হাওজা নিউজ এজেন্সি: আরাকচি বলেন, ইরান কখনোই “আলোচনা ও কূটনীতির পতাকা নামায়নি।” তবে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই সমমর্যাদার ভিত্তিতে আলোচনায় বসার প্রস্তুতি দেখাতে হবে। তিনি মন্তব্য করেন, “আলোচনা আর নির্দেশ চাপিয়ে দেওয়া এক নয়; আমরা কাউকে নির্দেশ শোনার জন্য প্রস্তুত নই।” তিনি আরও জানান, স্ন্যাপব্যাক ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা সক্রিয় হওয়া ঠেকাতে বিভিন্ন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ছিল “অতিরিক্ত দাবিদাওয়া ও একগুঁয়েমির” ওপর অটল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, জেসিপিওএ (JCPOA) এবং কূটনৈতিক পথ লঙ্ঘন করেছে যুক্তরাষ্ট্রই। শত্রুরা দেশের ভেতর বিভেদ ও উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ ইস্যুকে বড় ধরনের মেরুকরণে পরিণত করা উচিত নয়; বরং শান্ত, বিবেচনাপ্রসূত ও জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে এগুলো মোকাবিলা করতে হবে।
১২ দিনের সাম্প্রতিক যুদ্ধ প্রসঙ্গে আরাকচি বলেন, “মাঠ ও কূটনীতি উভয়ই জাতীয় ঐক্য ও সমন্বয়ের সেরা দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে”—সেনাবাহিনী দেশকে রক্ষা করেছে এবং কূটনীতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বৈধতা সুরক্ষিত করেছে। তিনি জানান, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের, আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিজের কূটনৈতিক দায়িত্বও পালন করে যাচ্ছে।
রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ইরানের এই দুই দেশের সাথে “ঘনিষ্ঠ ও কৌশলগত সহযোগিতা” বজায় রয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, শত্রুরা এই সম্পর্ক দুর্বল করার চেষ্টা করছে এবং দেশের ভেতরের কিছু আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত দ্বৈততার জন্ম দিতে পারে—যা শত্রুরই কাম্য।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরান নতুন এক “সমঝোতা ও গ্রহণযোগ্যতার স্তরে” পৌঁছেছে বলে আরাকচি মন্তব্য করেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা ইরানের অগ্রাধিকার, এবং মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আঞ্চলিক সহযোগিতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জায়নিস্ট শাসন কাতারের ওপর হামলা চালানোর পর বহু দেশ বুঝতে পেরেছে—ইসরায়েলই অঞ্চলের প্রধান হুমকি। ফলে ইরানকে তারা এখন আরও নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে দেখছে এবং সহযোগিতার আগ্রহও বেড়েছে।
এনপিটি থেকে সম্ভাব্য প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আরাকচি বলেন, এই আলোচনা মূলত নেতার (রাহবারের) ফতোয়াকে উপেক্ষা করার শামিল। তিনি জানান, এনপিটিতে থাকা বা না-থাকা—দুটোরই এমন অনেক দিক রয়েছে যা জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে। এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের বর্তমান সিদ্ধান্ত হলো—এনপিটির একজন দায়িত্বশীল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সদস্য হিসেবেই থাকা, এবং নেতার ফতোয়া “কখনোই উপেক্ষিত হবে না।” আরাকচির ভাষায়, “এটি কোনো আবেগভিত্তিক বিষয় নয়; বরং গভীর ও বিশেষজ্ঞসুলভ বিশ্লেষণ প্রয়োজন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সিদ্ধান্ত।”
আপনার কমেন্ট