বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ - ১৭:১৬
১৭৬৫ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত ঔপনিবেশিক সময়ে ব্রিটেন ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ৬৪ দশমিক ৮২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্য সম্পদ নিয়ে গেছে যুক্তরাজ্য।

হাওজা / আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থা অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের সর্বশেষ বৈশ্বিক বৈষম্যবিষয়ক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৭৬৫ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত ঔপনিবেশিক সময়ে ব্রিটেন ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ৬৪ দশমিক ৮২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্য সম্পদ নিয়ে গেছে যুক্তরাজ্য। আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থা অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের সর্বশেষ বৈশ্বিক বৈষম্যবিষয়ক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। এক প্রতিবেদনে হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়।

     যুরা ( যুক্তরাজ্য / ব্রিটেন ) ধনী ও বিত্তশালী হয়েছেই বিশ্বের ধন-সম্পদ লুটপাট করে এবং ভারত বর্ষেরই ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে ( ১৭৬৫ থেকে ১৯০০ এর মধ্যে ) ! বিলিয়ন বিলিয়ন নয় ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার লুটপাট করে নিয়ে গেছে যুরা ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে। যে সম্পদ গত কয়েক হাজার বছর ধরে এবং বিশেষ করে মুসলিম সুলতানী ও মুঘল শাসনামলে ভারতীয় উপমহাদেশে গড়ে উঠেছিল সেই বিশাল বিত্ত বিভব ও সম্পদ মাত্র ১৪০ বছরে ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদীরা শুষে নিয়ে গেছে এবং ভারত বর্ষ ইতিহাসে সর্বকালের সবচেয়ে চরম দারিদ্র্য, অভাব ও দুর্ভাগ্যে আপতিত হয়  মাত্র ১৯০ বছরের ইংরেজ শাসনামলে ( ১৭৫৭ - ১৯৪৭ ) ।  দাতা গোষ্ঠীর নাম ও উপাধি ব্যবহার করা ইংরেজ , মার্কিন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর  একান্ত অনুচিত ও হারাম । কারণ ওরা সমগ্র বিশ্ববাসীর অর্থাৎ সকল জাতির সম্পদ লুণ্ঠন করে এখন উচ্ছিষ্ট কিছু ছাইপাশ দান করে নিজেদের দাতা গোষ্ঠী বলে জাহির করে । ওরা কি নিজেদের সম্পদ ও অর্থ দান করে নাকি আমাদের থেকে লুণ্ঠিত অর্থ সম্পদের অতি সামান্য নগণ্য অংশই আমাদেরকে ভিক্ষা দিয়ে দেখাচ্ছে যে আমরা ওদের দয়া দাক্ষিণ্যের ওপর বেঁচে আছি । আর ওরা যদি সাহায্য বন্ধ করে দেয় তাহলে আমরা নাকি না খেয়ে দেয়ে দুর্ভিক্ষে মারাই যাব । এসব হাবিজাবি কথা পশ্চিমাদের আশ্রিত মিডিয়া ( প্রচার মাধ্যম সমূহ ) বলে বেড়ায় এবং আমাদের জনগণের  মনে ওদের একটা ফল্স ( মিথ্যা ও মেকী ) সুনাম ও ইমেজ তৈরি করে রেখেছে যে  পশ্চিমারা বিশেষ করে যুরা হচ্ছে উদার মহান মহৎ দাতা ও দানশীল গোষ্ঠী  । ওদের দান করা দেখে মনে পড়ে যায় এ প্রবাদ বাক্য : " গরু মেরে জুতো দান ! " ওরা আমাদের ধন-সম্পদ লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে যেন আমাদের গরুটাকে মেরে কেটে জবাই করে খেয়ে উজার করে অবশেষে আমাদেরকে সান্ত্বনা স্বরূপ গরুর চামড়ার একটা অংশ দিয়ে জুতো তৈরি করে  আমাদেরকে সেই জুতো দান করেছে। এতে ফায়দা কী হলো ? কচু ও কাঁচকলা। আসলে সত্যিকার অর্থে যুরা,প্রায় সকল ইউরোপীয় দেশ , মাযুরা(মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)গং আসলে মহা লুটেরা , চোর , জোচ্চোর , বাটপার , লুচ্চা , দস্যু ও তস্কর যাদের সাথে কারো কোনো তুলনাই হয় না । (ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে গেছে যুক্তরাজ্য)

