সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫ - ১২:৪৩
ইসলামী বিপ্লব হচ্ছে কোম-এর হাওজা ইলমিয়ার প্রভাব ও আশীর্বাদের চূড়ান্ত ফল

হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলেমিন মোল্লানুরি বলেছেন, ইসলামী বিপ্লব হচ্ছে কোম-এর হাওজা ইলমিয়ার প্রভাব ও আশীর্বাদের চূড়ান্ত ফল।" তিনি বলেন, "একজন ইমাম খোমেনি (রহ.)-র মতো ব্যক্তিত্বকে গড়ে তোলা, যিনি একটি বিশাল বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপন ও নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন, তা-ই কোম-এর হওজা ইলমিয়ার সফলতার জ্বলন্ত প্রমাণ।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলাম ও মুসলেমিন হোসেইন মোলানুরি, যিনি ধর্মীয় বিদ্যাপীঠসমূহের প্রচার ও গবেষণা কমপ্লেক্সের প্রধান, তিনি আয়াতুল্লাহ হাজ শেখ আব্দুল করিম হায়েরি ইয়াজদির (রহ.) হাত ধরে কোম-এর হওজা ইলমিয়ার পুনঃপ্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে হওজার প্রচারমূলক অর্জনসমূহের ব্যাপক পর্যালোচনা করেন।

তিনি বলেন, আমাদের প্রথমে জানতে হবে, হায়েরি (রহ.)-র আগমনের পূর্বে কোম-এর হওজা কোন অবস্থায় ছিল এবং তার পর কীভাবে তা ধাপে ধাপে বিকশিত হয়েছে। এর পাশাপাশি আমি হওজার প্রচারমূলক কার্যক্রমের বিকাশ নিয়ে আলোচনা করব।

কোম-এর হাওজা ইলমিয়ায় ধর্মীয় প্রচারের বিকাশ

হুজ্জাতুল ইসলাম মোল্লানুরি বলেন, ১৩০১ হিজরি (১৯২২ খ্রিঃ)-তে হায়েরি (রহ.)-র হাতে কোম-এর হওজা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। তার সময় থেকেই সংগঠিতভাবে ধর্ম প্রচার শুরু হয়। তিনি নিজে তার বাসা ও ফয়যিয়া মাদ্রাসায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন এবং শাইখ আব্বাস কোমি-র মতো বক্তাদের আমন্ত্রণ জানাতেন।

তিনি আরও বলেন, তিনি ধর্মীয় বই রচনায় উৎসাহ প্রদান এবং প্রচারকদের বিভিন্ন শহরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। রাজনীতি ও ধর্মপ্রচারের সমন্বয়ে তিনি এক বিপ্লবী ধারা সৃষ্টি করেন।

আন্তর্জাতিক মুবাল্লেগ (প্রচারক) তৈরির চেষ্টাও করেছিলেন হায়েরি (রহ.)

হুজ্জাতুল ইসলাম মোলানুরি বলেন, হায়েরি (রহ.) আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ধর্ম প্রচারের প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের ভাষাশিক্ষার পরিকল্পনা করেন, যদিও তখনকার সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতার কারণে তা সফল হয়নি। কিন্তু আজ তার সেই প্রচেষ্টার কারণে বিশ্বের বহু প্রান্তে মুবাল্লেগ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে।

হাওজার কার্যক্রম দেশের সীমা ছাড়িয়ে প্রসার লাভ করেছে

তিনি বলেন, মারাজেয়ে সালাস (তিন শীর্ষ আলেম) — আয়াতুল্লাহ খোয়ানসারি, আয়াতুল্লাহ সাদর, ও আয়াতুল্লাহ হোজ্জাত — বিশেষত আয়াতুল্লাহ বোরুজের্দি (রহ.)-র আমলে প্রচারমূলক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। হামবুর্গ ইসলামী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, শহরাঞ্চলে মুবাল্লেগ পাঠানো, স্থায়ী আলেম নিয়োগ, এমনকি মিশরের আল-আযহারসহ বিভিন্ন মাযহাবের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, ছিল সেই সময়ের অন্যতম অর্জন।

ইমাম খোমেনি (রহ.)-র মতো ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলা কোম-এর হওজার আশীর্বাদ

তিনি বলেন, ইমাম খোমেনি (রহ.)-র মতো নেতৃত্ব তৈরি হওয়া কোম-এর হওজার সবচেয়ে বড় সফলতা। তিনিই ইসলামী বিপ্লবের সূচনা ও নেতৃত্ব দিয়েছেন।

ইসলামী বিপ্লব: কোম-এর হাওজার আশীর্বাদের চূড়ান্ত ফসল

মোল্লানুরি বলেন, ইসলামী বিপ্লবের পর হাওজার প্রচারমূলক কাজ যেমন পরিমাণে, তেমনি গুণগত দিক থেকেও অভূতপূর্বভাবে বৃদ্ধি পায়। হওজা ব্যবস্থাপনা, ইসলামিক প্রচার অফিস, ইসলামিক সংস্কৃতি ও যোগাযোগ সংস্থা প্রতিষ্ঠার ফলে ধর্ম প্রচারের জন্য সংগঠিত পরিকল্পনা সম্ভব হয়েছে।

শেষে তিনি বলেন, বিশেষায়িত বিভাগ খোলা, বিশেষজ্ঞ বই রচনা, ম্যাগাজিন প্রকাশনা, মিডিয়া ব্যবহারের পাশাপাশি হাজার হাজার প্রশিক্ষিত মুবাল্লেগ গড়ে তোলাও এই শতবর্ষী প্রচেষ্টার ফল। এই সমস্ত অর্জন, শহিদদের রক্ত এবং সর্বোচ্চ নেতার দিকনির্দেশনার কারণে আজ কোম-এর হাওজা আরও গতিশীল ও সমৃদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha