হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আরাফি প্রাদেশিক হাওজা পরিচালক ও কেন্দ্রীয় হাওজা প্রশাসনের সহকারী ও পরিচালকদের সম্মেলনে, যা ক্বোমের জামেয়াতে আল-মুস্তাফা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়, তিনি বলেন:
তিনি পাঁচ হাজার শহীদ আলেম ও শহীদদের ইমামের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং পবিত্র জিলহজ্জ মাসের আগমনের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন: আমরা আল্লাহর কাছে এই সম্মানিত ও মহিমান্বিত মাস থেকে উপকার লাভের জন্য তৌফিক কামনা করি।
তিনি উল্লেখ করেন, এই মাসে ‘দহে-ই বেলায়াত’ (নেতৃত্বের দশক) আল্লাহর অশেষ অনুগ্রহে পরিপূর্ণ এবং এটি রমজান মাসের সমতুল্য, বরং বছরের উচ্চতম আত্মিক শিখরসমূহের একটি, যেখানে মানুষ অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি আল্লাহর বরকত লাভের জন্য প্রস্তুত থাকে।
দেশের হাওজা ইলমিয়ার পরিচালক বলেন, শূরা পরিষদের সদস্য, সহকারী ও প্রাদেশিক পরিচালকরা হাওজার উন্নয়নে অনেক পরিশ্রম করেছেন, এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা আমাদের দায়িত্ব।
হাওজা ইলমিয়ার শূরা পরিষদের সদস্য বলেন, প্রতিটি প্রদেশের কিছু অভিন্ন এবং কিছু বিশেষ সমস্যা রয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বর্তমান সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী যত কাজই করা হোক না কেন, সমালোচনার সুযোগ থাকবেই। সুতরাং, আমাদের বিদ্যমান সম্পদ ও অর্জনের পাশাপাশি ঘাটতি ও প্রয়োজনীয়তার দিকেও যথেষ্ট মনোযোগ দিতে হবে।
আয়াতুল্লাহ আরাফি নাহজুল বালাগা এবং ‘মনশুরে রুহানিয়াত’-এর (আলেমদের চার্টার) কয়েকটি অংশ পাঠ করে স্পষ্ট করে বলেন: আমিরুল মুমিনিন (আ.)-এর খুতবা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে হাওজা ইলমিয়া সবসময় নতুন পন্থা ও রীতিনীতির অধিকারী হওয়া উচিত, এবং এই পথে অটল থাকা ও দৃঢ়তা অবলম্বন করাই নবুয়তের পথ।
দেশের হাওজা ইলমিয়ার পরিচালক বলেন, নবী করিম (সা.) নিজের কাজে দ্রুততার সঙ্গে অগ্রসর হতেন এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, নবী কখনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজকে সময়ের বাইরে বিলম্বিত বা উপেক্ষা করতেন না।
তিনি বলেন, একটি শক্ত হৃদয় এবং দৃঢ় পদক্ষেপ—এই দুটো ছিল আল্লাহর রাসুলের দায়িত্ব পালনের বৈশিষ্ট্য। নবী করিম (সা.) দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে আল্লাহর বিধান সমাজে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটাই সেই মৌলিক নীতিমালা যা হাওজা ইলমিয়া অনুসরণ করবে।
আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন, নবী করিম (সা.)-এর সংগ্রাম এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তিনি ইসলামের পতাকা উড্ডীন করলেন এবং পথনির্দেশ স্থিরভাবে প্রণয়ন করলেন। এই পতাকাই আজ আমাদের হাতে, এবং আমরা তখনই প্রকৃত হাওজাভুক্ত বা আলেম হব, যখন আমরা এই পথেই থাকব এবং এই আলোকিত জীবনের কিছু প্রতিফলন আমাদের জীবনেও দেখা যাবে।
তিনি আরও বলেন, হাওজা ইলমিয়া কোম-এর পুনঃপ্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ নেতার ঐতিহাসিক বার্তার মাধ্যমে আমরা একটি নতুন নীতিমালা লাভ করেছি, যা ভবিষ্যৎ দশকগুলিতে হাওজার দিকনির্দেশনা হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দেশের অন্যান্য প্রদেশ এবং বিদেশেও ধারাবাহিকভাবে হাওজাভুক্তদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা আলেম সমাজের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ ও পরিচয়-নির্মাণকারী ‘আলোক-শৃঙ্খলা’ তৈরি করেছে।
আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন, এই সম্মেলনে প্রায় ১৮টি দেশের অতিথিরাও অংশগ্রহণ করেছেন, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সম্মেলনটি যথাযথভাবে প্রচার পেয়েছে এবং আমরা সচেষ্ট ছিলাম যাতে কোনো ধরনের সেনসিটিভ বা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হয়।
আপনার কমেন্ট