এই পশ্চিমারা (যুরা-মাযুরা গং) বিশ্ব জুড়ে ফিৎনা , ফাসাদ , দুর্নীতি , অপরাধ, অশান্তি , গণ্ডগোল , গোলোযোগ ও যুদ্ধ - বিগ্রহের মূল হোতা ও  নারদ মণি । ভারত , পাকিস্তান , বাংলাদেশ , নেপাল , ভূটান , শ্রীলঙ্কা সহ  যুরার সাম্রাজ্যবাদ কবলিত সাবেক উপনিবেশ সকল দেশের উচিত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের লুটপাটের ক্ষতিপূরণ সুদ আসলে দাবি ও তা আদায়ের জন্য কার্যকর পদক্ষেপের উদ্যোগ গ্রহণ । তাই কস্মিনকালেও যুরা - ফুরা (যুক্তরাজ্য) , মাযুরা - ফাজুরা - খাজুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র - কানাডা - অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি ) এবং ইউরোপীয় দেশগুলো প্রকৃত দাতা গোষ্ঠী হতেই পারে না বরং ওরা সবাই চোর চোট্টা লুটেরা বদমাইশদের গুষ্ঠী । ওরা চোরাই মাল ও ধন সম্পদ থেকে উচ্ছিষ্ট ও অতি সামান্য কিছু দান করে মহান ও মহা দাতার ( দাঁতা ) সাজে সেজেছে ও বেশভূষা পরিধান করেছে। তবে এখন ওদের আসল মূর্তি প্রকাশ পেয়ে গেছে। কেবল ভারত বর্ষ থেকে লুণ্ঠিত ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ ২৬৮ বছরের সুদ এবং ক্ষতিপূরণ সহ ফেরত দিলে ব্রিটিশদের গা গতরে জামা তো দূরের কথা একটা সুতাও আর বিদ্যমান থাকবে না !!! গোটা পশ্চিমা সভ্যতা আমাদের রক্ত ও ধন-সম্পদের ওপর গড়ে উঠেছে ও দাঁড়িয়ে আছে । আমাদের ধন-সম্পদ আমাদের কাছে ফেরত দিলে ওদের সভ্যতা,দেশ ও সমাজের আর কোনো কিছুই বাকী  থাকবে না । আসলে আমরাই ওদের সকল শহর-বন্দর,শিল্প-কলকারখানার আসল ও প্রকৃত মালিক। ওরা তো তস্কর দস্যু ডাকাত। আর তস্কর দস্যু ডাকাতরা তো লুটপাট করা বিত্ত-বিভব ও ধন - সম্পদের প্রকৃত মালিক নয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে,ঐ সময়কালে (১৭৬৫-১৯০০) যুরা এমন এক সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছিল যার সূর্যাস্ত হত না অর্থাৎ বিশ্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও ভূভাগ জবরদখল করে নিয়েছিল এবং ভারতীয় উপমহাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেগুলো যুরার পদানত ও শাসনাধীন হয়ে ছিল সেগুলোর ধন-সম্পদ ও বিত্ত-বিভব লন্ডনে আনা হত। কিন্তু এত বিশাল ব্যাপক ধন-সম্পদ ও বিত্ত-বিভব হস্তগত করেও যুরার সাধারণ জনগণ দারিদ্র্যের কারণে আপেল খেতে পারত না যা ইংরেজ শাসকদের ফরমায়েশে বানানো ও প্রবর্তিত: "Tomato is poor man's apple ( টমেটো গরীব মানুষের আপেল )" - এ প্রবাদ বাক্য থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য আমার লিখিত এ প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য:

ব্রিটিশ শঠতা ও ধূর্তামির মূর্ত্য প্রতীক: টমেটো গরীব মানুষের আপেল!

