শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫ - ১৬:৩২
সিরিয়ায় শিয়া আলেমদের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানালেন আয়াতুল্লাহ আরাফি

সিরিয়ায় শিয়া আলেমদের হত্যাকান্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তীব্র নিন্দা ও দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের হাওজা ইলমিয়ার পরিচালক আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আরাফি। তিনি বলেন, সিরিয়ায় শিয়া আলেমদের হত্যা মানবতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের চরম লঙ্ঘন, এবং জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে এটি গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ আলী রেজা আরাফির উক্ত বিবৃতির পূর্ণাঙ্গ বাংলায় অনুবাদ দেওয়া হলো:

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
গভীর দুঃখ ও বেদনার সাথে জানাচ্ছি যে, আবারও তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক শোষণ ও বৈশ্বিক জায়নবাদী শক্তির মদদপুষ্ট চরমপন্থীদের রক্তাক্ত হাতে সিরিয়ায় এক ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এতে দেশটির প্রখ্যাত, জ্ঞানী ও গুণী শিয়া আলেমদের একটি দল নির্মমভাবে শহীদ হয়েছেন।


এই হৃদয়বিদারক ঘটনা কেবল মানবিক, ধর্মীয় ও মানবাধিকার সংক্রান্ত সব নীতিমালার সরাসরি লঙ্ঘন নয়; বরং এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, আমাদের অঞ্চলে সহিংসতা ও বিভেদের ধর্মীয়ীকরণ একটি বিপজ্জনক প্রকল্প হিসেবে এখনো অব্যাহত রয়েছে।

আমরা এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং স্পষ্টভাবে বলছি—নমানবাধিকারের দাবিদার আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নীরবতা এই ধরনের ধারাবাহিক অপরাধকে উৎসাহিত করছে, যার ফলে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা, সহিংসতা এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।

আমি আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের—বিশেষ করে জাতিসংঘ, মানবাধিকার পরিষদ, মানবাধিকার বিষয়ক উচ্চ কমিশনার, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা ও মুসলিম আলেমদের ইউনিয়নের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাই, যেন:

১. এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং এর সরাসরি দায়ী ব্যক্তিবর্গ ও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়;

২. একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে সিরিয়ায় ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত এসব অপরাধ চিহ্নিত ও প্রমাণসহ নথিভুক্ত করা হয়;

৩. আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষত মানবাধিকার, মানবিক আইন এবং আন্তর্জাতিক ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার আওতায় দোষীদের বিচারের সম্মুখীন করা হয়।

ধর্মীয় আলেমগণ হলেন জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও শান্তির ধারক। তাদের ওপর আঘাত মানব সভ্যতার শিকড় ও বৈশ্বিক মানব ঐতিহ্যের ওপর আঘাতের শামিল।

পরিশেষে, আমি মজলুম শহীদদের পরিবার, সিরিয়ার জনগণ ও সরকার এবং সকল সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থাকা ব্যক্তিদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।

আমি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি—ইসলামি বিশ্বের ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রসমূহ (হাওযা), আমাদের অঞ্চলের প্রতিরোধী জনগণের পাশে থেকে সত্য, ইনসাফ, উম্মাহর ঐক্য এবং সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অটল থাকবে।

وَ سَیعلَمُ الَّذینَ ظَلَموا أیَّ مُنقَلَبٍ یَنقَلِبُونَ
আর শিগগিরই জুলুমকারীরা জানতে পারবে, কোন পরিণতির মুখোমুখি তারা হবে। [সূরা আশ-শোআরা, আয়াত ২২৭]

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha