বুধবার ৯ জুলাই ২০২৫ - ০৬:২৬
ডিজিটাল যুগে প্রজন্ম গঠনে মুসলিম নারীর করণীয়

তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে শিশুর বেড়ে ওঠা ও মূল্যবোধ গঠনে পরিবারের ভূমিকা ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে একজন মা—যিনি সন্তানের প্রথম শিক্ষিকা ও জীবনের পথপ্রদর্শক—তাঁর আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ধরন সন্তানের মানসিকতা ও চিন্তাধারায় সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। তাই আজকের মুসলিম নারীকে শুধুই সন্তান লালনের ভূমিকা নয়, বরং মিডিয়া ও প্রযুক্তির ঝড়ো স্রোতে এক দক্ষ নাবিক হিসেবেও গড়ে তুলতে হবে নিজেকে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নারীর দায়িত্ব নিয়ে ইসলামি বিপ্লবের দর্শনে প্রোথিত 'তৃতীয় মডেলের নারী' ধারণা উপস্থাপন করেছেন হাওযা শিক্ষার্থী মেহরি খিমে কাবুদ।

‘মুসলিম নারীর তৃতীয় মডেল’ এবং ‘ডিজিটাল যুগে সন্তানের মিডিয়া-ভিত্তিক শিক্ষা’—এই দুটি বিষয় আজকের সময়ের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাগত আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই মডেলের নারীকে ‘ইসলামী বিপ্লবের মানসম্পন্ন নারী’ বলা হয়। এই ধারণাটি তিনটি মূল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে:
(১) ইসলামের মৌলিক আদর্শের প্রতি দৃঢ়তা,
(২) পরিবার ও সমাজে দায়িত্বশীল ভূমিকা,
(৩) এবং প্রযুক্তিনির্ভর নতুন পরিসরে—বিশেষত মিডিয়া জগতে—সচেতন ও কার্যকর উপস্থিতি।

তিনি আরও বলেন, এই মডেলের একজন মুসলিম মা না নিঃসঙ্গ ও নিষ্ক্রিয়, না ফ্যাশনসর্বস্ব আধুনিকতার ভেতর ডুবে থাকা একজন নারী; বরং তিনি হলেন এমন একজন সচেতন নারী, যিনি নৈতিক ও ধর্মীয় সীমারেখা বজায় রেখে, বুদ্ধিমত্তা ও সক্রিয়তার সঙ্গে গণমাধ্যমের অঙ্গনে উপস্থিত থাকেন। এই বহুমাত্রিক উপস্থিতিই সন্তানের মিডিয়া-ভিত্তিক গঠনপ্রক্রিয়ায় গভীর প্রভাব ফেলে।

একজন মায়ের এ দায়িত্বকে কয়েকটি প্রধান দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে:

ব্যবহারিক রোল মডেল গঠন
জনাবা মেহরি কাবুদ বলেন, মা-বাবার মিডিয়া ব্যবহারে ব্যবহারিক রোল মডেল হয়ে ওঠা ডিজিটাল যুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক শিক্ষার নীতি। এই বিষয়টি শুধু মুখের উপদেশ নয়; বরং এটি আচরণের ভাষা—যা সন্তান সরাসরি দেখে শেখে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু ও কিশোররা শোনার আগেই দেখে শেখে। তারা মা-বাবার আচরণ থেকেই বাস্তব শিক্ষা নেয়, যতটা না উপদেশ থেকে নিয়ে থাকে।

তিনি বলেন— ভাবুন তো, এমন এক মা যিনি সর্বক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ার মেসেজ চেক করতে ব্যস্ত— তা খাবারের সময় হোক বা পারিবারিক একান্ত সময়—তখন তিনি কীভাবে সন্তানকে বলবেন, “মোবাইলে বেশি সময় দিও না”?

এই আচরণগত বৈপরীত্য শুধু অনুপ্রেরণাহীনই করে তোলে না, বরং সন্তানের দৃষ্টিতে মা-বাবার কথার উপর আস্থাও নষ্ট করে।

জনাবা খিমে কাবুদ বলেন— একজন মা চাইলে ঘরে ‘মিডিয়ামুক্ত সময়’ নির্ধারণ করে একটি ইতিবাচক উদাহরণ স্থাপন করতে পারেন। যেমন— খাবারের সময়, পারিবারিক সময়, অথবা ঘুমানোর পূর্ববর্তী সময়।