    যুরায় এত বিশাল বিরাট ধনসম্পদের সয়লাব ও বন্যা বয়ে যাওয়া সত্ত্বেও যুরার অধিকাংশ জনগণের ভাগ্য ঘুচে নি বরং তারা হত দরিদ্র ও ফকীর মিসকীন রয়ে গিয়েছিল এবং আপেল কিনে খাওয়ার সামর্থ্যও তাদের ছিল না যা ঐ প্রবাদ বাক্যে ব্যবহৃত ও উল্লেখিত 'গরীব মানুষের আপেল' থেকেও স্পষ্ট পরিস্কার ও বোধগম্য। ঐ সম্পদ রাজির সিংহভাগই মুষ্টিমেয় অভিজাত শ্রেণীর হাতে পুঞ্জীভূত হয়ে গিয়েছিল যা উক্ত প্রতিবেদনটিতেও উল্লেখিত হয়েছে।গরীব ফকীর ব্রিটিশরা যাতে শান্ত ও সন্তুষ্ট থাকে ( শ্রেণী বৈষম্যের জন্য বিদ্রোহ না করে) সেজন্য ধূর্ত ও চতুর ব্রিটিশ রাজ ঐ প্রবাদ বাক্য বানিয়ে তদানীন্তন ব্রিটিশ সমাজে প্রচলিত করে হতদরিদ্র ব্রিটিশ জনগণকে প্রবোধ দিয়েছিল যে "দারিদ্র্যের কারণে আপেল কিনে খাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য না থাকার জন্য তোমরা দু:খ করো না। আপেলের বদলে তোমরা টমেটো খাও।কারণ টমেটোই গরীব মানুষের আপেল।"এরপর ব্রিটিশ সরকার নিজের বেতনভুক বিজ্ঞানীদের দিয়ে টমেটোর পুষ্টিগুণ ও মান যে আপেলের চেয়েও অনেক বেশি অর্থাৎ আপেলের চেয়ে টমেটোর শ্রেষ্ঠত্ব যুরা(যুক্তরাজ্য)সহ সমগ্র বিশ্বে প্রচার করিয়েছিল এবং এই প্রবাদ বাক্য ও টমেটোর পুষ্টিগুণ ও মাহাত্ম সকল দেশের স্কুল-কলেজের বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে ঢুকিয়ে দিয়েছিল ধূর্ত ও চতুর যুরা বা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসক ও শোষক গোষ্ঠী।যে সময়ে ভারত বর্ষ থেকে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের ধনসম্পদ যুরা লুন্ঠন করেছে ঠিক সেই সময়েই ব্রিটেনের জনগণের সিংহভাগ দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছিল যা উক্ত প্রবাদ বাক্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়ে যায়। যুরা আপেল উৎপাদনকারী দেশ। যুরা ব্যতীত আর কোনো আপেল উৎপাদনকারী দেশে এ প্রবাদ বাক্য প্রচলিত হয় নি।কারণ ও সব দেশের দরিদ্র জনগণও আপেলের মৌসুমে আপেল কিনে খেতে পারত। কিন্তু যুরার দরিদ্র ফকীর জনগোষ্ঠীর এমনকি আপেলের মৌসুমেও আপেল কিনে খাওয়ার আর্থিক সংগতি ও সামর্থ্য যে ছিল না তা ঐ প্রবাদ বাক্য থেকে স্পষ্ট হয়ে যায!আর শিয়ালের মতো সেয়ানা , ধূর্ত ও চতুর ব্রিটিশ রাজের প্রভাবে ঐ অসার প্রবাদ বাক্যটি বৈজ্ঞানিক স্তুতি বাক্যে পরিণত হয়ে স্কুল কলেজের বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে বলেই আমরাও ছোটবেলায় বৈজ্ঞানিক(?)ঐ স্তুতি বাক্য মুখস্থ করে জপেছি ও আওড়িয়েছি:"টমেটো গরীব মানুষের আপেল (Tomato is poor man's apple)"!!!!!! পুষ্টিমান যাই থাকুক না কেন আপেলের যে সামাজিক সাংস্কৃতিক স্ট্যাটাস আছে তা টমেটোর নেই। বাড়ীতে মেহমান এলে টমেটো নয় আপেল দিয়েই আপ্যায়ন করার রেওয়াজ সব দেশ ও সমাজেই প্রচলিত। বাংলাদেশে আপল উৎপাদন হয় না। এ ফলটা পুরোটাই আমদানি করতে হয় এবং এ কারণে সবসময় আপেলের দাম বাংলাদেশে অনেক বেশি এবং গরীবের আপেল খাওয়া এ দেশে আসলেই বিলাসিতা। কিন্তু যুরা ও ইরানের মতো যে সব দেশ আপেল উৎপাদনকারী কেবল যুরা ছাড়া সে সব দেশে এই প্রবাদ বাক্যটি প্রচলিত হয় নি এবং সেটার প্রয়োজনও হয় নি। কারণ ইরানসহ সকল আপেল উৎপাদনকারী দেশে অন্তত আপেলের মৌসুমে টমেটোর চেয়ে আপেল দাম অনেক বেশি সস্তা হয়ে যায় এবং গরীব মানুষ তখন টমেটোর চাইতে আপেল কিনতে পারে বেশি। অথচ যুরা সূর্যাস্ত না হওয়া বিশাল সাম্রাজ্যের মালিক হয়ে এবং শুধু ভারত বর্ষ থেকেই ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ লুণ্ঠন করেও(পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ধনসম্পদ লুন্ঠনের কথা বিবেচনা না করেই)নিজের ফকীর গরীব জনগণকে আপেল খাওয়াতে পারে নি বা পারত না যা সত্যি লজ্জাকর । [আর যারা নিজেরাই এত সম্পদ রাজি ও বিত্তবিভব বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লুন্ঠন করে এনেও নিজ দেশের জাতি ও জনগণের দারিদ্র ঘুচাতে ও দূর করতে অক্ষম ও অপারগ তারা কিভাবে অন্যদের দারিদ্র্য বিমোচন করবে?!!! আর তাই এটা আদৌ সম্ভব নয়। তাই পশ্চিমাদের কাছে বিশেষ করে যুরা (যুক্তরাজ্য) ও মাযুরার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) কাছে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র বিমোচনের আশা করা সম্পূর্ণ অলীক,অবান্তর ও অবাস্তব। কারণ,ওরাই নিজেরাই তো বিশ্বব্যাপী দারিদ্র ও ক্ষুধার কারণ।] আর এর চাইতেও আরো লজ্জাকর ও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে যে আমাদের দেশের তথাকথিত পাশ্চাত্য শিক্ষিতরা বিশেষ করে তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক বুদ্ধিজীবী , শিক্ষাবিদ ও সুধী শ্রেণী ঐ প্রবাদ বাক্যের আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-আইনি ও অধিকার ভিত্তিক গুরুত্ব না বুঝেই স্কুল-কলেজের বিজ্ঞানের পাঠ্য বই-পুস্তকে ঢুকিয়ে দিয়েছে:"টমেটো গরীব মানুষের আপেল( Tomato is poor man's apple )"!!!! আর আমাদের দেশসহ বিভিন্ন সাবেক ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ কবলিত দেশের আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষিত শ্রেণীর সিংহভাগই ব্রিটিশদের ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ লুণ্ঠনের ব্যাপারে নির্বিকার এবং তা ফেরত দেওয়ার জোরালো দাবি উত্থাপন তো দুরের কথা এমনকি টু শব্দটি পর্যন্ত করে নি এবং বর্তমানেও তা করছে না !! উল্টো  তথাকথিত আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষিতরাই বলে বেড়ায় ও প্রচার করে যে যুরা-মাযুরা সহ পশ্চিমা ও ইউরোপীয় দাতা দেশগুলোর (তথাকথিত দাতা গোষ্ঠী নাকি চোর-জোচ্চোর বাটপারদের গুষ্টি?!!)দান,দয়া-দাক্ষিণ্য ও আর্থিক সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া নাকি সবাই না খেয়ে মারা যাবে!! আসলে এটাই হচ্ছে ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদ কবলিত মানসিকতা ও হীনমন্যতা যা বিশেষ করে আমাদের আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষিতদের মধ্যে আজও বিরাজ করছে এবং যা ঝেরে ফেলে বর্জন করার সময়ও এসে গেছে।

