হাওযা নিউজের প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে হোসেইনি গোরগানি বলেন: আয়াতুল্লাহ আল উজমা হায়রি ইয়াযদী (রহ.) হাওযাভিত্তিক শিক্ষায় যে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছেন তা অনস্বীকার্য। তিনি যখন ক্বোমে হিজরত করেন এবং হাওযা পুনর্নির্মাণ করেন, তখন তাঁর হাতে গড়ে ওঠেন ইমাম খোমেইনি (রহ.), আয়াতুল্লাহ গোলপায়েগানি (রহ.) ও আয়াতুল্লাহ আরাকি (রহ.)-এর মতো মহান মনীষীগণ।
তিনি বলেন: মরহুম হায়রি ইয়াযদী (রহ.)-কে সাধারণ মানুষ ও আলেমসমাজ ব্যতিক্রমভাবে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তাঁর শিক্ষাদান ও ছাত্র গড়ে তোলার অনন্য দৃষ্টান্ত ছিল কারবালায় কাটানো তাঁর কয়েক বছর। পরবর্তীতে সমাজের প্রয়োজন ও আলেমদের আহ্বানে তিনি ইরাক থেকে ইরানের আরাকে আসেন। তাঁর আরাক অভিমুখে যাত্রার অন্যতম কারণ ছিল, তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মরহুম আকা মোহসেন আরাকির পুত্র হাজি আকা মোস্তফার কাছ থেকে আরাকের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা। তিনি মক্কাগমনকালে ইরাক হয়ে গিয়েছিলেন এবং সেখানে আরাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। এতে হায়রি ইয়াযদী (রহ.) আরাকে আগ্রহী হন এবং সেখানে চলে আসেন।
কোম হাওযার এই শিক্ষক আরও বলেন: যখন আরাকে হায়রি ইয়াযদী (রহ.)-এর জ্ঞানচর্চার খবর ছড়িয়ে পড়ে, তখন ইমাম খোমেইনি (রহ.)—যিনি তখন খোমেইনে অবস্থান করে ইসফাহানে পড়াশোনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন—এই খবর পেয়ে তাঁর শিক্ষার উদ্দেশ্যে আরাক চলে যান। তাঁর পাশাপাশি আয়াতুল্লাহ আহমদ খোয়ানসারি, আয়াতুল্লাহ মুহাম্মদ আলী আরাকি, আয়াতুল্লাহ গোলপায়েগানি ও আরও অনেক গুণী আলেমও আরাকে গিয়েছিলেন এবং পরে তাঁদের সঙ্গেই ক্বোমে ফিরে এসে ক্বোম হাওযাকে শক্তিশালী করেন।
হোসেইনি গোরগানি আরও বলেন: সে সময় কোমে বহু জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন, যারা উচ্চমানের বিদ্বান হলেও হায়রি ইয়াযদী (রহ.)-এর বৈজ্ঞানিক মর্যাদার সমতুল্য ছিলেন না। কিন্তু তিনি যখন ক্বোমে আসেন, তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে কোনো কার্পণ্য করেননি। যেমন: আয়াতুল্লাহ বা’ফকি, শেখ আবুল কাসেম কবির ও মরহুম ফাইয ক্বোমি তাঁদের মধ্যে অন্যতম, যারা তাঁকে কোমে আনতে আরাক পর্যন্ত গিয়েছিলেন।
তিনি যোগ করেন: যখন হাজি শেখ কোমে হিজরতের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তাঁকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। তবে শুরুতে তিনি স্পষ্ট কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি, বরং বলেছিলেন: “আমি নিশ্চিত হতে চাই যে কোমের মানুষ ও আলেমরা আমার সঙ্গে সহযোগিতা করবেন কি না।” এরপর মরহুম আয়াতুল্লাহ ফাইয কোম্মি, যিনি মসজিদে বালাসারে (হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা.)-এর পবিত্র রওজার পাশে) ইমামতি করতেন, হাজি শেখের সঙ্গে দেখা করেন এবং আলোচনা হয়। অবশেষে এসফান্দ মাসে (১৩৪০ হিজরী) হাজি শেখ আব্দুল করিম কোমে আগমন করেন।
আপনার কমেন্ট