এই সময়গুলোতে সব ডিভাইস একটি নির্দিষ্ট ঝুড়িতে রাখা যেতে পারে এবং আন্তরিক কথোপকথনে পরিবারকে উৎসাহ দেওয়া যেতে পারে।

তাই কার্যকর মিডিয়া-শিক্ষার জন্য কথাবার্তা ও আচরণের মধ্যে সমন্বয় থাকা আবশ্যক।

একজন সচেতন মুসলিম মা যদি এই নীতিগুলো মেনে চলেন, তাহলে তিনি বক্তৃতা বা আদেশ-নিষেধ ছাড়াই ঘরের মধ্যেই এক বাস্তবধর্মী 'মিডিয়া শিক্ষার বিদ্যালয়' গড়ে তুলতে পারেন।

তিনি ইমাম আলী (আ.)-এর এই কথাটি স্মরণ করিয়ে দেন, “যে নিজেকে নেতা মনে করে, সে যেন আগে নিজেকে গড়ার দিকে মন দেয়, তারপর অন্যকে শিক্ষা দেয়।”

এই মূলনীতি ডিজিটাল যুগে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ ও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

লক্ষ্যমুখী সচেতনতা বৃদ্ধি
জনাবা কাবুদ উল্লেখ করেন— আজকের যুগে মায়েদের উচিত আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করে সন্তানদের মিডিয়া-সংকুল পথে সচেতন ও সহানুভূতিশীল পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করা।

এই সচেতনতার মধ্যে রয়েছে— সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঠিক ও গভীর জ্ঞান, নিরাপত্তা সেটিংসের বোঝাপড়া এবং প্যারেন্টাল কন্ট্রোল-সুবিধার কার্যকর ব্যবহার।

যেমন ধরুন— একজন মা যদি Family Link ব্যবহার করে সন্তানের ট্যাবলেট ব্যবহারের সময় নিয়ন্ত্রণ করেন, কিংবা ইনস্টাগ্রামে প্রাইভেসি সেটিংস শেখানোর মাধ্যমে সন্তানকে নিরাপদ ভার্চুয়াল আচরণ শেখান, তাহলে তিনি কার্যত তথ্য-ঝড়ের যুগে একটি দিশারী বাতিঘরের ভূমিকা পালন করেন।

তিনি আরও বলেন— কার্যকর সচেতনতা তখনই গড়ে ওঠে, যখন মা বিপদের সম্মুখীন হওয়ার আগেই সন্তানের বয়স ও মানসিক পরিপক্বতার উপযোগী ভাষায় তাকে শেখান—
🔹 কিভাবে ভুয়া খবর চিনতে হয়,
?? গোপন বিজ্ঞাপন শনাক্ত করতে হয়,
🔹 এবং অনুপযুক্ত কনটেন্ট থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হয়।

এ ধরনের মা শুধুমাত্র একজন সচেতন ভোক্তা নন; বরং তিনি মিডিয়া-সাক্ষরতা বিষয়ক কর্মশালায় অংশগ্রহণ ও বিশ্বস্ত উৎসের নিয়মিত অনুসরণ করে নিজের জ্ঞানকে সর্বদা হালনাগাদ রাখেন।

ফলে তিনি হয়ে উঠেন একজন সচেতন পরামর্শদাতা, যিনি সন্তানদের এই অশান্ত ও বিভ্রান্তিকর ডিজিটাল সমুদ্রে একদিকে পথ দেখান, অন্যদিকে শেখান—কীভাবে এই পরিসরের সুযোগকে কাজে লাগাতে হয় এবং কীভাবে এর ঝুঁকি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হয়।

সমালোচনামূলক চিন্তার বিকাশ
জনাবা খিমে কাবুদ বলেন— মায়েরা চাইলে কৌশলগত ও বুদ্ধিদীপ্ত পন্থায় সন্তানের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাশক্তি গড়ে তুলতে পারেন। সরাসরি আদেশ-নিষেধ দেওয়ার বদলে যদি তারা প্রশ্নভিত্তিক সংলাপে সন্তানের চিন্তার দরজা খোলেন, তবে তা হবে অনেক কার্যকর। যেমন—
🔹 “এই বিজ্ঞাপনটি এমন ছবি কেন ব্যবহার করেছে?”
🔹 “এই খবরের সত্যতা প্রমাণে কী ধরনের তথ্য রয়েছে?”