    স্মর্তব্য যে অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান যা যুরার দেশ, রাষ্ট্র ও সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং বৈশ্বিক দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বিমোচন এবং বৈষম্য বিষয়ক গবেষণা কারী প্রতিষ্ঠান ও এতদসংক্রান্ত বিশষজ্ঞ। আর এ প্রতিষ্ঠানের হিসাব মতে যুরা ১৭৬৫ থেকে ১৯০০ মাত্র ১৩৫ বছরে ভারত থেকে ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলার লুট করে নিয়ে গেছে। আর ওরা(ব্রিটিশরা)নিজেরাই যদি এটা স্বীকার করে তাহলে এ বিষয়টা (যুরা কর্তৃক ভারতীয় উপমহাদেশের অন্তত ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ লুণ্ঠন) কায়েদাতুল ইক্বরারের ( ِِقَاعِدَةُ الإِْقْرَار স্বীকারোক্তির সূত্র ও নীতি)ভিত্তিতে সুনিশ্চিত(مسلَّم) , সুপ্রতিষ্ঠিত ও সপ্রমাণিত হয়ে যায়। কারণ সর্বজনীন এ সূত্র ও নিয়মানুযায়ী "সকল বুদ্ধিমান সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী ব্যক্তির তাদের নিজেদের বিপক্ষে যে কোনো ধরনের স্বীকারোক্তি প্রযোজ্য ও বলবৎ হবে ( إِقْرَارُ الْعُقَلَاءِ عَلَیٰ أَنْفُسِهِمْ جَائِزٌ )"। আর এ বিষয়টি যেমন মুস্তাফীয বরং মুতাওয়াতির (অকাট্য সূত্রে বর্ণিত) সহীহ (শুদ্ধ) হাদীসের আলোকে স্বীকৃত,প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত ঠিক তেমনি পৃথিবীতে মানবজাতির আবির্ভাব কাল থেকে আজ পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থের বিপক্ষে (প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের)স্বীকারোক্তি (ইক্বরার) বলবৎ , জারী ও প্রযোজ্য হওয়ার ওপর দেশ,জাতি,বর্ণ,ধর্ম ও মত নির্বিশেষে সকল জ্ঞানী বুদ্ধিমান সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন ব্যক্তির গৃহীত ও অনুসৃত রীতিনীতি (সীরাত) প্রতিষ্ঠিত আছে। আর এ ছাড়া জাতি,ধর্ম - বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের সকল আইনশাস্ত্রবিদ ও বিচারপতি এবং ইসলামী ফকীহের কাছে নিজ স্বার্থের প্রতিকুলে ও বিপক্ষে বুদ্ধিমান সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তি জারী,বলবৎ ও প্রযোজ্য হওয়া সন্দেহাতীতভাবে সুনিশ্চিত ও প্রতিষ্ঠিত বিষয় (আত-তাসালুম التَّسَالُمُ)।  আর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসক ও শোষক গোষ্ঠী কর্তৃক ভারতীয় উপমহাদেশের ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ লুণ্ঠন সংক্রান্ত ব্রিটিশ অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের এ স্বীকারোক্তি নিঃসন্দেহে যুরার(যুক্তরাজ্য)ওপর বর্তাবে ও প্রযোজ্য হবে।

