শনিবার ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১৯:৩৩
ইরানের সুন্নি আলেম: মুসলমানদের ঐক্যই আল-আকসার মুক্তি ও গাজাবাসীর রক্ষার চাবিকাঠি

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের তেহরানের সিদ্দিকিয়া সুন্নি মসজিদের জুমার ইমাম মাওলানা মামোস্তা আজিজ বাবায়ী বলেছেন, মুসলমানদের ঐক্যই আল-আকসা মসজিদ মুক্তি এবং নির্যাতিত গাজাবাসীকে রক্ষার মূল চাবিকাঠি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, উম্মাহ যদি নিজস্ব পরিচয় ও প্রকৃত শক্তিতে ফিরে আসে, তবে আল্লাহর সাহায্য লাভ করবে এবং আবারও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান অর্জন করবে।

মাওলানা মামোস্তা বাবায়ী হাওজা নিউজ এজেন্সি’র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মুসলিমদের ঐক্যের অপরিহার্যতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “ঐক্য, ঈমান ও আন্তরিকতার ভিত্তিতে ইসলামি উম্মাহ আবারও শক্তি ফিরে পেলে জুলুম, পবিত্র স্থানের অবমাননা এবং জায়োনিস্ট আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিজয়ী হবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইসলামি আলেমরা যখন ইসরাইলি অপরাধের বিরুদ্ধে জিহাদের ফতোয়া জারি করেছেন, এটি উম্মাহর ঐক্য ও শত্রুর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতনতার স্পষ্ট বার্তা।

মামোস্তা বাবায়ী মুসলমানদের দুর্বলতা ও অসহায়ত্বের কারণ হিসেবে দুনিয়াপ্রেম এবং মৃত্যুভীতি উল্লেখ করে বলেন, “যদি মুসলিম জাতিগুলো নিজেদের সামর্থ্য ও যোগ্যতাকে বিশ্বাস করে, তবে কোনো জালিমই ইসলামের পবিত্র সত্তাকে অপমান করতে বা নিরীহ জনগণকে হত্যা করতে সাহস পাবে না।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রকৃত বিজয় কেবলই সম্ভব আন্তরিকতা, দৃঢ় বিশ্বাস, ঈমান এবং সাহসী প্রতিরোধের মাধ্যমে; যেমনটি ইতিহাসে ঈমানদারগণ ও শহীদরা প্রদর্শন করেছেন।

সিদ্দিকিয়া মসজিদের জুমার ইমাম আরও বলেন, মুসলমানদের ঐক্যই আল-আকসার মুক্তি ও গাজাবাসীর রক্ষার মূল চাবিকাঠি। তিনি বলেন, “উম্মাহ যদি নিজের পরিচয় ও প্রকৃত শক্তি ফিরে পায়, তবে আল্লাহর সাহায্য আসবে এবং মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান পুনরুজ্জীবিত হবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সানান্দাজে আয়োজিত “উম্মতে আহমাদ” উৎসব উম্মাহর ঐক্যের এক সুন্দর প্রকাশ। তাঁর মতে, শত্রুর অন্যতম প্রধান ও শয়তানি পরিকল্পনা হলো ইরানকে দুর্বল করা বা টুকরো টুকরো করা, যাতে এই অঞ্চলের একমাত্র শক্তি ভেঙে পড়ে। তবে শিয়া-সুন্নির এমন অনুষ্ঠান শত্রুর জন্য হতাশার বার্তা বহন করে, কারণ ঐক্যবদ্ধ জাতিকে পরাজিত করা সম্ভব নয়।

মামোস্তা বাবায়ী বলেন, “উম্মতে আহমদ-এর মতো আয়োজনগুলো বিভিন্ন ধর্ম, মাজহাব ও জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংলাপ ও সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করে এবং যৌথ সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রকল্পের পথ সুগম করে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরকারগুলো যদি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও সংখ্যালঘুদের অধিকার সমর্থন করে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আন্তঃধর্মীয় কূটনীতি ব্যবহার করে, তবে তা শত্রুর বিভাজনমূলক নীতির কার্যকর প্রতিরোধ হবে।

শেষে মামোস্তা আজিজ বাবায়ী আশা প্রকাশ করেন, ইসলামি উম্মাহ জাগ্রত চেতনা ও ঐক্যের মাধ্যমে মর্যাদা ও বিজয় অর্জন করবে এবং দ্বীন ও মানবতার শত্রুদের সম্মানের সঙ্গে মোকাবিলা করবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha