হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার সকালে ইরানি নৌবাহিনীর ৮৬তম নৌবহরের প্রত্যাবর্তনের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের এই বিশ্বাস-"আমরা অন্যদের উপর নির্ভর না করে আমাদের প্রয়োজনীয়তা নিজেরাই পূরণ করতে পারি"-অত্যন্ত সম্মানজনক।
মাসউদ পেজেশকিয়ান মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক বিবৃতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ইরানি জাতি সম্পর্কে ট্রাম্প যা বলেছেন, কেউ তা বিশ্বাস করে না। একদিকে তিনি শান্তির কথা বলেন, অন্যদিকে মানুষের হত্যার জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দেন। তিনি একইসাথে শান্তি ও রক্তপাতের বার্তা দেন-একে অপরের বিরোধী।
প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা আলোচনায় আছি। কিন্তু আমরা হুমকিতে ভয় পাই না এবং আমাদের আইনগত অধিকার থেকে কখনোই পিছু হটবো না।
তিনি আরও বলেন, সায়োনিস্ট শাসকগোষ্ঠী যেভাবে ৬০ হাজার নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করছে এবং নারী-শিশুদের খাবার ও পানির যোগান বন্ধ করেছে — এই ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তথাকথিত মানবাধিকার রক্ষাকারীদের নীরবতা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই অপরাধের পরও কীভাবে শান্তির কথা বলা যায়? আমরা গণহত্যা ও নিরপরাধ মানুষের হত্যার মধ্যে দিয়ে কখনোই শান্তি ও মানবাধিকারের বার্তা দিতে পারি না।
তিনি হেগ আন্তর্জাতিক আদালতের বয়কটের বিষয়টিও উল্লেখ করেন, যেখানে নেতানিয়াহুকে বিচারের আওতায় আনার চেষ্টাকে অপরাধীরা এবং তথাকথিত গণতন্ত্র রক্ষাকারীরা বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, তারা চায় আন্তর্জাতিক আদালত তাদের মানদণ্ড অনুযায়ী রায় দিক!
প্রেসিডেন্ট বলেন, যেকোনো মর্যাদাশীল স্বাধীন মানুষ এই ধরনের আচরণের সামনে নতিস্বীকার করবে না। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমাদের দেশকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না।
পেজেশকিয়ান বলেন, আমরা আমাদের অবিচ্ছেদ্য অধিকার থেকে হুমকির কারণে কখনোই পিছু হটবো না। আমাদের সামরিক, বৈজ্ঞানিক, শিক্ষাগত এবং পারমাণবিক সাফল্যের প্রশ্নে আমরা কোনো আপস করবো না।
তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের বিজ্ঞানীদের সন্ত্রাসের লক্ষ্যবস্তু বানায় এবং পরে আমাদেরই সন্ত্রাসী বলে দোষারোপ করে! অথচ প্রকৃতপক্ষে আমরাই সন্ত্রাসবাদের শিকার।
মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানকে এই অঞ্চলের নিরাপত্তাহীনতার কারণ বলে দাবি করায় প্রেসিডেন্ট বলেন, তাদের দৃষ্টিতে আমরাই সমস্যা, কারণ আমরা তাদের দাদাগিরির সামনে মাথা নত করি না। বরং আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি।
তার বক্তব্যের শেষে, প্রেসিডেন্ট ইরানের সশস্ত্র বাহিনী, সেনা, আইআরজিসি (IRGC) এবং বাসিজ বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের প্রশংসা করেন এবং বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সবসময় জনগণের সহায়তায় প্রস্তুত থাকে।
আপনার কমেন্ট