হাওজা নিউজ এজেন্সি: পবিত্র আহলে বাইতের (আ.) নবম প্রতিনিধি ইমাম জাওয়াদ আলাইহিস সালাম বলেছেন,
مَوْتُ الاْنْسانِ بِالذُّنُوبِ أکْثَرُ مِنْ مَوْتِهِ بِالاْجَلِ
গুনাহের কারণে মানুষের মৃত্যু তার স্বাভাবিক আয়ু শেষ হয়ে মৃত্যুর চেয়ে বেশি ঘটে। [অর্থাৎ মানুষের পাপের কারণে তার মৃত্যু স্বাভাবিক আয়ুর পূর্বেই সংগঠিত হয় এবং এই মৃত্যুর সংখ্যা স্বাভাবিক মৃত্যুর তুলনায় অধিক!]
[কাশফুল গুম্মাহ, খণ্ড- ২, পৃষ্ঠা- ৩৫০ ]
প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা ও শিক্ষা:
১. ইমামতের দৃষ্টিতে গুনাহের পরিণতি: শিয়া আকিদা অনুযায়ী, ইমামগণ (আ.) হলেন আল্লাহর নির্দেশিত হেদায়েতের মিনার। তাদের অনুসরণ চূড়ান্ত মুক্তির সোপান। তাদের মতে, গুনাহ কেবল আখেরাতেই নয়, দুনিয়াতেও ধ্বংস ডেকে আনে। এই হাদিস প্রমাণ করে যে, পাপ মানুষের আয়ু কমিয়ে দেয় এবং অকালমৃত্যু ঘটায়।
২. আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব: আহলে বাইত (আ.) এর শিক্ষা হলো—গুনাহ থেকে তওবার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে হবে। ইমাম জাওয়াদ (আ.) এর এই বাণী স্মরণ করিয়ে দেয় যে, পাপমুক্ত জীবনই দীর্ঘ ও বরকতময় জীবনের চাবিকাঠি।
৩. সমাজের প্রতি দায়িত্ব: শিয়া মাজহাব সামষ্টিক দায়িত্বের উপর জোর দেয়। যদি সমাজে গুনাহ বৃদ্ধি পায় (যেমন: জুলুম, অসততা, হারাম কাজ), তবে তা সমষ্টিগত বিপর্যয় ডেকে আনে—যা ব্যক্তির অকালমৃত্যুর চেয়েও ভয়াবহ।
৪. আহলে বাইতের সুপারিশ লাভের শর্ত: মাজহাবে আহলে বাইতের (আ.) হাদিসে এসেছে, গুনাহ ইমামদের (আ.) শাফায়াত পাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে। তাই, গুনাহ পরিহার করে ইমামদের আদর্শে জীবন গঠন করতে হবে।
মূল বার্তা: এই হাদিস আমাদের সতর্ক করে যে, গুনাহ শুধু আধ্যাত্মিক ক্ষতি করে না—এটি আমাদের দুনিয়াবি জীবনও ধ্বংস করে দেয়। আহলে বাইত (আ.) এর পথ অনুসরণ করেই কেবল আমরা এই ধ্বংস থেকে রক্ষা পেতে পারি।
আপনার কমেন্ট