হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ জাওয়াদী আমুলী তাঁর এক দারসে আখলাক তথা নৈতিক শিক্ষার ক্লাসে “বর্তমান ও বিদ্যমান কিয়ামত” বিষয়ে আলোচনা করেন, যা এখানে আপনাদের জন্য উপস্থাপন করা হলো!
নবী করীম হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, “জাহান্নাম ও জান্নাত তোমাদের জুতার ফিতার চেয়েও নিকটবর্তী।”
এতই কাছে! মানুষ যখন তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে, তখনই বুঝতে পারে সে কোথায় রয়েছে।
তার দেহের এখনও গোসল হয়নি, অথচ সে জানে সে কোথায়।
এটাই প্রমাণ করে যে এটি নগদ (বর্তমান ও বিদ্যমান), দূরবর্তী ভবিষ্যতের জন্য নয়।
জান্নাত নগদ (বিদ্যমান), জাহান্নামও তাই!
তিনি বলেছেন, এটি তোমাদের জুতার ফিতার চেয়েও নিকটবর্তী। এটি দূরবর্তী ভবিষ্যতের জন্য নয়।
কুরআনের বর্ণনাও এমন নয় যে, “আমরা কিয়ামত সৃষ্টি করব”—না, কিয়ামত এখনই বিদ্যমান।
সেদিন তা প্রকাশ পাবে।
আল্লাহ বলেন: يَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ
(যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে)।
السَّاعَةُ—অর্থাৎ কিয়ামত এখানেই রয়েছে। এটি এখনই বিদ্যমান।
কিন্তু যেদিন হিসাব-নিকাশের দিন, সেদিন বলা হবে এই “সায়া (সময়) জাগ্রত হবে।
- সেদিন মানুষ তাদের প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে!
يَوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
- সাক্ষীরা দাঁড়াবে
يَوْمَ يَقُومُ الْأَشْهَادُ
- রূহ (জিবরাঈল) ও ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে
يَوْمَ يَقُومُ الرُّوحُ وَالْمَلَائِكَةُ صَفًّا
- সেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে
يَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ
সুতরাং, এটি কিয়ামত এখনই বিদ্যমান আছে। শুধু সেদিন এটি প্রকাশ পাবে। অতএব, জান্নাত ও জাহান্নাম নগদ অর্থাৎ বর্তমানেই বিদ্যমান।
যদি তা নগদ হয়, তাহলে কেউ বলতে পারবে না, “আমি চুপিচুপি (অন্যায় কোনো চুক্তি) সই করেছি, কাউকে বলো না!” বা “তুমি তো আমাদের বন্ধু, এই ট্যাক্সটা একটু কম করে দাও!”
মানুষকে খুবই অজ্ঞ ও বোধহীন হতে হবে যে বলবে, “কাউকে বলো না!”
এর মানে কী?! কাউকে বলো না?! কিয়ামতের মাঠে দাঁড়িয়ে এটা বলার সুযোগ আছে? নাকি সে বিচার শুরু পর্যন্ত অপেক্ষা করছে?
সূত্র: দারসে আখলাক তথা নৈতিক শিক্ষার ক্লাস, ১৪ ই শাহরিভার, ১৩৮১ (২০০২ সাল)
আপনার কমেন্ট