বৃহস্পতিবার ২ অক্টোবর ২০২৫ - ১৮:৫৬
সুন্নি আলেমের বর্ণনায় ইমাম হাসান আসকারী (আ.)–এর পবিত্র মাজারের অনন্য কারামত

কোমের হাওযা ইলমিয়ার উস্তাদ জানিয়েছেন, ইতিহাস জুড়ে শুধু শিয়া নয়, সুন্নি আলেমরাও ইমাম হাসান আসকারী (আ.)–এর পবিত্র মাজারে উপস্থিত হতেন এবং আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতেন। এ বিষয়ে সুন্নি আলেম ইউসুফ ইবনে ইসমাইল নাবাহানির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

হাওজা নিউজ এজেন্সি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কোম হাওযা ইলমিয়ার উস্তাদ হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন আহমদ বাকেরিয়ান সারাভি বলেন,
“ইমাম হাসান আসকারি (আ.)–এর পবিত্র মাজার যুগে যুগে শুধু শিয়া নয়, বরং সুন্নি আলেমদের কাছেও সম্মানিত ছিল। তাঁরা নিয়মিতভাবে এ মাজারে জিয়ারত করতে আসতেন।”

তিনি আরও বলেন, সুন্নি আলেম ইউসুফ ইবনে ইসমাইল নাবাহানি ইমাম হাসান আসকারি (আ.)–এর ব্যক্তিত্ব ও তাঁর মাজার জিয়ারতের প্রসঙ্গে লিখেছেন:
“ইমাম হাসান আসকারী (আ.) আমাদের আহলে বাইতের মহান ইমাম ও সম্মানিত সাদাতদের অন্যতম। আমি নিজে তাঁর থেকে একটি বিশেষ কারামত প্রত্যক্ষ করেছি। ১২৯৬ হিজরিতে আমি ইরাকের কুর্দি অধ্যুষিত শহর ‘কুই সানজাক’-এ কাজী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম। কিন্তু সেই বছর ইরাক জুড়ে দুর্ভিক্ষ ও মহামারী দেখা দিলে নির্ধারিত সময়ের আগেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হই এবং বাগদাদের উদ্দেশ্যে রওনা হই।

আমি নদীপথে কাঠের ভেলায় (কল্লক) যাত্রা করছিলাম। যখন আমরা সামরার কাছাকাছি পৌঁছলাম—যা একসময় আব্বাসীয় খলিফাদের রাজধানী ছিল—আমাদের মনে ইমাম হাসান আসকারী (আ.)–এর পবিত্র মাজার জিয়ারত করার ইচ্ছা জাগল। ভেলাটি তীরে ভিড়ল, আমরা মাজারে প্রবেশ করলাম। মাজারে ঢুকতেই এমন এক আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আমার অন্তরে অনুভূত হলো, যা জীবনে আগে কখনও পাইনি। এটা নিঃসন্দেহে সেই মহান ইমামের কারামত।

এরপর আমি কুরআনের কিছু আয়াত তিলাওয়াত করলাম, দোয়া করলাম এবং সেখান থেকে বের হয়ে এলাম।”

তথ্যসূত্র: জামি‘ কারামাত আল-আউলিয়া, ইউসুফ ইবনে ইসমাইল নাবাহানি, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ২২

এই বর্ণনা প্রমাণ করে যে, আহলে বাইতের ইমামদের (আ.) প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা কেবল শিয়া সম্প্রদায়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সুন্নি আলেমরাও তাঁদের আধ্যাত্মিক মর্যাদা ও কারামাতের সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। ইমাম হাসান আসকারী (আ.)–এর পবিত্র মাজার আজও মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ও আধ্যাত্মিকতার প্রতীক হয়ে আছে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha