সোমবার ১২ মে ২০২৫ - ১৬:৩৯
ধর্মীয় ছাত্রদের উচিত তাদের ঐতিহাসিক অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থাকা

আস্তানে কুদসে রাজাভীর মুতাওয়াল্লি হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন আহমাদ মার্ভী আজ সকালে বিরজান্দের মহিলা হাওযার ছাত্রীদের এক সমাবেশে বলেন, “তালাবাদের (ধর্মীয় ছাত্রদের) উচিত নিজেদের ঐতিহাসিক অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থাকা।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আজকের যুগে কেবল স্লোগানের মাধ্যমে নয়, বরং গভীর জ্ঞান, দায়িত্ববোধ ও বিশ্লেষণী সক্ষমতার সাথে অবশ্যই ওয়ালিয়ে ফাকিহ’র পেছনে চলতে হবে।”

তিনি বলেন, ইসলামের সূচনালগ্নের ইতিহাস থেকে আমরা যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পাই, তা হলো—ইমামের পেছনে পিছিয়ে পড়া এবং ইমামের থেকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষতিকর পরিণতি।

তিনি ইমাম হুসাইন (আ.)-এর প্রতি প্রাথমিকভাবে অনুপস্থিত থেকেও পরে অনুতপ্ত হয়ে যাঁরা ফিরে এসেছিলেন তাঁদের ‘তওয়াবিন’ হিসেবে অভিহিত করেন, এবং খারেজিদের উদাহরণ টেনে বলেন, যারা আমিরুল মু’মিনীন (আ.)-এর ওপরই তলোয়ার তুলেছিল।

সঠিক অবস্থান—ইমামের অনুসরণে থাকা

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা যেন না পিছিয়ে পড়ি, কিংবা না এগিয়ে যাই। আমাদের কর্তব্য হলো ওয়ালিয়ে ফাকিহ'র পেছনে চলা—না আগে, না পিছনে।”

তিনি যোগ করেন, “যে কোনো কথা, বিশ্লেষণ বা স্লোগান—তা ওয়ালিয়ে ফাকিহ তথা রাহবারের মানদণ্ডে যাচাই করতে হবে। এই মানদণ্ড ছাড়া পথচলা মানে হবে বা তো বিভ্রান্তি, নয়তো পশ্চাদপসরণ—যা উভয়ই বিপজ্জনক।”

সাম্প্রতিক রাহবারের বক্তব্যের তাৎপর্য

তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতার (আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী) সাম্প্রতিক এক ব্যতিক্রমধর্মী বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “ইমাম সাদিক (আ.)-এর শাহাদাত উপলক্ষে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী মাহফিলে তিনি প্রচলনের বাইরে গিয়ে বক্তৃতা করেছেন। এর মানে, রাহবারের ভেতরে এমন কিছু উদ্বেগ রয়েছে যা অবিলম্বে জাতির কাছে পৌঁছানো প্রয়োজন।”

তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, “এই সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর বক্তব্যগুলো ভালোভাবে অধ্যয়ন, বিশ্লেষণ এবং আলোচনার মাধ্যমে বোঝা উচিত। কারণ বিশ্লেষণ যদি পড়াশোনাহীন ও ভিত্তিহীন হয়, তা হবে বিভ্রান্তিকর। হাওযা হচ্ছে এমন মানুষ গড়ার স্থান যারা সময়চেতনা ও বিশ্লেষণী ক্ষমতায় পারদর্শী।”

যুগচেতনা ছাড়া নেতৃত্ব নয়

তিনি বলেন, “ছাত্রদের অবশ্যই নিজেদের সময়ের বাস্তবতা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যদি যুগচেতনার অভাব থাকে, তাহলে আমরা অতীত প্রজন্মের মতো ঐতিহাসিক সুযোগ হাতছাড়া করব। তাই সঠিক সময়জ্ঞান ও দিকনির্দেশনার সাথে ওয়ালিয়ে ফাকিহ’র পেছনে অটলভাবে চলতে হবে।”

শেষে তিনি বলেন, “রাহবারের বক্তব্যসমূহ মুসলিম উম্মাহর জন্য একপ্রকার পথনির্দেশিকা। বিশেষ করে ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে, যেমন ইমামদের শাহাদাত দিবস ইত্যাদিতে প্রদত্ত বক্তব্যগুলো বিশ্লেষণ ও সমাজে প্রচারের জন্য ছাত্রদের দায়িত্ব অপরিহার্য।”

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha