হাওজা নিউজ এজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন সাইয়্যেদ হোসেন মোমেনী হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা.আ.)-এর পবিত্র মাজারের রাত্রিকালীন প্রার্থনা সভায় বলেছেন, “আত্মা দেহে আল্লাহর আমানত। যদি মানুষের দেহ থেকে আত্মা সরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে মানুষ লাশে পরিণত হবে এবং এর কোনো মূল্য থাকবে না।”
তিনি উল্লেখ করেছেন, “কিছু লোক আত্মার চেয়ে বুদ্ধিকে অধিক গুরুত্ব দেয়, আবার কিছু লোক আত্মার পাশাপাশি বুদ্ধিকে সমান গুরুত্ব দেয়। বুদ্ধি হলো বাহ্যিক বিষয় গ্রহণের স্থান, আর হৃদয় হলো আধ্যাত্মিক বিষয় গ্রহণের স্থান। ধর্মীয় শিক্ষায় এর যত্ন নেওয়ার উপর ব্যাপক জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ বুদ্ধির প্রতি মনোযোগ না দেওয়া মানুষকে পথভ্রষ্ট করে, তাকে খারাপ পরিণতির দিকে নিয়ে যায়, হৃদয় কঠোর করে এবং আধ্যাত্মিক, ঐশ্বরিক ও প্রভু সম্পর্কিত আলো গ্রহণে বাধা দেয়।”
হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা.আ.)-এর পবিত্র মাজারের বক্তা সূরা আল ইমরানের শেষ আয়াতগুলোর অংশ উল্লেখ করে বলেছেন, “মহান আল্লাহ আমাদের মধ্যে আত্মা স্থাপন করেছেন। বুদ্ধি ও হৃদয় উভয়েরই গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই আমাদের বুদ্ধি ও হৃদয়ের সৈন্যবাহিনীর প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত। কারণ যদি এই দুটির গ্রহণযোগ্যতা উপযুক্ত না হয়, তাহলে হৃদয় ও বুদ্ধির প্রকাশও উপযুক্ত হবে না।”
তিনি আরও বলেছেন, “হৃদয় কঠোর ব্যক্তির বোঝার ক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু কিছু মরিচা এবং গুনাহের প্রভাবের কারণে এটি তার মধ্যে বাস্তবায়িত হয় না এবং বোধগম্যতার কার্যকরিতা লক্ষ্য করা যায় না। কখনও কখনও মানুষের হৃদয় সম্পূর্ণরূপে দুনিয়ার দিকে মনোনিবেশ করে। দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা সমস্ত সম্পদকে দুনিয়ার সুখ, আরাম ও শান্তি অর্জনের দিকে নিয়ে যায়। এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো, এমন ব্যক্তি পৃথিবীর সমস্ত সুখ ভোগ করলেও অভ্যন্তরীণ শূন্যতার কারণে সে কখনও প্রশান্তি, মর্যাদা এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি লাভ করবে না।”
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন মোমেনী উদ্বেগ, চাপ এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাকে দুনিয়াপ্রেমীদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “(আখিরাতের জন্য) দুনিয়া ভোগ করা খারাপ তো নয় ই, বরং তা ভালো। যা খারাপ তা হলো দুনিয়ার প্রতি মোহ তৈরি করা!”
তিনি উল্লেখ করেছেন, “আরেক দল মানুষ রয়েছে, যারা তাদের সমস্ত হৃদয়কে জান্নাতের উচ্চ স্তরে পৌঁছানোর জন্য নিবেদিত করে এবং দুনিয়ার সমস্ত কাজকে আখিরাতের উচ্চ স্তরে পৌঁছানোর জন্য করে। এমন ব্যস্ততা সম্পন্ন হৃদয়ের মর্যাদা রয়েছে। যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাজ করে এবং তার সমস্ত কাজ আল্লাহর জন্য করে, আল্লাহ তাকে উচ্চ মর্যাদা দেন।”
আপনার কমেন্ট