সোমবার ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ - ২০:৪৮
পিতা-মাতা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি মানুষের দায়িত্ব

হযরত আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলী (দা.) বলেন— মানুষ অতীত ও ভবিষ্যতের মাঝখানে অবস্থান করে; যাতে সে উভয়কেই উপলব্ধি করতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বাস্তবায়নের জন্য হযরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর কাছে নিজের পিতা-মাতা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হযরত আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলী পরিবারভিত্তিক অতীত ও ভবিষ্যতের প্রতি মানুষের দায়িত্ব সম্পর্কে এক বক্তব্যে বলেন: ইসমাইল ও ইসহাক (আ.)-এর মতো সৎ ও যোগ্য সন্তান—যাঁরা ওহি গ্রহণ ও আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুপ্রেরণা লাভের ক্ষেত্রে বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত হয়েছিলেন—নিশ্চয়ই আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নিয়ামত ও দান। এ কারণেই হযরত ইবরাহিম (আ.) এই মহান নিয়ামতের জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করাকে নিজের কর্তব্য বলে মনে করেছেন। এটি তাঁর উচ্চ মর্যাদা ও মহান অবস্থানের প্রমাণ। যেমন তিনি বলেছেন: “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার বার্ধক্যকালে আমাকে ইসমাইল ও ইসহাক দান করেছেন।”
মূলত পারিবারিক বিষয়ে মানুষের কর্তব্য হলো— সে যেন অতীতকে ভুলে না যায় এবং একই সঙ্গে ভবিষ্যতের কথাও ভাবে। অর্থাৎ, একদিকে তাকে নিজের পিতা-মাতা ও পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে, তাঁদের কষ্ট ও অবদানকে অবহেলা করা যাবে না এবং তাঁদের ক্ষমার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। দোয়া ও সৎকর্মের মাধ্যমে তাঁদেরকে আল্লাহর বিশেষ রহমতের অংশীদার করতে হবে। কারণ মানুষ যে কোনো সৎকর্মই সম্পাদন করুক না কেন, তার সওয়াব পিতা-মাতা, শিক্ষক এবং সেইসব পূর্বসূরিদের কাছেও পৌঁছে যায়—যাঁরা তার গঠন ও চরিত্র গঠনে ভূমিকা রেখেছেন।
অন্যদিকে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও সন্তানদের শিক্ষা ও লালন-পালনের প্রতিও তাকে সচেষ্ট হতে হবে; যাতে আগামী দিনে সমাজের সবাই কল্যাণ ও নেকির সুফল ভোগ করতে পারে।
মানুষ অতীত ও ভবিষ্যতের মাঝখানে অবস্থান করে—যাতে সে উভয়কেই উপলব্ধি করতে পারে। এই দায়িত্ব পালনের জন্য হযরত ইবরাহিম (আ.) তাঁর দোয়াগুলোতে একদিকে নিজের পিতা-মাতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন—যাঁরা তাঁর শিক্ষা ও প্রতিপালনে কষ্ট সহ্য করেছেন। তিনি বলেন: “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সকল মুমিনকে সেদিন ক্ষমা করে দিও—যেদিন হিসাব কায়েম হবে।”
অন্যদিকে, তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতিও উদাসীন ছিলেন না; বরং তাঁদের যোগ্যতা ও দায়িত্বশীলতার জন্য দোয়া করেছেন। তিনি বলেন: “হে আমাদের প্রতিপালক! তারা যেন নামাজ কায়েম করে—এ জন্য মানুষের অন্তর তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে দাও এবং তাদেরকে ফলমূল দ্বারা রিজিক দান করো, যাতে তারা কৃতজ্ঞ হয়।”
আরও বলেন: “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে নামাজ কায়েমকারী বানাও এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও (এমন বানাও)। হে আমাদের প্রতিপালক! আমার দোয়া কবুল করো।”
সূত্র: তাফসিরে তাসনিম, খণ্ড ৪৪, পৃষ্ঠা ১৬৪

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha