বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫ - ১৬:২৮
ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা ডেকে আনবে ভয়াবহ ও অনিশ্চিত পরিণতি

ইরান বিষয়ক সাবেক মার্কিন বিশেষ দূত রবার্ট ম্যালি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার কৌশলকে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, এই ধরনের সামরিক পদক্ষেপ ছিল ভুল এবং এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে নানা অনিশ্চয়তা ও অপ্রত্যাশিত পরিণতি সৃষ্টি হতে পারে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: বুধবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যালি বলেন, “আমি মনে করি, সামরিক অভিযান ছিল একেবারেই ভুল পদক্ষেপ। এটি সমস্যার পূর্ণ সমাধান নয় বরং এর ফলে এমন সব অনিশ্চয়তা ও জটিলতা তৈরি হয় যা শুধু সামনের দিন বা সপ্তাহ নয়, বরং আগামী মাস ও বছরজুড়ে আমাদের ভোগাবে।”

তিনি আরও বলেন, “যারা মনে করেছিলেন ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ইরানে গণ-আন্দোলন সৃষ্টি করবে, তারা ভুল প্রমাণিত হয়েছেন। এসব হামলা শুধু পরমাণু স্থাপনাগুলোকেই নয়, বরং হাসপাতালসহ বেসামরিক স্থাপনাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে, যার ফলে বহু নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।”

ম্যালি জানান, “আমার ইরানি-মার্কিনি বন্ধুরা বলছেন, এসব আগ্রাসনের ফলে তারা আরও বেশি জাতীয়তাবাদী হয়ে উঠছেন। হামলার মুখে তারা আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রতিজ্ঞা নিচ্ছেন।”

তিনি সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, “২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি—জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (JCPOA)—রোধ করার জন্য ইসরায়েল অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু শুরুতে তারা ব্যর্থ হয়। তবে ট্রাম্পের শাসনামলে তারা তাতে সফলতা পায়।”

তার ব্যাখ্যায়, “ইসরায়েল কখনোই এমন একটি ইরান চায়নি যার সঙ্গে ইউরোপ বা এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেরও অর্থনৈতিক লেনদেন বাড়ে। সে কারণেই তারা এই চুক্তিকে নস্যাৎ করার জন্য যা সম্ভব তাই করেছে।”

ম্যালি বলেন, “আমাদের অনেকেই মনে করতেন যে, চুক্তি থেকে সরে গিয়ে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করলেই ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি ত্যাগ করবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।”

তিনি স্বীকার করেন, “আমরা প্রায়ই ভুলভাবে ভাবি যে, শুধু নিষেধাজ্ঞা বা হুমকিই যথেষ্ট—যা ইরানকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং এমনকি কিছু ডেমোক্র্যাটও এই ধারণা পোষণ করতেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো—ইরান তাদের ‘একমাত্র কৌশলগত সম্পদ’ বিনা বিনিময়ে ছাড়বে না। তারা বিনিময়ে কিছু না পেলে পিছু হটবে না।”

সাক্ষাৎকারের শেষে রবার্ট ম্যালি জোর দিয়ে বলেন, “ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন ইরানের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অগ্রাধিকার ছিল এবং থাকবে—নিষেধাজ্ঞা থাকুক বা না থাকুক, তারা সে কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha