হাওজা নিউজ এজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ সকালে ইস্পাহানের "নকশে জাহান" স্কয়ারে অনুষ্ঠিত ২২ বাহমান (ইসলামী বিপ্লবের বার্ষিকী) র্যালিতে ভাষণ প্রদানকালে সর্দার নাকদি বলেন:
আজকের ইরানের অবস্থা ইসলামী বিপ্লব-পূর্ব সময়ের সঙ্গে তুলনাও করা যায় না। চিকিৎসা, সামরিক, বিজ্ঞান ও শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান অসাধারণ উন্নতি অর্জন করেছে। জনগণের প্রতিরোধ ও অবিচলতার ফলে ইরান আজ এক সম্মানজনক ও গৌরবময় অবস্থানে পৌঁছেছে।
তিনি আরও বলেন:
গত ৪৬ বছরের গৌরবময় অভিজ্ঞতার আলোকে, ইরানি জাতি অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে এবং অতীতের চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান হয়ে শত্রুদের কূটকৌশলে প্রলুব্ধ হচ্ছে না। শত্রুরা সবসময় আমাদের পেছন থেকে ছুরি মারতে চায়, তাই আমরা আর সেই আলোচনার টেবিলের কাছেও যাব না।
ইরানি জাতির বীরত্ব ও শত্রুর ব্যর্থতা
সর্দার নাকদি আরও বলেন:
ইরানি জাতি এতটাই সচেতন যে, এক ভুল থেকে একাধিকবার শিক্ষা না নেওয়ার মতো নির্বোধ নয়। আমরা কখনোই শত্রুদের নোংরা চুক্তি গ্রহণ করবো না এবং শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবো না।
তিনি বলেন:
এই বিপ্লব শুরু থেকেই দাম্ভিক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং আজও বিশ্বের সমস্ত অত্যাচারী শক্তির সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। শাসক শ্রেণির বিরোধিতা করা, মজলুমদের পক্ষে থাকা এবং জালিমদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ইরানি জাতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
তিনি আরও বলেন,
কমিউনিস্ট শক্তি, আইএসআইএস, মুনাফিকগোষ্ঠী, সাদ্দামের শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের পর আজ ইরান সরাসরি আমেরিকা ও ইসরাইলের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। শত্রুরা এখন তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে।
আমেরিকার পতন ও ইরানের বিজয়
সর্দার নাকদি বলেন:
আমেরিকা এখন অবিশ্বাস্য ঋণের বোঝায় চাপা পড়েছে। তাদের কূটনৈতিক অবস্থান ধ্বংসের মুখে। আমেরিকা, যে এক সময় মধ্যপ্রাচ্যের ভাগ্য নির্ধারণ করত, যার নৌবাহিনী পারস্য উপসাগরে রাজত্ব করত, সেই আমেরিকাই আজ ইয়েমেনের মুক্তিকামী যোদ্ধাদের হাতে লজ্জাজনকভাবে পরাজিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন:
আজ সম্মান ইরানের জন্য, আর অপমান আমেরিকার জন্য বরাদ্দ হয়েছে। ইসলামী বিপ্লব এখন তার বৈশ্বিক লক্ষ্য পূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন:
আমেরিকা বারবার ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে—কুরআন পোড়ানো, ইসলাম-বিদ্বেষ ছড়ানো, মধ্যপ্রাচ্যে আইএসআইএস সৃষ্টি করা, নারী স্বাধীনতার নামে ইরানে অস্থিরতা তৈরির ব্যর্থ প্রচেষ্টা—কিন্তু প্রতিবারই তারা লজ্জাজনক পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে।
গাজা: পাশ্চাত্যের সভ্যতার চূড়ান্ত ব্যর্থতা
সর্দার নাকদি বলেন:
আজ আমেরিকার আসল পরিচয় তার গাজার হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে উন্মোচিত হয়েছে। ১২ হাজার নিরপরাধ নারীকে হত্যা করা, নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করে টুকরো টুকরো করা—এসব পাশ্চাত্যের তথাকথিত মানবাধিকারের প্রকৃত মুখোশ উন্মোচন করেছে।
তিনি আরও বলেন:
আজ গাজা পশ্চিমা চিন্তাধারার বিরুদ্ধে এক জীবন্ত জাদুঘর এবং তাদের প্রকৃত পরিচয়ের প্রতিচ্ছবি। আমরা দেখছি, সারা বিশ্ব আজ সেই একই স্লোগান দিচ্ছে, যা ইরানিরা বহু বছর আগে ইস্পাহান, তেহরান ও সমগ্র ইরানে উচ্চারণ করেছিল।
শেষে তিনি বলেন:
আজ আমরা শহীদদের সঙ্গে আমাদের অঙ্গীকার নবায়ন করছি যে, আমরা জীবন দিয়ে হলেও এই বিপ্লব রক্ষা করবো। কারণ আমাদের মহান ইমাম (রহ.) আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়িত হবেই—একদিন ইসলামী বিপ্লবের পতাকা ইমাম মাহদী (আ.)-এর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আপনার কমেন্ট