মঙ্গলবার ৮ এপ্রিল ২০২৫ - ১৩:২৬
স্মার্ট প্রযুক্তির যুগে শিশুদের লালন-পালনে সতর্ক থাকুন

স্মার্ট প্রযুক্তির প্রসারের সাথে সাথে অনেক শিশু শারীরিক খেলাধুলার পরিবর্তে মোবাইল ফোন ও ভার্চুয়াল জগতের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এর ফলে তাদের পরিবেশের সাথে কার্যকর যোগাযোগ কমে যাচ্ছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: স্মার্ট প্রযুক্তির বিস্তারের সাথে সাথে শিশুদের জীবনে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার ভূমিকা ম্লান হয়ে আসছে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, বিনোদন ও খেলাধুলা শিশুর মানসিক, আবেগিক ও সামাজিক বিকাশের অন্যতম প্রধান উপাদান। বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের জন্য উপযুক্ত বিনোদন বেছে নেওয়া, যাতে তাদের সৃজনশীলতা ও কৌতূহল বিকাশের পাশাপাশি ডিজিটাল জগতের ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানো যায়। 

খেলাধুলার প্রভাব ও ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ:
ইসফাহানের হাওজা নিউজের সাথে আলাপে মনোবিজ্ঞানী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পাওয়ার্দোল্লাহ জারেআন বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে একটি হলো খেলাধুলা ও বিনোদনের অভিজ্ঞতা। এটি তাদের বৌদ্ধিক, আবেগিক ও সামাজিক বিকাশে গভীর প্রভাব রাখে। খেলাধুলা কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং এটি শিশুর কৌতূহল, সৃজনশীলতা ও চিন্তাশক্তিকে শাণিত করে। 

তিনি যোগ করেন, “উপযুক্ত বিনোদন শিশুর শিক্ষণ প্রক্রিয়াকে গঠন করে। বাবা-মায়ের তত্ত্বাবধানে শিশুদের অবাধে খেলার সামগ্রীর সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করার সুযোগ দিলে তারা পরিবেশ সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে শেখে এবং মানসিক ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।”

ডিজিটাল যুগের প্রভাব: জারেআন সতর্ক করে বলেন, “স্মার্ট ডিভাইসের প্রভাবে অনেক শিশুই এখন শারীরিক খেলার বদলে মোবাইল ও ভার্চুয়াল জগতে মগ্ন। এতে তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে যোগাযোগ কমে যাচ্ছে, শারীরিক ও সামাজিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আজকের শিশুরা 'ইলেকট্রনিক শিশু'তে পরিণত হচ্ছে, যারা বেশিরভাগ সময় ডিজিটাল গেম ও স্ক্রিনে ব্যয় করে।”

মানসিক ও সামাজিক ঝুঁকি: তিনি বলেন, “শিশুরা অত্যন্ত অনুকরণপ্রিয়। ভার্চুয়াল জগতে যা দেখে, তা তাদের আচরণে গভীর প্রভাব ফেলে। কিছু গেম সহিংসতা, উদ্বেগ বাড়ায় এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া কমিয়ে দেয়।”

সমাধানের উপায়: জারেআন পরামর্শ দেন, “শারীরিক খেলার সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বাবা-মায়ের উচিত ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা। এই জগতের সংশ্লিষ্ট সুবিধাগুলো উপেক্ষা করা যায় না, কিন্তু নিয়ন্ত্রণহীন ব্যবহার শিশুর বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”

সুস্থ বিকাশের জন্য: তিনি গ্রুপ গেমস, বন্ধুদের সাথে মেলামেশা, শারীরিক কার্যকলাপের উপর গুরুত্বারোপ করেন। “বালু বা কাদামাটির খেলা, পাজল, আঁকা, দৌড়ঝাঁপ—এসবই শিশুর সার্বিক বিকাশে সাহায্য করে,” বলেন তিনি। 

হাওজা নিউজ এজেন্সি/ রাসেল আহমেদ রিজভী 

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha