হাওযা নিউজ এজেন্সি / প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেঞ্জারগুলোতে আরবাঈনের যাত্রীদের শত শত কনটেন্ট তৈরি হলেও, বিশ্বের মূলধারার গণমাধ্যমগুলো—যারা “বলফাইট” কিংবা “টমেটো নিক্ষেপ উৎসব”–এর মতো ঘটনাকে সরাসরি ও ব্যাপকভাবে সংবাদে প্রচার করে—মিলিয়ন মিলিয়ন অংশগ্রহণকারী, বিভিন্ন ধর্ম ও মতের মানুষ (যেমন খ্রিস্টান, জরথুস্ত্রী, ইহুদি) এবং বিভিন্ন দেশের উপস্থিতির এই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে উপেক্ষা করছে ও সংবাদে বয়কট করছে।
এই ইচ্ছাকৃত নীরবতার উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় আশুরার প্রকৃত বার্তায়—
১. ইমাম হোসেইন (আ.)–এর বিপ্লব ছিল জুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার নাম। এতে রয়েছে প্রতিরোধের বার্তা, আর তাঁর “হَلْ مِن ناصرٍ یَنصُرنی؟” (কে আছে যে আমার সহায় হবে?) আহ্বান আজও বিশ্বের কানে প্রতিধ্বনিত হয়। এটাই সেই বিষয়, যা বাতিলের ধারকরা লুকাতে ও সংবাদে সেন্সর করতে চায়।
২. এই পদযাত্রা হলো ইমাম মাসূমের সরকার ও “ওলায়াতুল্লাহ”–এর প্রতীক, যেখানে সব মানুষ ইমাম হোসেইন (আ.)–এর পতাকার নিচে একত্রিত হয়—“হুব্বুল হোসেইন ইয়াজমাআনা” (হোসেইনের ভালোবাসা আমাদের একত্রিত করে)। ক্ষমতাধর ও ধনলোভীরা সবসময়ই ইমাম মাসূমের সরকার ও ওলায়াতের ভয়ে ছিল এবং আছে। তাই সংবাদ সাম্রাজ্য এটিকে বয়কট করে।
৩. পশ্চিম দীর্ঘদিন ধরে সম্পদ ও বস্তুবাদকে উন্নতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে প্রচার করেছে। অথচ বিশ্বের এক প্রান্তে মানুষ বিনামূল্যে, গর্বের সঙ্গে, বিনম্র অনুরোধে খাদ্য, পানীয়, আশ্রয়, অতিথিসেবা ও স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে—যার মূল প্রেরণা ঈমান ও ধর্মীয় বিশ্বাস। স্পষ্টতই এই বিনামূল্যের সামাজিক আন্দোলন পশ্চিমের ভোগবাদী লক্ষ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তাই তারা সংবাদে এটিকে সেন্সর করে।
৪. এই বিশাল পদযাত্রা হলো মাহদাভি শেষযুগের সরকারের প্রতীক। শিয়াদের বিশেষত্ব হলো—এই ধরনের একটি ন্যায়ভিত্তিক সরকারের প্রতি আশা, যেখানে শ্রেণিব্যবস্থা বিলুপ্ত, লোভ-হিংসা-ঈর্ষার স্থান নেই, সবাই অন্যের সেবায় নিয়োজিত, সবার জন্য সমান সুযোগ ও কল্যাণ থাকে, আর সব কাজ করা হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।
যদিও গণমাধ্যমগুলো তাদের এই সেন্সর অব্যাহত রেখেছে, তারা নিশ্চিত থাকুক—আল্লাহর সুন্নাহ হলো তিনি তাঁর আলোকে পূর্ণ করবেন।
“তারা চায় আল্লাহর আলোকে তাদের মিথ্যা কথার মাধ্যমে নিভিয়ে দিতে, কিন্তু আল্লাহ চান তাঁর আলোকে পূর্ণ করতে—যদিও কাফিরদের তা অপছন্দ হয়।” (তাওবা: ৩২)
আপনার কমেন্ট