হাওজা নিউজ এজেন্সি: সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি সকলেই ট্রাম্পকে সতর্ক করেছেন যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হলে তাদের দেশগুলো ইরানের কাছ থেকে পাল্টা হামলার শিকার হতে পারে। উল্লেখ্য, এই তিন দেশেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি অবস্থিত।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আমির শেখ তামিম ট্রাম্পকে স্পষ্টভাবে বলেছেন যে “এমন পরিস্থিতিতে পারস্য উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে”। বিশেষভাবে সৌদি আরব ও কাতার ইসরায়েলের সম্ভাব্য একতরফা সামরিক হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে এই তিন নেতাই ইরানের সাথে নতুন পারমাণবিক চুক্তি প্রণয়নের জন্য ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারি প্রতিনিধিরা এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে টেলিফোন আলোচনায় ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে বুধবার নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পঞ্চম দফা আলোচনা গত শুক্রবার ইতালির রাজধানী রোমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইরান পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি, আর মার্কিন পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন বিশেষ দূত ব্রায়ান হুক।
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত মে মাসে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন যে “ইসরায়েল এককভাবে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করতে সক্ষম নয়”। তিনি বলেন, “ইসরায়েল শুধুমাত্র ইরানের পারমাণবিক সুবিধাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে পারে না। এমন পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলকে ভয়াবহ সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে”।
ইরানি সামরিক কর্মকর্তারা ইসরায়েলের হুমকিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ মেজর জেনারেল আবদুলরহিম মুসাভি ২৬ মে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী যদি আরেকটি ভুল পদক্ষেপ নেয়, ইরান তাৎক্ষণিক ও কঠোর জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত”।
গত বছর ইরান ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস’ নামে দুটি সফল প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে ইরান তার উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েলের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক মহলে ইরানের সামরিক সক্ষমতার নতুন মাত্রা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
আপনার কমেন্ট