হাওজা নিউজ এজেন্সি: সৌদি আরবের মক্কায় আগামী বুধবার থেকে ইসলাম ধর্মের পবিত্রতম তীর্থযাত্রা হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। গত কয়েক দশকে পদদলনে মৃত্যু থেকে শুরু করে সন্ত্রাসী হামলা—নানা ভয়াবহতায় হজের ইতিহাস ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এই প্রতিবেদনে তারই কয়েকটি ট্র্যাজেডি তুলে ধরছি:
সর্বশেষ বিপর্যয়: তাপদাহে মৃত্যু
২০২৩ সালে, হজ চলাকালে তাপমাত্রা ৫১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবু ও পরিবহন সুবিধা না থাকায় ১,৩০১ হাজি মৃত্যুবরণ করেন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন অনিবন্ধিত।
পদদলনের ভয়াল ইতিহাস
২০১৫ সালে মিনায় ‘শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ’ চলাকালে ভয়াবহ পদদলনে আনুমানিক ২,৩০০ হাজির মৃত্যু হয়। এটিই হজের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
২০০৬ সালে আরেকটি পদদলনে প্রাণ হারান ৩৬৪ জন হাজি।
২০০৪, ১৯৯৮ ও ১৯৯৪ সালে পৃথক পদদলনে মারা যান যথাক্রমে ২৫১, ১১৮ ও ২৭০ জন।
সবচেয়ে ভয়াবহ পদদলনের একটি ঘটে ১৯৯০ সালে, মিনার একটি সুড়ঙ্গে দমবন্ধ ও পিষ্ট হয়ে মারা যান ১,৪২৬ হাজি, বেশিরভাগই ছিলেন এশিয়ার নাগরিক।
অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি
১৯৯৭ সালের ১৫ এপ্রিল, মিনায় একটি শিবিরে গ্যাস চুলার বিস্ফোরণে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ৩৪৩ জন নিহত ও প্রায় ১,৫০০ জন আহত হন।
১৯৭৫ সালে মক্কার কাছে এক শিবিরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মারা যান ২০০ জন হাজি।
সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংসতা
১৯৮৯ সালে গ্র্যান্ড মসজিদের বাইরে বোমা হামলায় ১ জন নিহত ও ১৬ জন আহত হন। হামলার দায়ে ১৬ জন কুয়েতি শিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
১৯৭৯ সালের ২০ নভেম্বর, শত শত সশস্ত্র বিদ্রোহী সৌদি রাজপরিবারের পতন দাবি করে মসজিদ আল-হারামে প্রবেশ করে হাজিদের জিম্মি করে। সরকারি হিসাব মতে, সংঘর্ষে ১৫৩ জন নিহত ও ৫৬০ জন আহত হন।
এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, বিশালসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি, আবহাওয়াজনিত চ্যালেঞ্জ, এবং নিরাপত্তা ঘাটতি হজ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সহায়তা বাড়ালেও, অতীতের এসব ট্র্যাজেডি ইতিহাসে গভীরভাবে ক্ষত রয়ে গেছে।
উৎস: সরকারি প্রতিবেদন, আল-জাজিরা, এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স, সৌদি হজ মন্ত্রণালয় তথ্য।
আপনার কমেন্ট