রবিবার ৬ জুলাই ২০২৫ - ১৯:২০
হুসাইনী বিপ্লবের প্রতি আরব ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নীরব কেন?

ইমাম হুসাইনের (আ.) পথে আত্মত্যাগ ও দানের তাৎপর্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে ইরাকের ধর্মীয় নগরী নাজাফে আশরাফের জুমার ইমাম হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলিমীন সাইয়্যেদ সদরুদ্দিন ক্বাবানচি বলেছেন, “আমরা ইমাম হুসাইনের (আ.) পথে যা কিছু ব্যয় করেছি, তার সুফল নিজের মধ্যেও দেখেছি, দেশেও দেখেছি।” আন্তর্জাতিক ও আরব মিডিয়ার নিরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, হুসাইনী বিপ্লব মানবতার ভবিষ্যৎ রচনা করছে, অথচ প্রচারমাধ্যমগুলো তা উপেক্ষা করছে।

হাওযা নিউজ এজেন্সি: হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলিমীন সাইয়্যেদ সদরুদ্দিন ক্বাবানচি, পবিত্র ফাতেমিয়া হুসাইনিয়া মসজিদে অনুষ্ঠিত জুমার খুতবায় বলেন, “আজকের দিনটি ইরাকের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী। এক অনন্য, অলৌকিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, যা এমনকি শিল্পীর ক্যানভাসেও আঁকা সম্ভব নয়। বিশেষ করে হযরত আবুল ফজল আব্বাস (আ.)-এর দিনে যে বিপুল মিলনমেলা হয়েছে, তা আবেগ, হুসাইনী উদারতা, বিশুদ্ধ অন্তর এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসার এক জ্বলন্ত নিদর্শন।”

তিনি কঠোর ভাষায় বলেন, “আমরা আরব ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর এই মহান হুসাইনী সমাবেশকে উপেক্ষার জন্য তীব্র সমালোচনা করি। এই সমাবেশ এমন এক বিপ্লবের প্রতিচ্ছবি, যা স্বৈরশাসকরা নিঃশেষ করতে চেয়েছিল—কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এটি মানবজাতির ভবিষ্যত নির্ধারণকারী এক আন্দোলন।”

ইমাম হুসাইনের (আ.) পথে দান করার ফজিলত
তিনি ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর একটি হাদিস উল্লেখ করে বলেন, “যে ব্যক্তি ইমাম হুসাইনের (আ.) পথে এক দিরহামও ব্যয় করে, আল্লাহ তাআলা তাকে উহুদ পর্বতের সমপরিমাণ সওয়াব দান করেন, তার ব্যয়ের বহু গুণ বেশি প্রতিদান দেন এবং তার থেকে নেমে আসা বিপদ দূর করে দেন—তার ধন-সম্পদকে হেফাজত করেন ও প্রতিস্থাপনও করেন।”

তিনি বলেন, “যারা এই ব্যয়কে তুচ্ছ মনে করে, আমরা তাদের সমালোচনা করি। আমরা নিজেরাই দেখেছি, ইমাম হুসাইনের (আ.) পথে যা কিছু ব্যয় করেছি, তার সুফল আমাদের সমাজে এবং ব্যক্তিগত জীবনেও প্রতিফলিত হয়েছে।”

কারবালার শিক্ষাসমূহ ও বর্তমানের প্রতিরূপ
তিনি ধর্মীয় খুতবায় আরও বলেন,  “কারবালার মহাকাব্যে ইমাম হুসাইন (আ.) আমাদের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছেন—

১. আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য, যা ঈমানের সর্বোচ্চ স্তর।

২. সব অবস্থায় আল্লাহর দরবারে কান্না ও প্রার্থনা।

৩. আল্লাহর রাহে আত্মত্যাগের চরম দৃষ্টান্ত।

এই শিক্ষাগুলো কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তিনি সেগুলোর বাস্তব প্রয়োগ দেখিয়েছেন কারবালার ময়দানে।”

কারবালার আদর্শেই আজকের শিয়াদের পথচলা
খুতবার শেষাংশে তিনি বলেন, “আজকের যুগে আহলুল বায়তের (আ.) অনুসারীরা সেই একই পথ অনুসরণ করছে—আনুগত্য, বিনয় এবং আত্মত্যাগের। ইনশাআল্লাহ, মহান আল্লাহর সাহায্য তাদের জন্য অব্যাহত থাকবে।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha