মঙ্গলবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১৮:৫৮
কুম থেকে প্রেরিত হাওজাভিত্তিক প্রতিনিধিদলের হিজবুল্লাহর শহীদ আলেমদের পরিবার পরিদর্শন

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের হাওজাভিত্তিক একটি প্রতিনিধি দল লেবাননের বিভিন্ন শহরে উপস্থিত হয়ে হিজবুল্লাহর তিন শহীদ আলেমের পরিবারকে সম্মান জানিয়েছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন হোসেইনি কুহসারি লেবাননে হাওজা নিউজ এজেন্সি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন: ইরানের হাওজার কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা থেকে প্রেরিত প্রতিনিধিদল, যারা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাত বার্ষিকীতে অংশ নিতে লেবাননে এসেছিল, তারা বৈরুত থেকে দক্ষিণ লেবাননের শহরগুলোতে সফর করেন। সফরে তারা নাবাতিয়া ও জিবশীত শহরে গিয়ে নানা কর্মসূচি পালন করেন, যার মধ্যে ছিল হিজবুল্লাহর তিন শহীদ আলেমকে স্মরণ ও সম্মান জানানো।

তিনি আরও বলেন: এ কর্মসূচির আওতায় হিজবুল্লাহর তিন শহীদ আলেমের পরিবারে গিয়ে তাঁদের উচ্চ মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। একইসঙ্গে কওম ও ইরানের আলেম ও হাওজাভিত্তিক মহলের পক্ষ থেকে তাঁদের পরিবারকে শুভেচ্ছা ও সমবেদনা জানানো হয়। এসময় শহীদ সাঈদ, শাইখ আলী আবুরিয়া, শাইখ আব্দু এবং শাইখ সাইয়্যেদ আল-আমেলীর পরিবারকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়।

দেশের হাওজাগুলোর আন্তর্জাতিক বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন: এ তিন সফরের এক বিশেষ দিক হলো, শহীদ পরিবারের সদস্যরা হাওজার এই সফরের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং এটিকে অত্যন্ত মূল্যবান ও উৎসাহব্যঞ্জক হিসেবে দেখেছেন। এক শহীদের সন্তান বলেন: আমাদের বাবার শাহাদাত সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাতের পরপরই হয়েছিল। তখন আমরা গভীরভাবে অনাথত্ব অনুভব করছিলাম। কিন্তু আজ কওমের আলেম ও ফজিলাগণ আমাদের ঘরে এসে আমাদের সেই অনাথত্ব দূর করেছেন। মনে হচ্ছে, আমাদের আধ্যাত্মিক পিতারা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।

তিনি বলেন: আরেকটি লক্ষণীয় দিক ছিল শহীদ পরিবারের দৃঢ় মনোবল। যদিও তাঁরা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাতে শোকাহত ছিলেন, কিন্তু একইসঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে বিজয়ে আনন্দিত ছিলেন। তাঁরা বিশেষভাবে খুশি হয়েছেন এই কারণে যে প্রতিরোধ অক্ষের কেন্দ্র ও অগ্রদূত ইরান মর্যাদার সঙ্গে প্রতিরোধের পথ অতিক্রম করছে।

তিনি নাবাতিয়ায় অবস্থিত হাওজা ইলমিয়া “বাকিয়াতুল্লাহ” সফরের প্রসঙ্গে বলেন: সেখানে আমরা ওই হাওজার পরিচালক শাইখ হাসান সুইদানের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। তিনি লেবাননের একজন প্রখ্যাত ও অভিজ্ঞ আলেম, যিনি বহু বছর ইরানেও অবস্থান করেছেন। এছাড়া আমরা ওই হাওজার শিক্ষক ও ছাত্রদের সাথেও সাক্ষাৎ করেছি। আলোচনায় কওম হাওজার সামর্থ্য ও লেবাননের হাওজার সাথে সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরা হয়।

তিনি আরও জানান: আমরা দাইরকানুনে শাইখ হাশিম সাফিউদ্দীনের মাজারে গিয়েছিলাম এবং সেখানে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। ওই অনুষ্ঠানে শিল্পী ছাত্ররা কবিতা পাঠ করেন। হাওজাভিত্তিক প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে ইরানের আলেমদের সালাম ও শুভেচ্ছা লেবাননের মুজাহিদদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় এবং ইসলামী শিক্ষার ব্যাখ্যা ও প্রতিরোধের গৌরবময় বাণী প্রচারে সাহিত্য, কবিতা ও শিল্পকলার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন: পরবর্তীতে আমরা হাওজার কবি-ফজিলাদের এক বৈঠকে যোগ দিই, যেখানে প্রতিরোধের বাণী প্রচারে সাহিত্য, কবিতা ও শিল্পকলার ভূমিকাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

হুজ্জাতুল ইসলাম হোসেইনি কুহসারি বলেন: আজ আমরা বহুমুখী এক কঠিন সমন্বিত যুদ্ধে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। তাই সাংস্কৃতিক, জ্ঞানগত ও বৌদ্ধিক যুদ্ধের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিঃসন্দেহে কলম ও শিল্পের অধিকারীদের উপস্থিতি ও সঙ্গ প্রতিরোধের বাণীকে দীর্ঘস্থায়ী করতে এবং প্রকৃত প্রতিরোধ ও ধর্মীয় বক্তব্যকে কার্যকর করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha