলা ( অভিভাবক, তত্ত্বাবধায়ক ও নেতা) আমি,তার মওলাও আলী
কারণ,মু'মিনদের নিজেদের চেয়ে মু'মিনদের অধিকতর নিকটবর্তী ও হক্কদার যে নবী (সাঃ)
(আন্নাবীয়ু আওলা বিল্ মু'মিনীনা মিন্ আনফুসিহিম্ - পবিত্র কুরআন)

অতএব যারা চায় কিয়ামত দিবসে রাসূলুল্লাহর সাথে একই মর্যাদায় অবস্থান করতে তারা তাঁকে, হাসান ও হুসাইন এবং তাঁদের পিতামাতাকে (আলী ও ফাতিমা) ভালবাসবে।
শাফী'উল্ মুযনিবীন্ (সকল পাপীর শাফাআত কারী)
ইয়াওমাদ্দীন(শেষ বিচার দিবসে) 
রহমাতুল্লিল আলামীন ( জগতসমূহের জন্য প্রভুর কৃপা ও রহমত)
সাহিব-ই হাউযে কাওসার 
( হাউযে কাওসারের অধিপতি)
রোয-ই মাহশার (হাশরের দিবসে)
তার ভ্রাতা ও ওয়াসী (স্থলাভিসিক্ত উত্তরাধিকারী ও ওয়াসিযৎ বাস্তবায়ন কারী) মাওলাল মুওয়াহহিদীন্ (তৌহিদবাদীদের নেতা) আলী হায়দার সাকী-ই হাউযে কাওসার
(হাউযে কাওসারে কিয়ামত দিবসে মুমিনদের সাকী যিনি তাদের পানি পান করাবেন)
যার ফলে মুমিনদের থাকবে না হাশরের ময়দানে তৃষ্ণা 
 আর না কোনো ভয় ও বিভীষিকা
নবী ও ওয়াসী এনে দেবেন উম্মতের ডান হাতে তাদের নামা-ই আ'মাল্ (কর্ম সমূহের রেকর্ড )
 মীযানে (মানদণ্ডে) উত্তীর্ণ করবেন তাঁরা উম্মতের ঈমান ও আ'মাল মহান আল্লাহর ইযনে (অনুমতি ক্রমে)
দেখ উম্মত! তোমাদের নবী ( হযরত মুহাম্মদ ) ও তাঁর ওয়াসী ( হযরত আলী ) কত বড় মেহেরবান!
খোদা ব্যতীত সৃষ্টি কুলে নেই যাদের চেয়ে আর কেউ অধিক মেহেরবান।
কারণ, রাসূলুল্লাহ (সা) ও মাওলা আলী এ উম্মতের পিতা 
(আনা ওয়া আলী আবাওয়া হাযিহিল উম্মাহ)
১২ রবীউল আওওয়াল এবং আহলুল বাইতের (আ) গৃহীত মশহুর অভিমত অনুসারে ১৭ রবীউল আওওয়াল হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ইমাম জাফার আস-সাদিকের (আ) শুভ জন্মদিন এবং ১২ থেকে ১৭ রবীউল আওওয়াল মুসলিম উম্মাহর ইসলামী ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha