হাওজা নিউজ এজেন্সি: রাসূলুল্লাহ (সা.) এবং ইমামগণ (আ.) সর্বদা মুসলিম ঐক্য রক্ষায় সচেষ্ট ছিলেন। ইমামগণ নিজেদের অধিকার থেকে ওয়াকফা থাকলেও উম্মাহর ঐক্যের জন্য তা পরিহার করেছেন। তবে নানান ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিভেদের বীজ রোপিত হয়।
বিভেদের কারণসমূহ:
১. গোত্রীয় সংকীর্ণতা ও দলীয় মনোভাব: কুরাইশ গোত্রগুলোর মধ্যে বনি হাশেমের প্রতি ঈর্ষা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা (রাসূল (সা.)-এর গোত্র হওয়ায়) বিভেদ সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে।
২. ধর্মীয় বিষয়ের গভীর উপলব্ধির অভাব: দ্রুত ইসলাম গ্রহণকারী বিভিন্ন সংস্কৃতির লোকেরা ধর্মের সূক্ষ্মতা বুঝতে ব্যর্থ হয়। রাসূল (সা.) বলেছেন, "কেউ কেউ কুরআন তিলাওয়াত করবে কিন্তু ধর্মীয় জ্ঞানে তীরের মতো লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে।"
৩. হাদীস সংকলন ও চর্চার নিষেধাজ্ঞা: প্রথম তিন খলিফার আমলে হাদীস লিপিবদ্ধ করতে বাধা দেওয়ায়:
- বহু হাদীস বিলুপ্ত হয়।
- জাল হাদীসের প্রসার ঘটে।
- স্মৃতিভিত্তিক বর্ণনায় ভিন্নতা দেখা দেয়।
- আহলে বাইত (আ.)-কে প্রান্তিক করা হয়।
৪. শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র: ক্ষমতায় থাকা স্বৈরাচারী শাসকরা প্রলোভন, ভীতি ও মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে মূল ইসলাম থেকে দূরে রাখে এবং বিভেদ উসকে দেয়।
৫. মুনাফিকদের উপস্থিতি: যারা স্বার্থে ইসলাম গ্রহণ করলেও গোপনে ষড়যন্ত্র চালায়। কুরআনে মুনাফিকদের সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে (সূরা বাকারা: ৮-১৬; সূরা তাওবা: ১০১)।
বর্তমান দায়িত্ব: বর্তমানে মুসলমানদের কর্তব্য হলো তাওহিদ, কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং শত্রুদের মোকাবিলায় শক্তি সঞ্চয় করা।
অধ্যয়নের জন্য সুপারিশকৃত বই:
১. শবে পিশাওয়ার (সুলতানুল ওয়ায়েজীন শিরাজী)
২. নাখশে ইমামান দার ইহইয়ে দ্বীন (আল্লামা সৈয়দ মুর্তাজা আসকারী)
৩. মানাকেবে খাওয়ারেযমী (খতিব খাওয়ারেযমী, অনুবাদ: সৈয়দ আবুল হাসান হাকিকি)
তথ্যসূত্র:
[১] কুরআন: আল-আনআম ১৫২, আল-ইমরান ১০৩, আল-হুজুরাত ১০, আল-আনফাল ৬৩
[২] ইবনে হাম্বল, মুসলিম, কানযুল উম্মাল প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থ
[৩] ইবনে কাসীর, কানযুল উম্মাল
[৪] সূরা বাকারা ও তাওবার আয়াত
উৎস: হাওজা স্টাডিজ অ্যান্ড রেসপন্স সেন্টার
আপনার কমেন্ট