হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ মোহসেন আরাকি “প্রাদেশিক হাওযা ও কেন্দ্রীয় দপ্তরের উপ-পরিচালকদের” সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে (স্থল: জামেআতুল মুস্তাফা, কোম) বলেন: হাওযায়ে ইলমিয়ার শতবার্ষিকী সম্মেলন একটি পরিবর্তন সৃষ্টিকারী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
তিনি বলেন: সর্বোচ্চ নেতার (রহবার) হাওযায়ে ইলমিয়ায় রূপান্তরের উপর জোর দেওয়ার কারণ এই যে, শিয়া হাওযা কখনোই সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না এবং সর্বদা মানুষের প্রয়োজনের উত্তরদাতা ছিল।
তিনি আরও বলেন: শিয়া ওলামারা নবীদের উত্তরসূরি এবং তাদের কাঁধে বিশাল দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের প্রথম দায়িত্ব হলো বিশ্ব ও আমাদের সমাজের ঘটনাবলী নজরদারি করা।
তিনি ব্যাখ্যা করেন: এসব ঘটনা অনেক সময় শয়তানের প্ররোচনায় ঘটে থাকে এবং আমাদের যুদ্ধ মূলত শত্রুদের বিরুদ্ধে—মানুষের বিরুদ্ধে নয়। এই যুদ্ধ আল্লাহর শাসন বনাম শয়তানের শাসনের যুদ্ধ।
আয়াতুল্লাহ আরাকি বলেন: আমরা এই যুদ্ধের সম্মুখসারির সৈনিক। আমরা চেষ্টা করছি যাতে শয়তানের পরিবর্তে আল্লাহর হুকুম কার্যকর হয় এবং এই হুকুমের বাহক হিসেবে হাওযায়ে ইলমিয়া কাজ করছে।
তিনি যোগ করেন: যেমনটি দ্বীন রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়, তেমনি হাওযাও রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।
তিনি বলেন: হাওযার দায়িত্ব হলো আল্লাহর হুকুমকে কায়েম করা এবং তা সমাজে স্থানান্তর করা। ‘আমর বেল মা’রুফ ও নাহি আনিল মুনকার’ শুধুই কথার পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং হাওযার দায়িত্ব হলো আল্লাহর হুকুমের জ্ঞান সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া এবং বাস্তবায়নের পূর্বশর্তগুলো তৈরি করা।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন: আজকের মানব সমাজে যুদ্ধটি আসলে হুকুমের যুদ্ধ। সৃষ্টির জগতে কেউ আল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারে না, তাই এই যুদ্ধ হুকুমের আধিপত্য নিয়ে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন: আমরা এখন এক ভয়াবহ এবং সর্বব্যাপী যুদ্ধে আছি, যার একদিকে আমরাই আছি।
তিনি বলেন: আমাদের উপস্থিতি আসলে আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে। এই সংঘাত কেবল ভৌগোলিক নয় বরং পদ্ধতি, মাত্রা, ও অন্যান্য বিষয়েও সর্বব্যাপী। হাওযাকে অবশ্যই এই নতুন স্তরের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন: এই যুদ্ধে আমাদের মূল অস্ত্র হলো চিন্তা ও ভাষা। তাই আমাদের জ্ঞান এই যুদ্ধের মাত্রা অনুযায়ী বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন: আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি হলো সাংস্কৃতিক ধারা পর্যবেক্ষণ করা। আজ হাওযাগুলোকে জানতে হবে কোন ধারা নবীদের ধারার বিরুদ্ধে অবস্থান করছে এবং সচেতন থাকতে হবে। এই দায়িত্ব শুধু কোমের হাওযার নয়, বরং সব হাওযার।
তিনি বলেন: আজ পশ্চিমা দেশগুলোতে শিশুদের ধর্মবিরোধী মূল্যবোধ দিয়ে শিক্ষাদান একটি মৌলিক নীতি হয়ে উঠেছে। শত্রু এখন তরুণ প্রজন্মের সীমা পেরিয়ে শিশুদের উপর বিনিয়োগ শুরু করেছে।
তিনি বলেন: নবীদের বিপরীত ধারায় শয়তানের প্রধান অস্ত্র হলো সন্দেহ ও বিভ্রান্তি ছড়ানো, কারণ শয়তানের পক্ষে আল্লাহর ও নবীদের ধারাকে বাতিল করা সম্ভব নয়। এই সত্য কুরআনেও স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।
আপনার কমেন্ট