রবিবার ২৬ অক্টোবর ২০২৫ - ১৭:৫৮
মানুষের মনে উদয় হওয়া কুচিন্তা ও কল্পনার জন্যও কি ইস্তেগফার করা প্রয়োজন?

মনুষ্যজীবন এমন এক ক্ষেত্র, যেখানে প্রতিটি কর্মের বীজ প্রথমে চিন্তা ও কল্পনার আকারে জন্ম নেয়। অনেক সময় পাপের সূচনা বাস্তব কাজ দিয়ে নয়, বরং এক ক্ষণস্থায়ী ভাবনা বা কল্পনার মাধ্যমে ঘটে। যদি সেই ভুল চিন্তাকে উপেক্ষা করা হয়, তা ধীরে ধীরে মনে গেড়ে বসে এবং একসময় বাস্তব কর্মে রূপ নেয়।

হাওজা নিউজ এজেন্সি’র এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে আলোচনায় এসেছে যে, ভুল চিন্তা, কল্পনা ও মানসিক প্ররোচনাগুলো পাপের পথ প্রশস্ত করতে পারে। মনের এই পুনরাবৃত্ত চিন্তাগুলো মানুষকে অজান্তেই গুনাহের জন্য প্রস্তুত করে ফেলে। তাই উচিত, চিন্তা ও কল্পনার স্তরেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা (অর্থাৎ ইস্তেগফার করা)— যাতে সেই গুনাহের সম্ভাবনাই নষ্ট হয়ে যায়।

ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ার দারসে আখলাক বা নৈতিকতা বিষয়ের একজন প্রখ্যাত শিক্ষক প্রয়াত আয়াতুল্লাহ আজিজুল্লাহ খোশওয়াক্ত (রহ.) তাঁর এক নৈতিকতা পাঠে এই প্রসঙ্গে বলেন,

“ভুল চিন্তা ও অসৎ কল্পনাগুলো মনের মধ্যে পাপের প্রস্তুতি তৈরি করে। যখন মানুষ এই চিন্তাগুলোর পুনরাবৃত্তি করে, তখন মন ধীরে ধীরে সেই কাজে ঝুঁকে পড়ে। সুতরাং উচিত, চিন্তা ও কল্পনার পর্যায়েই ইস্তেগফার করা, যেন সেই গুনাহের বীজটি অঙ্কুরেই নিঃশেষ হয়ে যায়। এভাবেই মন ও আত্মা পরিশুদ্ধ থাকে এবং নেক কাজের জন্য প্রস্তুত হয়।”

অনেক সময় আমরা মনে করি, কেবল কাজেই গুনাহ হয়; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, গুনাহের সূচনা হয় মনের গোপন কোণে। তাই একজন মুমিনের কর্তব্য হলো নিজের মন ও চিন্তাকে সদা সতর্ক রাখা। যদি কখনো ভুল চিন্তা উদয় হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

ইস্তেগফার শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়, বরং পাপের আগমন ঠেকানোরও এক মহান উপায়। মন যখন ইস্তেগফারের সুবাসে পবিত্র হয়, তখন শয়তানের ফিসফিসানিও সেখানে জায়গা পায় না।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha