বুধবার ১ অক্টোবর ২০২৫ - ০৭:৪৯
শিশুদের কোলে ঘুমানোর অভ্যাস কমানোর উপায়

শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের অংশ হিসেবে কোলে থাকা ও কান্না করা একটি প্রাকৃতিক অভ্যাস। বিশেষত ছয় থেকে আট মাস বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে এটি দেখা যায়। এই বয়সে শিশুর ভাষা ও কথোপকথনের দক্ষতা সীমিত, তাই তার প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম স্পর্শ। তাই মা-বাবার কোলে থাকা তাকে স্বস্তি ও নিরাপত্তা প্রদান করে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি একটি আসক্তিতে পরিণত হলে শিশুর স্বাধীনতা ও আত্মবিশ্বাসের বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: পারিবারিক পরামর্শ ও বিশেষজ্ঞ হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন সাইয়্যেদ আলী রেজা তারাশিয়ুন মতে, শিশুদের কোলে নির্ভরশীলতা কমাতে কিছু কার্যকর পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে।

শিশুর সাথে যোগাযোগের মাধ্যমগুলো চেনা
শিশুর প্রধান চারটি যোগাযোগ মাধ্যম রয়েছে:
• দৃষ্টি (Visual) – হাসিমুখ, মুখভঙ্গি, প্যান্টোমাইম ধাঁচের খেলা

• শ্রবণ (Auditory) – ছড়া-গান, কবিতা, গল্প, দোয়া

• স্পর্শ/ইন্দ্রিয় (Tactile) – কোলে ধরা, আলতো স্পর্শ

• ভাষা/কথন (Verbal) – ধীরে ধীরে শব্দ ও সংলাপ শেখানো

যদি শিশুর প্রধান যোগাযোগ শুধুমাত্র স্পর্শের মাধ্যমে হয়, তবে অন্য মাধ্যমগুলো পিছিয়ে পড়ে। তাই অভিভাবকরা সচেতনভাবে দৃষ্টি, শ্রবণ ও ভাষাগত যোগাযোগকে বিকশিত করার দিকে মনোযোগ দিতে পারেন।

কার্যকর পদ্ধতি
কণ্ঠস্বর ও কথার মাধ্যমে যোগাযোগ: শিশুর সঙ্গে ছড়া-গান, গল্প, কবিতা বা দোয়া পাঠ করা তাকে শব্দের মাধ্যমে শান্তি ও নিরাপত্তা শেখায়। যদিও সে এখন কথা বলতে পারবে না, ধীরে ধীরে এটি তার জন্য অন্যান্য যোগাযোগের উৎস হয়ে ওঠে।

দূরত্বের মধ্যে সংযোগ: শিশু যখন দোলনা বা আলাদা জায়গায় থাকে, তখনও মা-বাবার কথার মাধ্যমে সংযোগ রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুকে শেখায় যে শান্তি পেতে কেবল কোলে থাকা দরকার নেই।

মুখভঙ্গি ও খেলার মাধ্যমে দৃষ্টি বিকশিত করা: মুখভঙ্গি, হাসিমুখ, অঙ্গভঙ্গি ও ছোট খেলা শিশুর মনোযোগকে কোলে থাকা থেকে সরাতে সাহায্য করে।

বয়স উপযোগী খেলনা ব্যবহার: হালকা ও নড়াচড়াযুক্ত খেলনা যেমন ছোট গাড়ি, বল, নরম পুতুল শিশুকে বিকল্প আনন্দ ও স্বস্তির উৎস প্রদান করে।

শিশুর কোলে ঘুমানোর প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা স্বাভাবিক হলেও, ধীরে ধীরে অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যমগুলো শক্তিশালী করে তাকে স্বাধীনভাবে শান্তি অনুভব করতে শেখানো সম্ভব। ছড়া-গান, গল্প, হাসিমুখ, খেলনা ও সহজ খেলার মাধ্যমে শিশুর মনোযোগকে কোলে নির্ভরতা থেকে সরানো যায়। এভাবে শিশুর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং বাবা-মা ও শিশুর মধ্যে সম্পর্কও আরও সুদৃঢ় হয়।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha