শুক্রবার ৩ অক্টোবর ২০২৫ - ১৮:০০
স্ন্যাপব্যাক হলো সভ্যতার সংঘর্ষ নীতির একটি কড়ি

আয়াতুল্লাহ আরাফির জুমার খুতবা:

স্ন্যাপব্যাক হলো সভ্যতার সংঘর্ষ নীতির একটি কড়ি

ইরান ও ইসলামী উম্মাহর তিনটি কৌশল এই সংবেদনশীল ঐতিহাসিক পর্যায়ে

আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেছেন: স্ন্যাপব্যাক হলো আমেরিকান ও পশ্চিমা ঔদ্ধত্যের পক্ষ থেকে সভ্যতার সংঘর্ষ নীতির শৃঙ্খলের একটি কড়ি। ইরানি জনগণ ও ইসলামী উম্মাহকে সজাগ থাকতে হবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আরাফি কুমের মসজিদে অনুষ্ঠিত জুমার খুতবায় আল্লাহর বাণী «হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় করো এবং মুসলিম না হয়ে যেন তোমরা মৃত্যু বরণ না করো» (সূরা আলে ইমরান: ১০২) উদ্ধৃত করে বলেন:
এই আয়াতে দুটি বিষয় রয়েছে।
প্রথমত, তাকওয়ার বিভিন্ন স্তর আছে। তাকওয়ার সূচনা হয় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা ও ফরজ আদায় করার মাধ্যমে। কিন্তু তাকওয়া কোনো নির্দিষ্ট স্তরে থেমে থাকে না, বরং ক্রমাগত উন্নতির পথ। মানুষের কৃতিত্ব এখানেই যে, সে তাকওয়ার উচ্চতর স্তরে পৌঁছাতে পারে। তাকওয়ার পূর্ণ অধিকার আদায় করতে হবে এবং আমাদের দৃষ্টি তাকওয়ার শিখর ও উৎসের দিকে রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন: দ্বিতীয় বিষয় হলো তাকওয়ার উপর স্থায়িত্ব। আল্লাহর পথে অটল থাকা চিরস্থায়ী সৌভাগ্যের শর্ত। কারণ, পথে থাকতে থাকতে মানুষ পতিত হতে পারে এবং তাকওয়া থেকে দূরে সরে যেতে পারে।

আয়াতুল্লাহ আরাফি হযরত ফাতেমা মাসুমার (সা.) ওফাত দিবসের প্রসঙ্গে বলেন: হযরত মাসুমা (সা.) এমন এক মহীয়সী নারী, যিনি কুম, ইরান এবং সমগ্র দুনিয়াকে আত্মা ও প্রাণ দান করেছেন এবং ইরানি জাতির জ্ঞান ও জিহাদের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছেন। ইসলামে নারীর মর্যাদা এই যে, একজন নারী একটি শহরের আত্মা হয়ে উঠতে পারেন। কুমের হাওজার প্রাণ, জিহাদ ও বিপ্লব হযরত মাসুমা (সা.)-এর বরকতের ফল, যা ইসলামে নারীর উচ্চ মর্যাদার প্রমাণ।

তিনি বলেন: হযরত মাসুমা (সা.) ছিলেন মুহাজির ইলাল্লাহ-যিনি তাঁর ভাইয়ের সাথে মিলিত হতে যাত্রা করেন এবং পথে ওফাত বা শাহাদাত লাভ করেন। তিনি সমাহিত হন কুম শহরে, যা জ্ঞান, জিহাদ, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতার কেন্দ্র। তাঁর মাজার হেদায়েতের প্রদীপস্বরূপ। একজন নারীর জন্য এটি জ্ঞান, নেতৃত্ব ও মৌলিক ভূমিকার প্রতীক, যেখান থেকে সবাইকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন: ইসলামের দৃষ্টিতে নারী কামনার দাসী নয়, বরং হযরত খাদিজা (সা.), হযরত ফাতেমা যাহরা (সা.), হযরত যায়নাব (সা.) এবং হযরত মাসুমার (সা.) মতো। ইসলামে নারীর সামাজিক, নৈতিক ও পারিবারিক ভূমিকা এইরকম, এবং আমাদের অবশ্যই এই মর্যাদাকে সংরক্ষণ করতে হবে। ইসলামি বিপ্লব নারীর এই সভ্যতামূলক ভূমিকা ও বিশেষ অবস্থানকে পুনরায় উপস্থাপন করেছে।

কুমের জুমার খতিব শহীদ সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ, সাইয়্যেদ হাশিম সাফিউদ্দিন ও শহীদ মুকাবেমাতের স্মৃতিচারণ করে বলেন: শহীদ সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ছিলেন সমকালীন যুগের বিস্ময়, প্রতিরোধ আন্দোলনের মহান সেনানায়ক এবং অটলতার প্রতীক। তিনি সমগ্র ইসলামী বিশ্ব ও ইরানের জন্য গৌরবের বিষয় ছিলেন।

তিনি পুলিশ সপ্তাহের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন: আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা শহর ও দেশের নিরাপত্তার জন্য শক্তিশালী ভরসা। এই বাহিনী একটি সুনামধন্য ও সাহসী বাহিনী, যার ওপর বহু গুরুদায়িত্ব ন্যস্ত। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বও এই বাহিনীর অংশ।

আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন: ইরানের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী (ফরাজা) সাম্প্রতিক প্রতিরক্ষা সংগ্রামসহ দেশের নিরাপত্তা রক্ষার পথে বহু দায়িত্ব পালন করেছে এবং অসংখ্য শহীদ উপহার দিয়েছে। আমরা আশা করি, এই বাহিনী দৃঢ়তা ও সততার সাথে আল্লাহর হুকুম ও সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশনায় সব সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক দায়িত্ব পালনে সফল হোক।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha