হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইরানের ধর্মীয় নগরী মাশহাদে হাওজায়ে ইলমিয়ার শুরা বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সা.) ও ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর পবিত্র জন্মবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানান এবং ইমাম খোমেনীর (রহ.) দূরদর্শী চিন্তা ও উদ্যোগসমূহকে ইসলামের মৌলিক ভিত্তি পুনর্জাগরণ এবং মুসলিম ঐক্যের মূল চাবিকাঠি হিসেবে অভিহিত করেন।
ঐক্য সপ্তাহ—মুসলিম উম্মাহর ভ্রাতৃত্বের প্রতীক
হুজ্জাতুল ইসলাম খিয়্যাত বলেন, নবী করিমের (সা.) জন্ম তারিখ নিয়ে মুসলিম মাযহাবসমূহের মধ্যে যে ঐতিহাসিক মতভেদ ছিল, ইমাম খোমেনী (রহ.) প্রজ্ঞার সঙ্গে ১২ থেকে ১৭ রবিউল আউয়াল সময়কে “সপ্তাহে ঐক্য” ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে মুসলমানদের বিভেদ দূর হয়ে ভ্রাতৃত্ব ও নৈকট্যের পথ প্রশস্ত হয়েছে।
তিনি আরও সতর্ক করেন, কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যম ও উপনিবেশবাদী শক্তি পরিকল্পিতভাবে এ সপ্তাহের গুরুত্ব কমিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে ইমাম খোমেনী (রহ.) তাঁর দূরদৃষ্টি ও দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে এসব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেন।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে “কুদস দিবস”-এর প্রভাব
খোরাসানের হাওজায়ে ইলমিয়ার পরিচালক বলেন, ইমাম খোমেনীর (রহ.) আরেকটি অসামান্য উদ্যোগ ছিল “আন্তর্জাতিক কুদস দিবস” ঘোষণা। সে সময় ফিলিস্তিন প্রশ্নকে আঞ্চলিক ইস্যুতে সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছিল। কিন্তু ইমাম খোমেনী (রহ.) রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে কুদস দিবস ঘোষণা করে ফিলিস্তিনকে আবারও মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্রীয় ইস্যুতে পরিণত করেন। এর ফলে ফিলিস্তিন প্রশ্ন বৈশ্বিক গুরুত্ব ফিরে পায় এবং মুসলিম উম্মাহ দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ পায়।
হাওজায়ে ইলমিয়ায় ইমাম খোমেনীর (রহ.) চিন্তা অন্তর্ভুক্তির আহ্বান
হুজ্জাতুল ইসলাম খিয়্যাত বলেন, ইমাম খোমেনীর (রহ.) চিন্তা-চেতনা এখনও যথাযথভাবে পরিচিত হয়নি, তাই তা নিয়ে গভীর গবেষণা প্রয়োজন। তিনি জানান, খোরাসান হাওজায়ে ইলমিয়া “মাদ্রাসায়ে ফাজরানে” প্রকল্প চালু করেছে, যার লক্ষ্য ইমাম খোমেনীর (রহ.) চিন্তা পুনর্জাগরণ।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিপ্লবী হাওজায়ে ইলমিয়া ইমাম খোমেনীর (রহ.) পরিচয় ছাড়া অর্থহীন। তাই তাঁর চিন্তা ও দর্শন পাঠ্যসূচি ও আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করে তা ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে প্রাধান্য দিতে হবে। এভাবে নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠবে যারা ইসলামী বিপ্লবের মূল্যবোধ ধারণ ও রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
তিনি শেষে আয়াতুল্লাহ মুর্তজাভীর প্রশংসা করেন, যিনি ইমাম খোমেনীর (রহ.) “তাহরিরুল ওসিলা” কিতাবকে ফিকহের উচ্চতর পাঠে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁর মতে, এমন উদ্যোগ ছাত্রদের ইকমি ও চিন্তাগত বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং অন্যান্য পাঠেও তা অনুসৃত হওয়া প্রয়োজন।
আপনার কমেন্ট