হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও ফকীহ আল্লামা মির্জা নায়িনী বিশ্বাস করতেন যে সমাজে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী সরকারের গঠন অপরিহার্য। তাঁর দৃষ্টিতে এটি কেবল একটি রাজনৈতিক ধারণা নয়, বরং ইসলামী চিন্তাধারার একটি মৌলিক নীতি।
নায়িনী মনে করতেন, সরকার এমন এক কাঠামোর উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত যা ইসলামী মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার এবং মানবিক দায়বদ্ধতাকে অগ্রাধিকার দেয়। যদিও তিনি রাষ্ট্রব্যবস্থার নির্দিষ্ট কাঠামো বা প্রশাসনিক রূপ নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দেননি, তবে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “তানবিহুল উম্মাহ”-তে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা করা ফরজের ন্যায় জরুরি দায়িত্ব।
নায়িনীর রাজনৈতিক চিন্তাধারার আরেকটি মূল ভিত্তি হলো “বেলায়াত”-অর্থাৎ নেতৃত্ব বা অভিভাবকত্বের নীতি। তিনি “হুকুমতে বেলায়াতি” (বেলায়াতভিত্তিক সরকার) ধারণাটি উপস্থাপন করেন, যা “ইস্তেবদাদি” বা একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বিপরীতে দাঁড়ায়। তাঁর বিশ্লেষণে, স্বৈরশাসন হলো “মালিকানাভিত্তিক ক্ষমতা”, যেখানে শাসক জনগণের উপর নিজের মালিকানা দাবি করে; কিন্তু ইসলামী শাসনব্যবস্থা হলো “বেলায়াতভিত্তিক নেতৃত্ব”, যেখানে শাসক জনগণের সেবক ও পথপ্রদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মির্জা নায়িনী স্পষ্ট করে বলেন, ইসলামী সরকারের প্রকৃত শক্তি ও মর্মকেন্দ্র হলো বেলায়াত-যা কেবল শাসনের কাঠামো নয়, বরং এক নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দায়বদ্ধতা। এই ধারণা ইসলামী সমাজে নেতৃত্বের অর্থ, দায়িত্ব ও সীমারেখা নির্ধারণে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
আল্লামা নায়িনীর এই চিন্তাধারা আজও ইসলামী রাজনৈতিক দর্শন ও ন্যায়ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা নিয়ে আলোচনায় এক অম্লান দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হয়।
আপনার কমেন্ট