      আর এ ছাড়াও অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল বৈশ্বিক দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বিমোচন এবং বৈষম্য বিষয়ক গবেষণায় বিশেষজ্ঞ হওয়ার কারণে ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও শোষণ চালিয়ে যুরা কর্তৃক ১৭৬৫-১৯০০ অর্থাৎ ১৩৫ বছরে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ লুণ্ঠন সংক্রান্ত উক্ত ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের গবেষণামূলক স্বীকারোক্তি নিজেদের অর্থাৎ যুরার স্বার্থের বিপক্ষে ও প্রতিকুলে চলে গেছে। আর যে কোন ব্যক্তি , প্রতিষ্ঠান বা দেশের নিজ স্বার্থ পরিপন্থী ঐ ব্যক্তি , প্রতিষ্ঠান বা দেশের গবেষক বিশেষজ্ঞদের  স্বীকারোক্তি ও অভিমত বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টি কোণ থেকে এবং বুদ্ধিমান জ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের গৃহীত রীতিনীতি মোতাবেক গ্রহণযোগ্য (মকবুল مقبول) । নিজেদের স্বার্থের বিপক্ষে ও প্রতিকুলে নিজেদের বিশেষজ্ঞদের বিশেষজ্ঞতা ভিত্তিক ও গবেষণা কেন্দ্রিক অভিমত , প্রতিবেদন ও রিপোর্ট প্রামাণিক ও শিরোধার্য। এদিক থেকেও অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট ও প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ এবং এর ভিত্তিতে কার্যকর আইনী পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি রাখে এবং তা করা উচিত।

    অতএব এখন এ বিশাল সম্পদ ভারতীয় উপমহাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের দায়িত্ব ও সময় চলে এসেছে যা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

যুরা:যুক্তরাজ্য বা ব্রিটেন ( ইউকে )

মাযুরা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

লেখা: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha