বুধবার ৯ জুলাই ২০২৫ - ১৫:২০
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বের শীর্ষ আলেম ও মুফতিদের সর্বাত্মক সমর্থন ঘোষণা

ইসলামি দেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় আলেম, মুফতি, চিন্তাবিদ ও কর্মকর্তারা পবিত্র কুরআন, রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ, সুপ্রতিষ্ঠিত ফিকহি নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ভিত্তিতে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর বিচার দাবি করেছেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইসলামি দেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় আলেম, মুফতি, চিন্তাবিদ ও কর্মকর্তারা এক যৌথ বিবৃতিতে এই আহবান জানিয়েছেন।

বিবৃতিটি নিম্নরূপ:

بسم الله الرحمن الرحیم
الحمدلله رب العالمین و الصلاة و السلام علی سیدنا محمد و آله الطاهرین و صحبه المنتجبین، و بعد...

আমরা, ইসলামি দেশগুলোর শীর্ষ আলেম, মুফতি, চিন্তাবিদ ও দায়িত্বশীলরা, দৃঢ় ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ঘোষণা করছি:

১. ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুকে “মুহারিব” ও “পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টিকারী” হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা ও তাদের বিচার দাবি
আল-মায়িদা ৩৩ আয়াতের আলোকে বলা হয়: “যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পৃথিবীতে ফ্যাসাদ ছড়াতে চায়, তাদের শাস্তি হচ্ছে—হত্যা, কিংবা শূলবিদ্ধ করা...”

এই ভিত্তিতে ট্রাম্প, নেতানিয়াহু ও দখলদার ইহুদি রাষ্ট্রের নেতারা—
ইসলামি ভূমি দখল, ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা, রক্তপাত ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে— আল্লাহ ও রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত মুহারিব এবং ফ্যাসাদ ছড়ানোকারীদের অন্তর্ভুক্ত। তাদের আন্তর্জাতিক ও ইসলামি আদালতে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

২. আয়াতুল্লাহিল উজমা ইমাম খামেনেয়ীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন
তিনি মুসলিম উম্মাহর জাগরণের নেতা এবং ইসলামি মর্যাদার পতাকাবাহী।

তার নেতৃত্বে মুসলিম উম্মাহ সম্মান, প্রতিরোধ ও ঐক্যের পথ ধরেছে। আমরা তাঁকে একজন বৈধ, যোগ্য, প্রজ্ঞাবান নেতা হিসেবে সমর্থন করি, যিনি উম্মাহর পক্ষে কথা বলেন ও তাদের রক্ষা করেন।

৩. ইসরায়েল ও আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণকে শরীয়ত ও আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ ঘোষণা
শরীয়তের সুপ্রতিষ্ঠিত নীতিমালা অনুযায়ী, বিশেষত “শত্রু কাফেরদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সমঝোতার নিষেধাজ্ঞা”-এর আলোকে— ইসরায়েল ও আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ, অংশীদারিত্ব ও সমঝোতা শরিয়ত বিরোধী, মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারের সরাসরি লঙ্ঘন।

৪. মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান এবং ইহুদি ও সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ
আজ উম্মাহ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ঐক্য, চিন্তাগত ও রাজনৈতিক সংহতির বেশি প্রয়োজন।

আমরা সকল মুসলিম, আলেম ও চিন্তাবিদদের আহ্বান জানাই— একসঙ্গে হয়ে আমেরিকা, ইসরায়েল ও তাদের সহযোগীদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সম্মিলিত ফ্রন্ট গড়ে তুলুন।

৫. ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধ জয়ের স্বীকৃতি
ইরান যে ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলকে পরাজিত করেছে— তা ইসলামী প্রতিরোধ শক্তির ঈমান, সাহস, প্রজ্ঞাবান নেতৃত্ব এবং ঐক্যের এক উজ্জ্বল নিদর্শন।

এই বিজয় সামরিক, রাজনৈতিক, মিডিয়া, মনস্তাত্ত্বিক এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একগুঁয়ে সাম্রাজ্যবাদী ফ্রন্টের জন্য ভয়াবহ পরাজয় এবং প্রমাণ করে যে, আমেরিকা ও ইসরায়েলের দখলদারিত্বের যুগ শেষ হয়ে গেছে।

৬. ইসরায়েলি অপরাধীদের আন্তর্জাতিক বিচার দাবি
আমরা স্বাধীন আন্তর্জাতিক আদালত গঠনের দাবি জানাই,
যাতে ট্রাম্প, নেতানিয়াহু এবং দখলদার ইসরায়েলি নেতৃত্ব ও তাদের মিত্রদের মানবতার বিরুদ্ধে করা অপরাধের বিচার হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও আদালতসমূহকে আহ্বান জানাই—
এই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন।

৭. ফিলিস্তিন ও বায়তুল মুকাদ্দাসের আদর্শে মুসলিম উম্মাহর পুনরায় আনুগত্য ঘোষণা
ফিলিস্তিন ইস্যু এবং বায়তুল মুকাদ্দাস এখনো মুসলিম উম্মাহর প্রধান অগ্রাধিকার। এই পবিত্র ভূমির পূর্ণ স্বাধীনতা ও ইহুদি ক্যানসারের ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধের বৈধ সংগ্রাম চলবে।

وَما النصر إلا من عند الله العزیز الحکیم
“আর সাহায্য তো শুধুই আল্লাহর পক্ষ থেকে, যিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha