শনিবার ১৭ মে ২০২৫ - ১৪:১৪
শিক্ষকের একটি উপযুক্ত ও প্রাণবন্ত চিত্র উপস্থাপনে গণমাধ্যমে কাজ করা উচিত

ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আজ এক সমাবেশে শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষকদের একটি উপযুক্ত, আকর্ষণীয়, প্রাণবন্ত ও প্রিয়মুখ হিসেবে চিত্রিত করার জন্য গণমাধ্যম ও শিল্পকলার মাধ্যমে কাজ করা আবশ্যক।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্য
আজ শনিবার, ২৭ ইয়ারদিবেহেশত ১৪০৪ (১৭ মে ২০২৫) ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শিক্ষকদের সঙ্গে হোসেইনিয়ায় সাক্ষাৎ করেন।

শিক্ষা নিয়ে রাষ্ট্রপতির আন্তরিক মনোযোগের প্রশংসা

নেতা বলেন: আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত যে, এই সময়ে বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমি বহুবার বলেছি, আমরা যতই শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করি, তা আসলে একটি ভবিষ্যৎ মুনাফার বিনিয়োগ, খরচ নয়।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি সাহেব এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি বিশ্বাসী। শিক্ষামন্ত্রীও একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশাসক, যিনি শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সুপরিচিত। এটি একটি সুযোগ, এবং আমাদের উচিত এই সুযোগকে কাজে লাগানো।

শিক্ষককে আকর্ষণীয় ও গর্বিতভাবে উপস্থাপনে মিডিয়া ও শিল্পকর্ম জরুরি

নেতা বলেন: শিক্ষক যেন জনগণের চোখে একটি সুন্দর, প্রাণবন্ত, প্রিয় মুখ হয়ে ওঠে। যেন কোনো তরুণ যদি একটি পেশার তালিকা দেখে, তখন শিক্ষককে সে শেষ পছন্দ না করে। আজ অনেক সময় দেখা যায়, শিক্ষকতা আকর্ষণীয় না থাকায় কেউ সেটিকে বেছে নিতে চায় না, যতক্ষণ না বাধ্য হয়। আমাদের উচিত এই প্রবণতাকে বদলে ফেলা।
তিনি বলেন: আমাদের উচিত শিক্ষককে এমনভাবে তুলে ধরা, যাতে মানুষ একজন শিক্ষককে সক্রিয়, পরিশ্রমী, সাফল্যবান, গর্বিত ও সম্মানিত একজন মানুষ হিসেবে দেখুক।

তিনি জোর দিয়ে বলেন: এটা শুধু উপদেশে সম্ভব নয়, এর জন্য গণমাধ্যম ও শিল্পের প্রয়োজন। যেমন শহীদদের নিয়ে আমরা বই লিখি, ফিল্ম বানাই, যেগুলো মানুষের হৃদয়ে ভালোবাসা সৃষ্টি করে—তেমনি শিক্ষকদের জীবন, আচরণ, অভিজ্ঞতা নিয়ে গল্প বা উপন্যাস বানানো উচিত, যেন পাঠক তা পড়ে একজন শিক্ষককে ভালোবাসতে শেখে।
তিনি আরও বলেন: অ্যানিমেশন, সিনেমা, সিরিজ—এ রকম বহু মিডিয়া কাজ করতে হবে। এটি রাষ্ট্র, গণমাধ্যম, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর দায়িত্ব। তবে এগুলোর নেতৃত্ব দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করা অর্থহীন

নেতা বলেন: শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, এবং ইসলামি সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তরুণ ও কিশোর প্রজন্মকে অন্তত মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত জ্ঞান, দক্ষতা ও নৈতিকতা দিয়ে গড়ে তোলা।
তিনি বলেন: কখনো কখনো কিছু মহলে এমন চিন্তা ওঠে যে, শিক্ষা ব্যবস্থার কিছু অংশকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হোক—এটি ভুল, কারণ এর ফলে শিক্ষায় বিচ্ছিন্নতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

পাঠ্যবইয়ের আঙ্গিক ও নান্দনিকতাও উন্নত হওয়া জরুরি

বিপ্লবী নেতা বলেন: শিক্ষা ও পাঠ্যবই—এই দুটি মূল উপাদান। পাঠ্যবই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি বহুবার এ বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি বৈঠকে পরামর্শ দিয়েছি।
তিনি বলেন: কোনো একটি ইসলামি মনীষীর নাম বা কয়েকটি নথি যুক্ত করা যথেষ্ট নয়। বিষয়বস্তু ও কাঠামো এমন হওয়া উচিত, যা শিক্ষার্থীদের গঠন করে, আকর্ষণ করে।

তিনি বলেন: প্রথমত, পাঠ্যবই আকর্ষণীয় হতে হবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের কাছে বইগুলো আনন্দদায়ক মনে হয় না। অথচ জটিল বিষয়ে সহজ, আকর্ষণীয় ভাষা ব্যবহার করে শিক্ষণীয় উপস্থাপন সম্ভব।

তিনি আরও বলেন: পাঠ্যবইয়ের বাহ্যিক রূপ, কাঠামো, নকশাও সৌন্দর্যবোধ ও সৃজনশীলতার সঙ্গে হওয়া উচিত। বর্তমান বইগুলোর চেহারা তেমন নয়, যা শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha