হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৫ মে দীর্ঘ ১৮ বছরের ইসরাইলী জবরদখল থেকে দক্ষিণ লেবানন মুক্ত করণ দিবস মুবারক। ২০০০ সালের ২৫ মে লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিযবুল্লাহ যার গোড়াপত্তন হয়েছিল ১৯৮২ সালে জেনারেল এরিয়েল শ্যারনের নেতৃত্বে ইসরাইলী হানাদার বাহিনী দক্ষিণ লেবানন জবরদখল করে বৈরূতে পৌছে গেলে ইসরাইলী জবরদখল থেকে লেবাননকে মুক্ত করার লক্ষ্যে। স্মর্তব্য যে ১৯৮২ সালেই ইসরাইলী সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে ইসরাইলের এজেন্টরা নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ফিলিস্তিনীদের সাবরা ও শাতিলা উদ্বাস্তু শিবিরে ২০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনী শরণার্থীকে শহীদ করেছিল যাদের অধিকাংশ ছিল নারী ও শিশু।
এরপর দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে হিযবুল্লাহ ইসরাইলী হানাদার দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রাম ও জিহাদে লিপ্ত হয় এবং বহু শহীদের রক্তের বিনিময়ে এবং শত শত ইসরাইলী সৈন্যকে হত্যা করে হিযবুল্লাহর মুজাহিদ মুক্তি যোদ্ধারা ইসরাইলকে দক্ষিণ লেবানন থেকে বিতাড়িত করতে সক্ষম হয় এবং ইসরাইল নি:শর্ত ভাবে সৈন্য প্রত্যাহার করে দক্ষিণ লেবানন থেকে পশ্চাদপসরণ করে। এটা ছিল দীর্ঘ ৫২ বছরের আরব-ইসরাইল বিরোধ, যুদ্ধ ও সংঘাতের ইতিহাসে
ইসরাইলের ওপর প্রথম আরব বিজয় এবং প্রথম বারের মত ইসরাইলের নি:শর্ত সৈন্য প্রত্যাহার ও পশ্চাদপসরণ। আর এ বিজয় অর্জিত হয় হিযবুল্লাহ আন্দোলনের ৩য় সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায়। স্মর্তব্য যে হিযবুল্লাহর ১ম সেক্রেটারি জেনারেল হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন শেখ রাঘেব হার্ব্ ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং ২য় সেক্রেটারি জেনারেল হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন সাইয়েদ আব্বাস মূসাভীও ১৯৯২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ইসরাইলের বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলায় শাহাদাত বরণ করেছিলেন। হিযবুল্লাহ,হামাস, জিহাদে ইসলামী এবং ইয়ামানের হুথি আনসারুল্লাহর সকল প্রধান ও সেক্রেটারি জেনারেল শাহাদাত বরণ করেছেন। কিন্তু এই সব প্রতিরোধ সংগ্রাম ও আন্দোলন নিজেদের প্রধান ও সেক্রেটারি জেনারেলদের শাহাদাত বরণের কারণে ধ্বংস হয় নি বরং প্রতিবার প্রধান নেতা বা সেক্রেটারি জেনারেলের শাহাদাতের পর আরো অধিক প্রাণশক্তি ও জযবা (উদ্দীপনা) নিয়ে ময়দানে উপস্থিত হয়ে শত্রুদের পরাজিত করেছে।আমরা এ বাস্তবতা বারংবার প্রত্যক্ষ করেছি। আর গত এক বছরে হামাস, হিযবুল্লাহ তাদের প্রধান ও সেক্রেটারি জেনারেলদের হারিয়ে কখনো দুর্বল হবে না বরং আরো বেশি প্রাণশক্তি নিয়ে যায়নবাদী দখলদার হানাদার আগ্রাসী অপরাধী ইসরাইলের ক্ষতি সাধন করতে থাকবে। আসলে এত কিছুর পর ইসরাইল নামক মেকি রাষ্ট্রটি আর টিকে থাকতে পারবে না যার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন স্বয়ং ইসলামী বিপ্লবের মহান নেতা আয়াতুল্লাহ আল-উযমা ইমাম খামেনেয়ী এবং সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির রূপকার ও স্থপতি যায়নবাদী ইহুদী ড: হেনরি কিসিঞ্জার।
আবারো ২৫ মে ইসরাইলী দখলদারিত্ব থেকে দক্ষিণ লেবাননের মুক্ত হওয়ার দিবস মুবারক। এ দিবসটি লেবাননের জনগণের কাছে ঈদুল ইন্তিসার ( বিজয়ের ঈদ ও উৎসব) হিসেবে প্রসিদ্ধ।
রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
আপনার কমেন্ট