এভাবে শিশুর বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বিকশিত হয়।

তিনি বলেন— কিছু বাস্তবভিত্তিক কৌশল যেমন:

🔹একটি সংবাদ বিভিন্ন উৎসে যাচাই করে দেখা, শিক্ষামূলক খেলা—যেমন “ভুয়া খবর চেনার প্রতিযোগিতা”,

🔹সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট যৌথভাবে বিশ্লেষণ করা—যেমন “কেন একটি নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগ ব্যবহার হয়েছে”,

🔹অনলাইন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির কাল্পনিক দৃশ্যপট তৈরি করে তা নিয়ে আলোচনা,

শুধুই কনটেন্ট ভোগ না করে নিজে উপকারী কনটেন্ট তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া— এই সবই শিশুদের সমালোচনামূলক ও সৃজনশীল মনন তৈরিতে অত্যন্ত কার্যকর।

উদাহরণস্বরূপ, যখন সন্তান কোনো চেইন-মেসেজের (এই মেসেজ ১০ জনকে পাঠালে... কিংবা অনৈতিক ভিডিও/ক্লিপ) মুখোমুখি হয়, মা জিজ্ঞেস করতে পারেন—
🔸 “এই বার্তাটি কে পাঠিয়েছে?”
🔸 “এটা কি কখনো সত্যিই কারও উপকারে এসেছে?”
এ ধরনের প্রশ্ন শিশুকে চিন্তা করতে শেখায় এবং অন্ধ অনুসরণ থেকে বিরত রাখে।

তিনি যোগ করেন— এইরকম সংলাপভিত্তিক পদ্ধতি শিশুর যুক্তিশক্তি ও আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং তাকে ডিজিটাল যুগের জীবন-দক্ষতা আয়ত্তে নিতে সহায়তা করে।

তিনি ইমাম আলী (আ.)-এর বিখ্যাত বাণী স্মরণ করিয়ে দেন— “তোমাদের সন্তানদেরকে তোমার নিজের যুগের আচার-আচরণে সীমাবদ্ধ কোরো না, কারণ তারা এমন এক সময়ের জন্য সৃষ্টি, যা তোমাদের সময় থেকে ভিন্ন।”

এই হাদিস আমাদের শেখায়—শিশুদের শিক্ষায় নমনীয়তা, প্রজ্ঞা ও যুগোপযোগী দৃষ্টিভঙ্গি থাকা অপরিহার্য।

বিকল্প ও গঠনমূলক পরিবেশ তৈরির প্রয়াস
জনাবা কাবুদ বলেন— মায়েরা চাইলে আকর্ষণীয় ও সৃজনশীল একটি বিকল্প পরিবেশ গড়ে তুলে সন্তানদের স্বাভাবিকভাবে অনুপযুক্ত ও ক্ষতিকর মিডিয়া কনটেন্ট থেকে দূরে রাখতে পারেন। কেবল নিষেধ আরোপে সীমাবদ্ধ না থেকে, বিনোদন ও শিক্ষার সমন্বয়ে গঠিত কার্যকর উপায় গ্রহণ করাই বেশি ফলপ্রসূ।

তিনি বলেন—
🔹 পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে বইপাঠ প্রতিযোগিতা আয়োজন,
🔹 ঘরোয়া শিল্প ও হস্তশিল্প কর্মশালা,
🔹 দলবদ্ধভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক খেলা আয়োজন—
এই সব উদ্যোগ ঘরের পরিবেশকে প্রাণবন্ত করে তোলে এবং শিশুদের মনোযোগ অর্থবহ কাজে উৎসর্গ করতে সহায়তা করে।

তিনি আরও বলেন— শিশুদের জন্য আধুনিক ও উপযোগী শেখার অ্যাপ্লিকেশনও হতে পারে এক বাস্তব বিকল্প। যেমন—

- শিশুদের জন্য প্রযোজ্য কোডিং শেখার প্রোগ্রাম,

- অথবা আকর্ষণীয় বৈজ্ঞানিক ও শিক্ষামূলক অ্যাপ,

যেগুলো সহিংস ও সময়নষ্টকারী গেমের বদলে সৃজনশীল বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে।

তিনি সন্তানদের কেবল মিডিয়ার ভোক্তা না রেখে সচেতন ও সক্রিয় কনটেন্ট নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল তুলে ধরেন, যেমন—

- স্কুলের প্রজেক্ট নিয়ে ব্লগ লেখা,

- শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করা,

- অথবা ইতিবাচক চ্যালেঞ্জে অংশ নেওয়া—যেমন "বইপাঠ চ্যালেঞ্জ" ইত্যাদি।

তিনি বলেন— যখন একজন মা নিজেই সুস্থ ও সচেতন মিডিয়া ব্যবহার-এর জীবন্ত উদাহরণ হয়ে ওঠেন—যেমন জ্ঞানভিত্তিক চ্যানেল অনুসরণ করা কিংবা পারিবারিক বাস্তব অভিজ্ঞতা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা—তখন সন্তান অনায়াসেই শিখে যায়, মিডিয়াও হতে পারে এক উন্নয়নমূলক হাতিয়ার।

