মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫ - ১৮:১০
‘গালির জবাবে গালি দেয়া’ সম্পর্কিত শরিয়তের বিধান

ইসলামে গালাগালিকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করা এবং গালির জবাবে যথাসম্ভব নিরুত্তর থাকতে উৎসাহিত করা হলেও- ক্ষেত্র বিশেষ ‘আত্মরক্ষামূলক প্রতিরোধ’ হিসেবে গালির জবাবে সমপরিমাণ গালি দেয়ার অনুমতি আছে!

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ‘গালির জবাব দেয়া’ সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন, যা এখানে আগ্রহী পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো:

প্রশ্ন: কেউ কাউকে গালি দিলে সেও কি একই গালি দিয়ে জবাব দিতে পারবে? এতে কোনো সমস্যা আছে কি? 

উত্তর:গালির জবাবে গালি দেওয়া (প্রতিশোধ হিসেবে) দুটি শর্ত সাপেক্ষে জায়েয: 

প্রথম শর্ত: একই ধরনের গালি বা সমতুল্য গালি দিতে হবে, এর চেয়ে বেশি বা কঠিন গালি দেওয়া যাবে না। 

দ্বিতীয় শর্ত: এতে অন্য কোনো হারাম কাজ সংঘটিত না হয় (যেমন মিথ্যা বলা, গীবত করা ইত্যাদি)। 

[অর্থাৎ, ইসলামে গালির জবাবে গালি দেওয়া নিষিদ্ধ নয়, তবে তা সীমিত ও নিয়ন্ত্রিতভাবে হতে হবে, যাতে তা অন্য কোনো হারাম কাজে পরিণত না হয়।]

প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা:
জাফরি ফিকহে গালির জবাব দেয়ার বিষয়টি ‘প্রতিরোধমূলক আত্মরক্ষা’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এখানে কয়েকটি মূলনীতি প্রণিধানযোগ্য:

১. প্রতিশোধের সীমাবদ্ধতা:

     - ইমাম সাদিক (আ.)-এর একটি হাদিসে এসেছে “যদি কেউ তোমাকে গালি দেয়, তুমি তার সমতুল্য জবাব দিতে পার, কিন্তু সীমা অতিক্রম করো না!”

(ওয়াসায়েলুশ-শিয়া, খণ্ড- ১২)।


  - এখানে “সমতুল্য” বলতে শব্দের মাত্রা ও প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া হয়। উদাহরণ: কেউ কাউকে ইতর বললে- সে আত্মরক্ষার জন্য জবাবে বলতে পারে যে, আমি নই, তুমিই ইতর!

২. নৈতিক দায়িত্ব:

   - জাফরি মাজহাবে ‘সবর তথা ধৈর্য’কে প্রাধান্য দেওয়া হলেও, মর্যাদা রক্ষার জন্য প্রয়োজনবোধে জবাব দেয়াকে মাকরুহ নয় বরং জায়েয বলা হয়েছে (শারহে লুমআত, শাহিদ্ আউয়াল)।

৩. হারামের সীমারেখা: 

- ইমাম আলী (আ.)-এর বাণী অনুযায়ী,

“গালির জবাবে মিথ্যা, গীবত বা অশ্লীলতা যোগ করলে তা হারামে পরিণত হয়!”

[নাহজুল বালাগা, খুতবা- ৩৪]

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha