হাওজা নিউজ এজেন্সি: মরহুম হযরত আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপয়গনী (রহ.) “তাকওয়ার আয়াতের তাফসীর" বিষয়ে একটি লেখায় উল্লেখ করেন:
প্রশ্ন:
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَتَزَوَّدُوا فَإِنَّ خَیرَ الزَّادِ التَّقْوَی
(তোমরা পাথেয় সংগ্রহ করো, আর নিশ্চয়ই সর্বোত্তম পাথেয় হলো তাকওয়া।)
এই আয়াতের আলোকে নাহজুল বালাগাতেও উদ্ধৃত হয়েছে। অথচ হযরত আলী (আ.)-কে উদ্বৃতি দিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে যে তিনি বলেছেন,
وَحَمْلُ الزَّادِ أَقْبَحُ کلِّ شَیءٍ إِذَا کانَ الْوُفُودُ عَلَی الْکرِیمِ
(কারো কাছে কোনো কিছু নিয়ে যাওয়া নিকৃষ্টতম কাজ, যখন সে পরম দয়ালুর সামনে হাজির হয়।)
উত্তর:
এই দুটি বক্তব্যের মধ্যে কোনো বৈপরীত্য নেই, কারণ এগুলো দুটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটের কথা বলে, যথা:
প্রথমটি, দায়িত্ব ও নির্দেশের প্রেক্ষাপটে মানুষের কর্তব্য হলো আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করা এবং নেক আমলকে আখিরাতের পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করা।
দ্বিতীয়টি, আল্লাহর সামনে বান্দার অক্ষমতা স্বীকারের প্রেক্ষাপটে, তাঁর মহান মর্যাদার সামনে নেক আমলও উপস্থাপনের মতো কোনো পাথেয় নয়। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, বান্দার কাছে আল্লাহর দরবারে পেশ করার মতো কোনো যথার্থ পাথেয় নেই।
প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা ও প্রাসঙ্গিকতা:
- তাকওয়ার গুরুত্ব:
- আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপয়গনী (রহ.) এর মতে, তাকওয়া শুধু একটি নৈতিক গুণ নয়, বরং এটি আখিরাতের প্রস্তুতির মূল ভিত্তি।
- হাদীসে রাসূল (সা.) বলেছেন, “যাকে তাকওয়া দেওয়া হয়েছে, তাকে দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বোত্তম নেয়ামত দেওয়া হয়েছে।”
- আল্লাহর সামনে বান্দার অবস্থান:
- ইমাম আলী (আ.)-এর উক্তিতে বোঝা যায়, আল্লাহর দরবারে বান্দার আমলসমূহও তাঁর অনুগ্রহের তুলনায় নগণ্য।
- এটি বান্দাকে অহংকারমুক্ত করে এবং আল্লাহর রহমতের প্রতি নির্ভরশীল করে।
প্রয়োগিক দিক:
- মুমিনের কর্তব্য হলো তাকওয়া অর্জন করা, কিন্তু একই সাথে এটা মনে রাখা যে, নেক আমলও আল্লাহর দয়া ছাড়া মূল্যহীন।
এই শিক্ষা আমাদেরকে আত্মসমালোচনা ও আল্লাহর প্রতি বিনয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করে।
আপনার কমেন্ট