তিনি বিষয়টি এক সুন্দর উপমার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন—
যেমন, একজন মালী যদি বাগানে রঙিন ও সুগন্ধি ফুলের চারা রোপণ করেন, তাহলে আগাছা স্বভাবতই দূর হয়ে যায়; ঠিক তেমনই, যদি ঘর ও অনলাইন জগতে একটি ‍সজীব, গঠনমূলক ও আনন্দময় পরিবেশ গড়ে তোলা যায়, তবে সন্তানরাও স্বাভাবিকভাবে ক্ষতিকর ও অনুপযুক্ত কনটেন্ট থেকে দূরে থাকবে। এটাই হল তাদের সুরক্ষায় সবচেয়ে কার্যকর ও টেকসই উপায়।

পরিচর্যা ও বিশ্বাসের ভারসাম্য
জনাবা খিমে কাবুদ বলেন, আজকের যুগের বুদ্ধিদীপ্ত মা‌য়েরা সন্তানদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়ায় একটি নিরাপদ ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে পারেন, যদি তাঁরা পরিচর্যা ও বিশ্বাস—এই দুইয়ের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় রক্ষা করেন।

তিনি বলেন— শুধু কড়া নিয়ন্ত্রণ বা ভয়ভীতির পরিবেশ নয়, বরং সন্তানের সঙ্গে ধাপে ধাপে গড়ে ওঠা বিশ্বাসভিত্তিক সম্পর্কই এখানে কার্যকর। যেমন, গোপনে নজরদারি অ্যাপ ইন্সটল না করে সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলুন— “এই অ্যাপটা আমরা একসঙ্গে ইনস্টল করব, যেন তুমি শেখো কীভাবে সময় সঠিকভাবে ব্যয় করতে হয়— যেমনটা তুমি যখন সাইকেল চালাতে শিখছিলে, তখন আমি পাশে ছিলাম।”

ভুল হলে শাস্তির ভয় না দেখিয়ে শেখার সুযোগ তৈরি করুন— “চলো দেখি কীভাবে এই বিজ্ঞাপনটা তোমাকে প্রতারিত করল। পরেরবার কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবে এটা ফাঁদ?”

পরিষ্কার ও নমনীয় নিয়ম নির্ধারণ করুন, যেমন— “তুমি ১৪ বছর বয়সে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারো, তবে প্রথমে আমাদের একসঙ্গে এর নিরাপত্তা নিয়মগুলো শিখে নিতে হবে।”

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ— সন্তানকে এমন আত্মবিশ্বাস দিন যেন সে জানে, “যদি কখনো ভার্চুয়াল জগতে কোনো সমস্যায় পড়ো, ভয়ের কিছু নেই—নির্দ্বিধায় আমার সঙ্গে কথা বলো, যেমন তুমি একবার পার্কে একজন অপরিচিত লোককে দেখে আমার কাছে ছুটে এসেছিলে।”

এই আস্থা ও সংলাপনির্ভর পদ্ধতি সন্তানের মধ্যে ধীরে ধীরে এমন আত্মনিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ববোধ গড়ে তোলে, যা তাকে বাবা-মার অনুপস্থিতিতেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে।

তিনি আরও বলেন— সুস্থ ও সচেতন মিডিয়া-ব্যবহার কেবল একজন মায়ের একক দায়িত্ব নয়, বরং পুরো পরিবারের সম্মিলিত প্রয়াসেই তা সম্ভব।

মা, যিনি পরিবারে হৃদয়ের কেন্দ্রবিন্দু, তিনি বাবা ও অন্য অভিভাবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে ঘরে এমন একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সচেতন পরিবেশ তৈরি করতে পারেন, যা সন্তানকে ডিজিটাল দুনিয়ার সুযোগ কাজে লাগাতেও সহায়তা করবে, আর তার ঝুঁকি ও ক্ষতি থেকেও রক্ষা করবে।

এটাই মুসলিম মায়ের আজকের যুগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব—একটি এমন প্রজন্ম গড়ে তোলা, যারা হবে ধর্মবিশ্বাসী, বিশ্ববোধসম্পন্ন এবং মিডিয়া-সচেতন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha