শুক্রবার ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১৯:৩৩
‘ফিলিস্তিন’ আল্লাহর বেলায়েত ও শয়তানের বেলায়েতের স্পষ্টতম সংঘাত

ইসলামি মাযহাবসমূহের ঐক্য বিষয়ক বিশ্ব ফোরামের মহাসচিব হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন হামিদ শাহরিয়ারি বলেছেন, ফিলিস্তিন ইস্যু আল্লাহর বেলায়েত ও শয়তানের বেলায়েতের মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্ট উদাহরণ। তাঁর মতে, ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের ঈমান, আত্মত্যাগ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে প্রকৃত “হিজবুল্লাহ”র প্রতিচ্ছবি, পক্ষান্তরে জায়োনিস্ট শাসন ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা শয়তানের বেলায়েতের প্রতীক।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ৩৯তম ইসলামি ঐক্য সম্মেলনের প্রথম ওয়েবিনারে “আল্লাহর বেলায়েতের মালাকূতি ও মুলকী দৃষ্টিভঙ্গি” শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে হুজ্জাতুল ইসলাম শাহরিয়ারি ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে মুসলিম উম্মাহকে ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের আহ্বান জানান। তিনি হক ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামী সকলে জন্য তৌফিক কামনা করেন।

হুজ্জাতুল ইসলাম শাহরিয়ারি বলেন, আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহ তাআলাই সমগ্র অস্তিত্বের সর্বময় শাসক। যে ব্যক্তি এই দৃষ্টিভঙ্গিকে নিজের জীবনে দৃঢ় করে, তার জীবনদর্শন বদলে যায়। কোরআনের আলোকে আল্লাহর বেলায়েত গ্রহণকারীরা হিদায়াত ও আলো লাভ করে এবং শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়।

তিনি আরো বলেন, শয়তানের বেলায়েত হলো অন্ধকার, শূন্যতা ও ধ্বংস। যে এ বেলায়েতকে গ্রহণ করে, সে স্পষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন হয়। কাম-বাসনার অনুসরণ, ফিতনা সৃষ্টি ও মুসলমানদের মাঝে শত্রুতা ছড়ানো শয়তানের বেলায়েতের বৈশিষ্ট্য।

হুজ্জাতুল ইসলাম শাহরিয়ারি জোর দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুই আল্লাহর বেলায়েত ও শয়তানের বেলায়েতের সংঘাতের সবচেয়ে উজ্জ্বল নিদর্শন। ফিলিস্তিনি জাতি হিজবুল্লাহর প্রতিচ্ছবি, আর জায়নিস্ট শাসন ও তাদের পৃষ্ঠপোষকরা শয়তানের বেলায়েতের প্রতীক।

বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব এখন পশ্চিমা এককেন্দ্রিক আধিপত্য থেকে বহুমুখী ও বহুকেন্দ্রিক ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। নব-উদীয়মান শক্তির পাশাপাশি ইরানের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, ঐতিহাসিক ও সভ্যতাগত প্রেক্ষাপট, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি নতুন বিশ্বব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

তিনি মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, মুসলমানদের মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা কাজে লাগালে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং বৈশ্বিক আধিপত্য মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। তবে অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা, বহিঃচাপ ও একটি সর্বজনীন প্রতিষ্ঠানের অভাব বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সফল উদাহরণ হিসেবে তিনি ইরান, তুরস্ক, কাতার ও ইন্দোনেশিয়ার কথা উল্লেখ করেন, যারা সহযোগিতা ও ঐক্যের মাধ্যমে উন্নয়ন অর্জন করেছে এবং বৈশ্বিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

পরিশেষে হুজ্জাতুল ইসলাম শাহরিয়ারি আশা প্রকাশ করেন, আল্লাহর বেলায়েত, তাকওয়া ও সৎকর্মের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ঐক্য বিশ্ব ইসলামি সমাজের জন্য ন্যায় ও সুবিচারের একটি কার্যকর মডেল হতে পারে এবং হযরত ইমাম মাহদী (আ.ফা.)-এর আবির্ভাবের মাধ্যমে পৃথিবী শান্তি ও ন্যায়বিচারে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha