হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলাম আগমনের আগে নবী করিম হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ধর্ম কী ছিল—এ প্রশ্নটি বহুদিন ধরেই গবেষক ও সাধারণ মানুষের মনে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। কারণ ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, নবী (সা.) ছিলেন মানবজাতির শেষ নবী, আর তাঁর পূর্বে ছিলেন হযরত ঈসা (আ.), যাঁরও নিজস্ব শরিয়ত বা ধর্মীয় বিধান ছিল।
তাহলে প্রশ্ন জাগে—ইসলাম আসার আগে নবী করিম (সা.) ও তাঁর পূর্বপুরুষগণ কি খ্রিষ্টান ছিলেন?
ধর্মবিদদের ব্যাখ্যায়, বিষয়টি তার চেয়ে অনেক গভীর। ইতিহাস ও কুরআনের আলোকে দেখা যায়, হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সময় থেকেই “ইসলাম” নামের একটি সার্বজনীন ধর্মের মূলনীতি পৃথিবীতে ছিল। ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী ছিলেন এবং মূর্তিপূজা থেকে বিরত থাকতেন। তাঁর এই ধর্মীয় আদর্শকেই বলা হতো “দীন হানিফ”—অর্থাৎ একত্ববাদে অবিচল ধর্ম।
ইসলামি ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নবী করিম (সা.)-এর পূর্বপুরুষগণও এই ইব্রাহিমীয় হানিফ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। তাঁরা খ্রিষ্টান বা ইহুদি ছিলেন না; বরং আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী, মূর্তিবিমুখ এক ধর্মচর্চার ধারক ছিলেন।
কুরআনের সূরা আলে ইমরানে বলা হয়েছে:
“মিল্লাতা আবিকুম ইব্রাহিম, হুয়া সাম্মাকুমুল মুসলিমীন”
অর্থাৎ—“তোমাদের পিতা ইব্রাহিমের ধর্ম অনুসরণ করো, তিনিই তোমাদের মুসলিম নাম দিয়েছেন।”
আরও বলা হয়েছে (সূরা বাকারা, ২:১৩৫):
“বলুন, বরং আমি ইব্রাহিমের ধর্ম অনুসরণ করি, যিনি ছিলেন হানিফ ও মুসলিম।”
ধর্মবিশারদদের মতে, নবী মুহাম্মদ (সা.) ইসলাম প্রচারের আগেই অন্তরে সেই একই সত্য ধর্ম—ইব্রাহিমীয় একত্ববাদ বা হানিফ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। তাঁর নবুয়তপ্রাপ্তির পর সেই ধর্মই পূর্ণাঙ্গ আকারে প্রকাশ পায় এবং “ইসলাম” নামে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত হয়।
তাত্ত্বিকভাবে বলা যায়, নবী করিম (সা.)-এর ইসলাম-পূর্ব ধর্ম ছিল আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী “দীন হানিফ”—যা হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এরই ধর্ম এবং ইসলামের প্রাচীনতম রূপ।
আপনার কমেন্ট